প্রিয় নীড়টি যেমনই হোক না কেন, প্রতিটি মানুষের কাছে তা হয়ে থাকে একান্ত আপন। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সবাই সাজাতে চায় প্রিয় ঘর, তাতে দিতে চায় নান্দনিকতার ছোঁয়া। আধুনিক বাসাবাড়ির বাসিন্দারা চিরাচরিত অন্দরসজ্জার ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে নিজের বাড়িটিতে আনতে চায় বৈচিত্র্য। তাই বাসাবাড়ির আসবাব থেকে শুরু করে দেয়ালের রং, সিলিং—সব ক্ষেত্রেই থাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ছোঁয়া।
এখনকার বাসাবাড়ির অন্দরসজ্জায় আধুনিক, ঐতিহ্যবাহী ও শৈল্পিক—এ তিনটি ধারার যেকোনো একটি ব্যবহার করা হয়।আবার একাধিক ধারার মিশেলেও অনেকে সাজায় তার বাড়ির অন্দর।
এই সময়ে আধুনিক ধারার অন্দরসাজ বেশ জনপ্রিয়। কারণ আধুনিক আসবাবপত্রের নকশাটা হয় সোজাসাপটা, আর আসবাবপত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মেঝে থেকে সিলিং পর্যন্ত ঘরের সবকিছু সহজ সরলনকশার করা হয় বলে জানালেন রেডিয়েন্ট ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনের ইন্টেরিয়র ডিজাইনার গুলশান নাসরীন চৌধুরী। তিনি আরও বলেন, এখনকার বাসাবাড়িতে কোন ঘরের অবস্থান কোন পাশে হবে, সেটা ঠিক করার সুযোগ অনেক সময় থাকে না। এর পরও যদি সুযোগ থাকে, তাহলে কোন দিকে রোদ কম পড়ে, কোন দিকে আলো ও বাতাস পর্যাপ্ত আসে, আবার কোন দিকটা একটু আলো-আঁধারি—এসব বিবেচনা করে ঘরের অবস্থান ঠিক করা উচিত। যেমন রান্নাঘর ও স্নানঘর পূর্ব দিকে হলে আলো বেশি পাওয়া যায়, আবার শোবার ঘর দক্ষিণ দিকে হলে গরম কম লাগে।
আধুনিক বাসাবাড়িগুলোর অন্দরসজ্জায় সিঁড়িঘর থেকে স্নানঘর পর্যন্ত সব জায়গাতেই দেখা যায় ভিন্নতা। এই প্রতিবেদনের ছবিতে যে বাসা দেখা যাচ্ছে, ঢাকার
মোহাম্মদপুরে আনারকলি ইউসুফের সেই বাসার কথাই ধরা যাক। লিফট দিয়ে উঠে বাসায় ঢোকার মুখেই ফাঁকা স্থানটুকুতে বৈঠকখানার আয়োজন দেখে মনে হবে বুঝি মূল বাড়িতেই ঢুকেছি, কিন্তু ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যাবে দুই প্রান্তে রয়েছে মূল বাসায় প্রবেশের পথ। তখন বুঝবেন আপনি বসে আছেন বাড়ির বাইরে। ‘বাড়িতে বিভিন্ন কাজে অনেক অপরিচিত মানুষ আসে, যাদের সঙ্গে সম্পর্কটা ঠিক ঘরে বসতে দেওয়ার মতো আন্তরিক নয়। আবার বাইরেও দাঁড় করিয়ে রাখা যায় না। সে জন্যই এ ধরনের অভ্যর্থনা।’ বললেন গুলশান নাসরীন চৌধুরী। বাড়িতে ব্যবহূত পুরোনো সোফাসেট, কাঠের টেবিল, বাঁশের ঝুড়িতে কিছু গাছ ও দেয়ালে হালকা ডিজাইনের মাটির শোপিস দিয়ে আপনিও করতে পারেন দরজার সামনে ফাঁকা স্থানটুকুতে এই অভ্যর্থনার আয়োজন। তবে এ রকম বসার ঘরের আয়োজন শুধু দুই ইউনিটের ফ্ল্যাটবাড়িতে করা সম্ভব, যেখানে দুই ফ্ল্যাটের দরজা দুটো মুখোমুখি অবস্থিত। বাড়িতে বসার ঘরে ঢোকার আগে কিছুটা ফাঁকা জায়গায় রাখতে পারেন আয়না, নিচে শোপিস কেবিনেট, জুতা রাখার জন্য র্যাক। জুতার র্যাকের সঙ্গে বসার জায়গা থাকলে জুতা খুলতে ও পরতে সুবিধা হয়। জুতার র্যাকের পাশে একটি নিচু মোড়া বা টুল রেখে দিতে পারেন।
