নিজস্ব প্রতিবেদন: দুর্গোৎসব নমো নমো করে হয়েছিল। কিন্তু, ভোট উৎসবে উৎসাহের ভাটা নেই। রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণে এখন ভোটপুজো জমজমাট। কোথাও করোনার বিধি, আর কোথায় মাস্ক! ওসব নিয়ে কারও হেলদোল নেই। বরং রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রী থেকে কর্মীদের হাবেভাবে স্পষ্ট, করোনা (Corona) বলে কি ভোট হবে না? নাগরিক সমাজ বলছে, একটু কি মিছিল-মিটিংয়ে রাশ টানা যেত না! স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা পই পই করে বলছে, করোনাকে ঠেকাতে মাস্ক ও ‘দো গজ কি দূরি’ মাস্ট। তবে ভোটমুখী বাংলায় সে সব শিকেয়! সভায় জনসমাগমই এখন লক্ষ্য। আপাতত তাই কোভিড-১৯ নিয়ে ভাবনার সময় নেই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এ দিনের সভা থেকে বলেন, ‘ওঁরা ভোটের সময় লকডাউন করতে চেয়েছিল আমি দিইনি’। অন্যদিকে,ভোটের কথা মাথায় রেখে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মতুয়াদের মেলা বাতিল রাখার সিদ্ধান্তে বিরোধিতা করেছে বিজেপি। ইতিমধ্যে, ভোটের সময়-পর্ব নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ারভুক্ত হওয়ার যুক্তিতে কোভিড নিয়ে দায়ের করা একের পর এক জনস্বার্থ মামলা খারিজ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু, ওয়াকিবহালমহল বলছে, প্রচার, সভা ইত্যাদি কমিশনের এক্তিয়ারে পড়ে না। কোভিড নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব স্বাস্থ্য দফতরের।
নরেন্দ্র মোদী করোনার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করার পর জানিয়েছিলেন, পরিকল্পনায় যদি কোনও ফাঁক থাকে তাহলে তা পূর্ণ করতে হবে। আর সময় নেই। তীরে এসে তরী ডোবালে, মাঠেই মারা যাবে সমস্তটা। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি রাজ্যের মানুষকে বোঝাতে হবে, করোনার লড়াইয়ে আমরা কোথায় পৌঁছেছি, আর তাতে কতটা আত্মবিশ্বাস জোগাড় করেছি। এর যেন অপব্যবহার না করা হয়। যেন ‘ওভার কনফিডেন্স’ না আসে জনতার মধ্যে। সমস্যা ঠিক কোথায় হচ্ছে? তা খুঁজে বের করে সমাধান করতে হবে। সমস্যা থেকে জনতাকে মুক্ত করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলুন, মাস্ক পরায় অনীহা দেখালে চলবে না ‘।
কিন্তু এরপরই দেখা যায় সভা করতে বাংলায় আসেন প্রধানমন্ত্রী। নাড্ডা-অমিত শাহকেও রোড শো করতে দেখা যায়। অপর দিকে, সমান তালে প্রচার ও জনসভা করছে তৃণমূল-সহ সংযুক্ত মোর্চা। মসনদ জেতার লড়াই ব্যস্ত বাংলার গোকুলে বাড়ছে করোনা, বিপদ ঘনাচ্ছে, এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দৈনিক ২ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। দেশের ৯-১০ রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার এতটাই বেশি, সাময়িক লকডাউন, নাইট কার্ফুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে সব রাজ্যের প্রশাসন। মাস্ক না পরলে জরিমানারও ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু বাংলা এখনও পর্যন্ত সেই পথে হাঁটেনি।
বলাই যায়, নির্বাচনকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে শিকেয় উঠেছে করোনাবিধি। জমায়েত হচ্ছেন মানুষ। মাস্ক পরতেও দেখা যাচ্ছে না অনেককে। সে কারণেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ থেকে সাধারণ মানুষ। মানুষ অসচেতন ও করোনাকে অবজ্ঞার চোখে দেখছেন বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
Zee24Ghanta: Health News
2021-04-08 18:57:57
Source link
Leave a Reply