ঢাকা শহরে ফার্নিচারের দোকান সংখ্যা যেন ক্রমশ বাড়ন্ত। বড় ব্র্যান্ডগুলো যেমন তাদের শাখা বিস্তার করে চলেছে, তেমনি এলাকা ভিত্তিক ছোট ছোট দোকান সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। তবুও শহরের মাঝে ঠাঁই নিয়েছে এমন কিছু দোকান যেগুলো তাদের সংখ্যা নির্ভর না হয়ে সংগ্রহে মনযোগী। অরোরা এমনই একটি জায়গা।
এতোদিন পর্যন্ত অরোরার একটি শাখা থাকায় গুলশান, বনানী এলাকার বনেদি ক্রেতারা বিশাল জ্যাম ঠেলে ধানমন্ডি শাখা যেতেন। কিন্তু গত ১১ সেপ্টেম্বর বাড়ন্ত ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে অরোরা বনানী-১১ নম্বরে তাদের দ্বিতীয় শাখাটি উদ্বোধন করেন। ধানমন্ডি শাখার তুলনায় এই শাখাটি আয়তনে একটি ছোট। ১৬৫০ স্কয়ার ফিটের নতুন অরোরা খোলা থাকবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। ক্যাটালগ দেখে এখানে অর্ডার করা যাবে বিভিন্ন ধরনের ফার্নিচার। ২০০৬ সালের আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে অরোরা তাদের যাত্রা শুরু করে। কিছু এক্সক্লুসিভ ফার্নিচার আর ঘর সাজানোর নানান উপকরণ নিয়েই অরোরার আয়োজন। তবে এখানে যা কিছুই পাওয়া যায় তার সবই মাস্টার পিস। অর্থাৎ যেকোনো জিনিস অরোরাতে মাত্র এক বারের জন্যই আসে। এবং একই জিনিস আর কখনোই পাওয়া যায় না। অরোরায় পাওয়া যাবে বিভিন্ন ডিজাইনের সোফা, চেয়ার, ডাইনিং টেবিল, সেন্ট্রাল টেবিল, গার্ডেন চেয়ার সেট, ফ্লাওয়ার ভাস, কনসোল টেবিল, স্ট্যান্ড ও টেবিল ল্যাম্প, কুশন, কুশন কভার, শতরঞ্জি আর বিভিন্ন রকমের কৃত্রিম ফুলের বিশাল আয়োজন। অরোরা স্বত্বাধিকারী খন্দকার আনোয়ার হোসেন মামুন এবং শাহেদুল ইসলাম দুজনই আর্কিটেক্ট। ইন্টেরিয়রে তাদের আগ্রহ প্রকাশ পায় অরোরার কোণায় কোণায়। এখানের সবগুলো পণ্যই আমদানী করা। দেশী কোনো পণ্য নেই অরোরাতে। অধিকাংশ পণ্য আমদানী হয় চীন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম আর থাইল্যান্ড থেকে। অরোরা’র সবগুলো কাঠ জাতীয় পণ্য আমদানী করা হয় মালয়েশিয়া থেকে। ভিয়েতনাম থেকে আমদানী হয় সব কৃত্রিম পাথরের শোপিস আর যত এন্টিক শোপিস ও ফ্লাওয়ার ভাস আছে সেগুলো। এছাড়া কিছু কুশন, কৃত্রিম ফুল আর বেশ কিছু কাঁচের তৈজস্ব আসে চীন এবং থাইল্যান্ড থেকে।
শুধু ফার্নিচারের বিশাল সংগ্রহ তৈরিতে নয়, বরং হরেক রকম পণ্য সম্ভার নিয়েই সাজতে চায় অরোরা। আর তাই পুরো অরোরা জুড়ে চোখে পড়বে নানান রঙের, বর্ণের, আকৃতির শোপিস, ফুলদানী সহ আরো অনেককিছু। এখানে নিয়মিত গ্রাহকদের জন্য কোনো বিশেষ ছাড় না থাকলেও ব্যক্তিগত ভাবে যারা প্রতিনিয়ত অরোরায় কেনাকাটা করেন, তার বেশ কিছু পণ্যের উপর কিছুটা ডিসকাউন্ট উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়া বিশেষ দিবসকে উপলক্ষ করে অরোরায় থাকে বিশেষ ছাড়।
এখানে ফার্নিচারের মধ্যে সবচেয়ে এক্সক্লুসিভ হলো সোফা। প্রতিটি সোফাই এখানে মাস্টারপিস। চাইলেই এগুলোর কভার পরিবর্তন করা যায়। এক সেট সোফার সাথে চাইলে ২-৩সেট কভার নেয়া সম্ভব। তবে অতিরিক্ত কভার অর্ডার করলে ৪৫ দিন সময় নেবে অরোরা। এখানে সোফা কিনতে পাওয়া যাবে ১ লক্ষ থেকে ২-৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। ডাইনিং টেবিল পড়বে ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। সেন্টার টেবিল ১৮ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। ফুলদানী ৩হাজার ২শ টাকা থেকে শুরু করে ৫হাজার টাকা। দৃষ্টিনন্দন ফায়ারপ্লেস মিলবে ৭০ হাজার থেকে ৮৫ টাকার মধ্যে। ছোট বড় ল্যাম্ড শেডের দাম পড়বে ৭হাজার ৫শ টাকা থেকে শুরু করে ৭৫হাজার পর্যন্ত। আর টেবিল ল্যাম্প পাওয়া যাবে ২হাজার ৮শ টাকা থেকে ২০হাজার টাকা পর্যন্ত।
অরোরার নতুন শাখার ঠিকানা : বাড়ি ৪৯, রোড ১১, ব্লক এইচ, বনানী-১১।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০০৯
Leave a Reply