এই বাড়িতে বসার ঘরটিকে সাজানোর ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে ফলস সিলিং ও স্পটলাইটের বিষয়টি। পাশ্চাত্য ধাঁচে থামগুলো সমান রেখে ফলস সিলিং দিয়ে ঢেকে তার ওপর স্পটলাইট বসানো হয়েছে। বসার ঘরের আসবাব ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক জিনিসের সঙ্গে মিল রেখে ঘরের দেয়ালে রং করা হয়েছে।
আজকাল বাড়িতে ভারি আসবাব ব্যবহারের চল কমে গেছে। হালকা, আধুনিক, ছিমছাম আসবাবই এখন দেখা যাচ্ছে বেশি। এছাড়া দেয়ালে পেইন্টিং, মেঝেতে সাইড কার্পেট ব্যবহার করা হচ্ছে। বসার ঘরে বৈচিত্র্য আনতে কৃত্রিম ফোয়ারাও ব্যবহার করা যেতে পারে। ‘বসার ঘরে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দেবার জন্য বা গান-বাজনা করার জন্য বানাতে পারেন নিচু আসবাব দিয়ে বসার ব্যবস্থা।’ বললেন নাসরীন চৌধুরী।
মূল বসার ঘর ছাড়াও ছবির এ বাড়িতে রয়েছে আরও দুটি বসার ঘর। মূল বসার ঘরের পাশেই পিলার দিয়ে আড়াল করে রাখা হয়েছে অতিথিদের আড্ডার জায়গা। নান্দনিক কাঠের আসবাবে পুরোপুরি আড্ডা, গল্পের আন্তরিকতার আমেজ রাখার জন্য খুবই সাদামাটাভাবে সাজানো হয়েছে এ স্থানটুকু।
এ ঘরটির পরই খাবারঘরের অবস্থান। খাবারঘরে রাখা হয়েছে লম্বাকৃতির খাবার-টেবিল। খাবারঘরে খাবার-টেবিল তো থাকবেই, এ আর নতুন কি! কিন্তু টেবিলের এই ব্যতিক্রম আকারটিই খাবারঘরটিকে দিয়েছে বৈচিত্র্যের ছোঁয়া। টেবিলটিকে বানানো হয়েছে লম্বা বাক্সের আকৃতিতে। বাক্সের ওপরটুকু ফাঁকা রেখে এবং বাক্সটিকে মাঝখানে রেখে বসানো হয়েছে কাচের টপ। খাবারঘরের প্রয়োজনীয় জিনিস রাখার জন্য দেয়ালের একপাশে রাখা হয়েছে কাঠের ক্যাবিনেট। এছাড়া শুকনো ফুল, ল্যাম্পশেডও রাখা যায়।
খাবারঘরের পরই পুরো পরিবারের একসঙ্গে বসে গল্প করার জন্য একটি ঘর রয়েছে। বেতের সোফা, বেতের বড় আকৃতির ফুলদানি দিয়ে সাজানো হয়েছে ঘরটি। বিনোদনের জন্য আছে হোম থিয়েটার। পারিবারিক আবহ আনার জন্য ঘরের দেয়ালজুড়ে ও কোনার তাকে রাখা হয়েছে পারিবারিক ছবি।
শোয়ার ঘরের দেয়ালেও চলেছে রঙের খেলা। যেহেতু শোয়ার ঘর তাই জানালায় ব্যবহার করা হয়েছে দুই পরতের পর্দা। বেগুনি রঙের পর্দার নিচে রাখা হয়েছে হালকা সাদা রঙের নেটের পর্দা। দুটো পর্দার ব্যবহারের ফলে যখন ঘরে বেশি রোদ পড়বে তখন গাঢ় পর্দা এবং হালকা আলো থাকলে সাদা পর্দা টেনে দেওয়া যাবে।
আধুনিক ফ্ল্যাটবাড়িতে স্নানঘরের আয়তন ছোট হলেও অন্দরসজ্জার মাধ্যমে একে উপযোগি করে তোলা যায়। এই বাড়ির স্নানঘরের মত গোসলের জায়গায় শাওয়ার গ্লাস ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে পানি ছিটে পুরো স্নানঘর ভিজে যাবে না। স্নানঘরে বেসিনের নিচে কেবিনেটের ব্যবস্থা রাখা হলে জায়গা বাঁচে।
