হাইলাইটস
- কিছুদিন আগেও বেশিরভাগ মা তাঁদের গর্ভস্থ সন্তানের আলাদা করে যত্ন নেওয়ার কথা ভাবতেন না।
- সত্যি বলতে কী, এ বিষয়ে তাঁদের সেভাবে ধারণাও ছিল না তেমন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে সচেতনতা।
- হবু মায়েরাও এখন গর্ভস্থ সন্তানের সর্বাঙ্গীণ যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে অনেক বেশি ওয়াকি বহাল।
গর্ভকালীন সময়কে তিনভাগে ভাগ করা যায়, যেগুলোকে বলা হয় ট্রাইমেস্টার। প্রতিটি ট্রাইমেস্টারেরই আলাদা আলাদা গুরুত্ব এবং চ্যালেঞ্জ থাকে। আমাদের এবারের আলোচ্য বিষয়, প্রথম ট্রাইমেস্টার। হবু মা তাঁর কিছু শারীরিক অস্বস্তি এবং আবেগের দোলাচল নিয়ে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন, যে অনেক সময় ধরতেও পারেন না, বাহ্যিক কোনও শারীরিক পরিবর্তন না হলেও তাঁর গর্ভে রীতিমতো আলোড়ন চলছে। যেমন, শিশুর মস্তিষ্ক একটু একটু করে গড়ে উঠছে (যে জন্য এ সময় কোনও সমস্যা দেখা দিলে পরে তা বড় বিপদের আশঙ্কা বয়ে আনতে পারে)। এ ছাড়া তার হাত, পা, নাক, কান গঠনের পূর্বাভাসও এই ফার্স্ট ট্রাইমেস্টারেই হয়।
সুস্থসবল শিশুর জন্ম দিতে গেলে মায়ের কী করা উচিত?
• চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী রক্তপরীক্ষা করাবেন।
• উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস বা থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
• পরিবারে কারও জেনেটিক কোনও সমস্যা থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে দেরি করবেন না।
• যে কোনও হালকা ব্যায়াম করা দরকার।
যা যা করবেন না, এবার সেগুলো মনে করিয়ে দিই
• ধুমপান একেবারে বন্ধ।
• কোনওরকম অ্যালকোহল নেবেন না।
• কোনও ভারী জিনিস তুলবেন না।
• ভারী ব্যায়াম একেবারেই নয়।
• যথাসম্ভব খেয়াল রাখবেন, যাতে ঝাঁকুনি না লাগে।
• সওনা বা স্টিম বাথ নেবেন না।
• পেটে ফ্ল্যাক্সসিড অয়েল লাগাবেন না।
এবার দেখা নেওয়া যাক, কোন কোন উপাদান শিশুর সুস্থতার জন্য জরুরি। চেষ্টা করুন ডায়েটে এগুলো রাখার
•ফলিক অ্যাসিড: শিশুর মস্তিষ্ক এবং নিউরাল প্লেটের সঠিক গঠনের জন্য প্রয়োজনীয়।
• আয়রন: শিশুর জন্য বাড়তি রক্তের জোগান দেবে।
• ভিটামিন ই: শরীর যাতে খাদ্য থেকে বেশিমাত্রায় আয়রণ গ্রহ করতে পারে, সে জন্য জরুরি।
• ক্যালশিয়াম: মা এবং শিশু, দু’জনেরই হাড় যাতে সবল হয়।
• ভিটামিন ডি: প্রি-টার্ম বার্থের আশঙ্কা এড়িয়ে চলার জন্য।
• ডিএইচএ: মস্তিষ্ক এবং চোখের সুস্থ গঠনের জন্য।
• ফসফরাস: সুস্থ কিডনি এবং সবল হাড়ের জন্য।
• আয়োডিন: শিশুর মস্তিষ্ক যাতে ঠিকভাবে গঠিত হয় (যেহেতু তার থাইরয়েড গ্ল্যান্ড এখনও তৈরি হয়নি)।
• ক্লোলাইন (Chloline): গর্ভস্থ ভ্রুণের সর্বাঙ্গীণ বিকাশের জন্য অবশ্য প্রয়োজনীয়।
একটা ডায়েটের নমুনা দিলে ব্যাপারটা আর-একটু স্পষ্ট হবে
• রাতে এক গ্লাস জলে ১/২ চামচ জিরে আর ১/৪ চামচ মেথি ভিজিয়ে রাখবেন। সকালে খালিপেটে এই জলটা খেয়ে নেবেন।
• প্রাতরাশে খান দু’টো ছোট হাতরুটি, ছোট একবাটি তরকারি আর একটা ডিম। অথবা, অল্প দুধ দিয়ে বড় চামচের চার চামচ সিরিয়াল, আধখানা আপেল, স্ট্রবেরি আর একটা ডিম। আরও দু’টো অপশন হল দু’টো পরোটা-তরকারি আর চিন চামচ ছানা অথবা মাখন দিয়ে দু’টো টোস্ট, একটা ডিম এবং কলা।
• মিড-মর্নিংয়ে আপেল, বেদানা, নাশপাতি জাতীয় ফল বা একগ্লাস দুধ খেতে পারেন।
• দুপুরে খান দু’কাপ ভাত বা দু’টো রুটি, একবাটি ডাল, একবাটি তরকারি, দু’পিস মাছ বা চিকেন বা মাটন (১৫০-২০০ গ্রাম)। কিংবা ভাত বা রুটির সঙ্গে একবাটি সবজির তরকারি, একবাটি ছানার তরকারি আর রায়তা।
• বিকেলে খান অল্প ফল, রায়তা বা দু’টো ছানার সন্দেশ।
• সন্ধেবেলা নিন মুড়ি-ছোলা-বাদাম, চিড়েভাজা-বাদাম, অঙ্কুরিত ছোলা-আলুর চাট, এককাপ দুধ-দু’টো চিজটোস্ট… এর মধ্যে যেটা খুশি!
• ডিনারে খেতে পারেন দু’কাপ ভাত বা দু’টো রুটির সঙ্গে হালকা একবাটি তরকারি আর মাছ বা মুরগি বা মাটন ১৫০ গ্রাম। কিংবা স্যুপ, দু’টো টোস্ট, সেদ্ধ সবজি আর পুডিং। সবচেয়ে বড় কথা, চেষ্টা করবেন কোনও ব্যাপারেই দুশ্চিন্তা না করার। হালকা মেজাজে থাকা এই সময় খুব জরুরি। আপনি খুশি থাকলে সন্তানের বিকাশও সুন্দরভাবে হবে।
তথ্য: Dr Swati Chakrabarti (MBBS) Weight management consultant
টাটকা ভিডিয়ো খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন এই সময় ডিজিটালের YouTube পেজে। সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন।
Health and Fitness Tips in Bengali শরীর-গতিক, Yoga and Exercise Tips in Bangla
2021-04-15 09:42:54
Source link
Leave a Reply