একইভাবে রান্নাঘর ছেঅট হলেও সমস্যা নেই। কেবিনেটের ব্যবহার করে জায়গা বাঁচানো যায়।
গাছ ঘরে আনে প্রাণের ছোঁয়া। এ বাড়িটির অন্দরসজ্জায় তাই বাদ পড়েনি গাছের ব্যবহার। সে জন্য বিভিন্ন কোনায় শোভাবর্ধনের জন্য নারকেলগাছের গুঁড়ি ও নারকেলের মালার ভেতর রাখা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।
গুলশান নাসরীন চৌধুরী বলেন, দেয়ালের রংয়ের ক্ষেত্রে ঘরের আসবাব ও অন্যান্য জিনিস—যেমন পর্দা, বেডকভার, সিলিং, মেঝের সঙ্গে মিল রেখে দেয়ালে রং নির্বাচন করতে হবে। বড় ঘরে গাঢ় রং এবং ছোট ঘরে হালকা রং ব্যবহার করতে হবে। আবার যে ঘরে রোদ বেশি পড়ে, সে ঘরে হালকা রঙের ব্যবহার না করাই ভালো। একই ঘরে দুটি রং ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ছোট বা বর্গাকৃতি ঘরের ছোট দেয়ালে হালকা রং এবং বড় দেয়ালে গাঢ় রঙের ব্যবহার করুন। এতে ঘর বড় ও লম্বা দেখাবে।
যেকোনো বাড়ির অন্দরসজ্জায় আলোকসজ্জা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সে ক্ষেত্রে স্পটলাইটের ব্যবহার তো আছেই; ঘরে আলো-আঁধার খেলা করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে বাহারি ডিজাইনের ল্যাম্পশেড, যেমনটি করা হয়েছে এই বাড়িটিতে। ঘরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিভিন্ন কোনায় রাখা হয়েছে নানা ডিজাইনের বেশ লম্বা আকৃতির স্ট্যান্ডিং ল্যাম্পশেড। এ ধরনের শৈল্পিক নিদর্শনে তৈরি বাহারি ল্যাম্পশেডের ছোঁয়ায় দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে ঘরের প্রতিটি কোণ।
ঘর আড়ম্বরপূর্ণ করে তুলতে প্রতিটি ঘরের মেঝেতেই করা হয়েছে টাইলসের ব্যবহার। এ বিষয়ে গুলশান নাসরীন চৌধুরী বলেন, আধুনিক বাসাবাড়িগুলোর মেঝেতে যত বড় আকৃতির টাইলস ব্যবহার করা যায়, ততই যেন ঘরের মেঝের সৌন্দর্য বাড়ে।
এই সময়ে আধুনিক ধারার অন্দরসজ্জা বেশ জনপ্রিয়। কারণ আধুনিক আসবাবপত্রের নকশাটা হয় সোজাসাপটা, আর আসবাবপত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মেঝে থেকে সিলিং পর্যন্ত ঘরের সবকিছু সহজ সরলনকশার করা হয় বলে জানালেন রেডিয়েন্ট ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনের ইন্টেরিয়র ডিজাইনার গুলশান নাসরীন চৌধুরী। তিনি আরও বলেন, এখনকার বাসাবাড়িতে কোন ঘরের অবস্থান কোন পাশে হবে, সেটা ঠিক করার সুযোগ অনেক সময় থাকে না। এর পরও যদি সুযোগ থাকে, তাহলে কোন দিকে রোদ কম পড়ে, কোন দিকে আলো ও বাতাস পর্যাপ্ত আসে, আবার কোন দিকটা একটু আলো-আঁধারি—এসব বিবেচনা করে ঘরের অবস্থান ঠিক করা উচিত। যেমন রান্নাঘর ও স্নানঘর পূর্ব দিকে হলে আলো বেশি পাওয়া যায়, আবার শোবার ঘর দক্ষিণ দিকে হলে গরম কম লাগে।
আধুনিক বাসাবাড়ির অন্দর সিঁড়িঘর থেকে স্নানঘর পর্যন্ত সব জায়গাতেই দেখা যায় ভিন্নতা। এই প্রতিবেদনের ছবিতে যে বাসা দেখা যাচ্ছে, ঢাকার
মোহাম্মদপুরের আনারকলি ইউসুফের সেই বাসার কথাই ধরা যাক। লিফট দিয়ে উঠে বাসায় ঢোকার মুখেই ফাঁকা স্থানটুকুতে বৈঠকখানার আয়োজন দেখে মনে হবে বুঝি মূল বাড়িতেই ঢুকেছি, কিন্তু ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যাবে দুই প্রান্তে রয়েছে মূল বাসায় প্রবেশের পথ। তখন বুঝবেন আপনি বসে আছেন বাড়ির বাইরে। ‘বাড়িতে বিভিন্ন কাজে অনেক অপরিচিত মানুষ আসে, যাদের সঙ্গে সম্পর্কটা ঠিক ঘরে বসতে দেওয়ার মতো আন্তরিক নয়। আবার বাইরেও দাঁড় করিয়ে রাখা যায় না। সে জন্যই এ ধরনের অভ্যর্থনা।’ বললেন গুলশান নাসরীন চৌধুরী। তিনি এই বাসার অন্দরসজ্জা করেছেন। জানালেন, বাড়িতে ব্যবহূত পুরোনো সোফাসেট, কাঠের টেবিল, বাঁশের ঝুড়িতে কিছু গাছ ও দেয়ালে হালকা ডিজাইনের মাটির শোপিস দিয়ে আপনিও করতে পারেন দরজার সামনে ফাঁকা স্থানটুকুতে এই অভ্যর্থনার আয়োজন। তবে এ রকম বসার ঘরের আয়োজন শুধু দুই ইউনিটের ফ্ল্যাটবাড়িতে করা সম্ভব, যেখানে দুই ফ্ল্যাটের দরজা দুটো মুখোমুখি অবস্থিত। বাড়িতে বসার ঘরে ঢোকার আগে কিছুটা ফাঁকা জায়গায় রাখতে পারেন আয়না, নিচে শোপিস কেবিনেট, জুতা রাখার জন্য র্যাক। জুতার র্যাকের সঙ্গে বসার জায়গা থাকলে জুতা খুলতে ও পরতে সুবিধা হয়। জুতার র্যাকের পাশে একটি নিচু মোড়া বা টুল রেখে দিতে পারেন।
এই বাড়িতে বসার ঘরটিকে সাজানোর ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে ফলস সিলিং ও স্পটলাইটের বিষয়টি। পাশ্চাত্য ধাঁচে থামগুলো সমান রেখে ফলস সিলিং দিয়ে ঢেকে তার ওপর স্পটলাইট বসানো হয়েছে। বসার ঘরের আসবাব ও আনুষঙ্গিক জিনিসের সঙ্গে মিল রেখে ঘরের দেয়ালে রং করা হয়েছে।
আজকাল বাড়িতে ভারী আসবাব ব্যবহারের চল কমে গেছে। হালকা, আধুনিক, ছিমছাম আসবাবই এখন দেখা যাচ্ছে বেশি। এ ছাড়া দেয়ালে পেইন্টিং, মেঝেতে সাইড কার্পেট ব্যবহার করা হচ্ছে। বসার ঘরে বৈচিত্র্য আনতে কৃত্রিম ফোয়ারাও ব্যবহার করা যেতে পারে। ‘বসার ঘরে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দেওয়ার জন্য বা গান-বাজনা করার জন্য বানাতে পারেন নিচু আসবাব দিয়ে বসার ব্যবস্থা।’ বললেন নাসরীন চৌধুরী।
মূল বসার ঘর ছাড়াও ছবির এ বাড়িতে রয়েছে আরও দুটি বসার ঘর। মূল বসার ঘরের পাশেই পিলার দিয়ে আড়াল করে রাখা হয়েছে অতিথিদের আড্ডার জায়গা। নান্দনিক কাঠের আসবাবে পুরোপুরি আড্ডা, গল্পের আন্তরিকতার আমেজ রাখার জন্য খুবই সাদামাটাভাবে সাজানো হয়েছে এ স্থানটুকু।
এ ঘরটির পরই খাবারঘরের অবস্থান। খাবারঘরে রাখা হয়েছে লম্বাকৃতির খাবার-টেবিল। খাবারঘরে খাবার-টেবিল তো থাকবেই, এ আর নতুন কী! কিন্তু টেবিলের এই ব্যতিক্রম আকারটিই খাবারঘরকে দিয়েছে বৈচিত্র্যের ছোঁয়া। টেবিলটি বানানো হয়েছে লম্বা বাক্সের আকৃতিতে। বাক্সের ওপরটুকু ফাঁকা রেখে এবং বাক্সটি মাঝখানে রেখে বসানো হয়েছে কাচের টপ। খাবারঘরের প্রয়োজনীয় জিনিস রাখার জন্য দেয়ালের একপাশে রাখা হয়েছে কাঠের ক্যাবিনেট। এ ছাড়া শুকনো ফুল, ল্যাম্পশেডও রাখা যায়।
খাবারঘরের পরই পুরো পরিবারের একসঙ্গে বসে গল্প করার জন্য একটা ঘর রয়েছে। বেতের সোফা, বেতের বড় আকৃতির ফুলদানি দিয়ে সাজানো হয়েছে ঘরটি। বিনোদনের জন্য আছে হোম থিয়েটার। পারিবারিক আবহ আনার জন্য ঘরের দেয়ালজুড়ে ও কোনার তাকে রাখা হয়েছে পারিবারিক ছবি।
শোবার ঘরের দেয়ালেও চলেছে রঙের খেলা। যেহেতু শোবার ঘর তাই জানালায় ব্যবহার করা হয়েছে দুই পরতের পর্দা। বেগুনি রঙের পর্দার নিচে রাখা হয়েছে হালকা সাদা রঙের নেটের পর্দা। দুটো পর্দার ব্যবহারের ফলে যখন ঘরে বেশি রোদ পড়বে তখন গাঢ় পর্দা এবং হালকা আলো থাকলে সাদা পর্দা টেনে দেওয়া যাবে।
আধুনিক ফ্ল্যাটবাড়িতে স্নানঘরের আয়তন ছোট হলেও অন্দরসজ্জার মাধ্যমে একে উপযোগী করে তোলা যায়। এই বাড়ির স্নানঘরের মত গোসলের জায়গায় শাওয়ার গ্লাস ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে পানি ছিটে পুরো স্নানঘর ভিজে যাবে না। স্নানঘরে বেসিনের নিচে কেবিনেটের ব্যবস্থা রাখা হলে জায়গা বাঁচে।
একইভাবে রান্নাঘর ছোট হলেও সমস্যা নেই। কেবিনেটের ব্যবহার করে জায়গা বাঁচানো যায়।
গাছ ঘরে আনে প্রাণের ছোঁয়া। এ বাড়িটির অন্দরসজ্জায় তাই বাদ পড়েনি গাছের ব্যবহার। সে জন্য বিভিন্ন কোনায় শোভাবর্ধনের জন্য নারিকেলগাছের গুঁড়ি ও নারিকেলের মালার ভেতর রাখা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।
গুলশান নাসরীন চৌধুরী বলেন, দেয়ালের রঙের ক্ষেত্রে ঘরের আসবাব ও অন্যান্য জিনিস—যেমন পর্দা, বেডকভার, সিলিং, মেঝের সঙ্গে মিল রেখে দেয়ালের রং নির্বাচন করতে হবে। বড় ঘরে গাঢ় রং এবং ছোট ঘরে হালকা রং ব্যবহার করতে হবে। আবার যে ঘরে রোদ বেশি পড়ে, সে ঘরে হালকা রঙের ব্যবহার না করাই ভালো। একই ঘরে দুটি রং ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ছোট বা বর্গাকৃতি ঘরের ছোট দেয়ালে হালকা রং এবং বড় দেয়ালে গাঢ় রঙের ব্যবহার করুন। এতে ঘর বড় ও লম্বা দেখাবে।
যেকোনো বাড়ির অন্দরসজ্জায় আলোকসজ্জা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সে ক্ষেত্রে স্পটলাইটের ব্যবহার তো আছেই; ঘরে আলো-আঁধার খেলা করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে বাহারি ডিজাইনের ল্যাম্পশেড, যেমনটি করা হয়েছে এই বাড়িতে। ঘরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিভিন্ন কোনায় রাখা হয়েছে নানা ডিজাইনের বেশ লম্বা আকৃতির স্ট্যান্ডিং ল্যাম্পশেড। এ ধরনের শৈল্পিক নিদর্শনে তৈরি বাহারি ল্যাম্পশেডের ছোঁয়ায় দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে ঘরের প্রতিটি কোণ।
ঘর আড়ম্বরপূর্ণ করে তুলতে প্রতিটি ঘরের মেঝেতেই করা হয়েছে টাইলসের ব্যবহার। এ বিষয়ে গুলশান নাসরীন চৌধুরী বলেন, আধুনিক বাসাবাড়ির মেঝেতে যত বড় আকৃতির টাইলস ব্যবহার করা যায়, ততই যেন ঘরের মেঝের সৌন্দর্য বাড়ে।
বিপাশা রায়
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০০৯
Leave a Reply