আর্থ্রাইটিসের ব্যথার আরাম
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরীর
কলম থেকে
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস
বারডেম হাসপাতাল, ঢাকা
তবে কথা হলো−এ গ্রহ, যেখানে মাধ্যাকর্ষণের প্রভাব রয়েছে, এখানে জীবন যাপন করলে শরীরের ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা তো হবেই। এই যে হেঁটে-চলে বেড়াচ্ছেন, যত দীর্ঘ হবে এই চলা, যাত্রা−ততই হাড়ের গিঁটে মাঝেমধ্যে ব্যথা হওয়ার আশঙ্কা জোরালো হবে।
বয়স হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের অঙ্গে, হাড়ে, গিঁটে যে ক্ষয়, একে রোধ করার উপায় কী?
তাই আর্থ্রাইটিস হওয়ার ঝুঁকি প্রবলই থেকে যাবে, মাঝেমধ্যে স্বস্তি, আরাম; মাঝেমধ্যে হাড়ের গিঁটে ব্যথা−এই অভিজ্ঞতা হয় অনেকেরই। আমাদের দেহের প্রতি সহানুভূতিশীল না হলে এবং যে কাজকর্মে ব্যথা বাড়ে, সেগুলো অতিমাত্রায় করলে অস্বস্তির মাত্রা তো বাড়বেই।
একে প্রতিরোধের ভালো উপায় হলো, দিনে অন্তত দুবার নিয়মিত স্ট্রেচিং ব্যায়াম করা। তবে তা করবেন উষ্ণ পরিবেশে, যাতে পেশি আরও টানটান হয়ে অস্বস্তি না বাড়ায়। একজন ইয়োগো প্রশিক্ষক বা ফিজিওথেরাপিস্ট স্ট্রেচিং ব্যায়ামের পরামর্শ দিতে পারেন। যেহেতু আর্থ্রাইটিসে অবশ্যই প্রদাহের উপাদান রয়েছে, এ জন্য বেশির ভাগ চিকিৎসাই প্রদাহ উপশমের দিকে নির্দেশ করে। আমাদের দেহের ভেতর সম্ভাবনাময় প্রকৃতিজাত যেসব প্রদাহ রাসায়নিক রয়েছে, এগুলোর উৎস অনেক ক্ষেত্রে পুষ্টি-উপকরণ। আজকাল এ রকম অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, যে পথ্য পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রদাহকে পরিবর্তন করা যায়। আমরা জানি, পলিআনস্যাচুবেটেড (ওমেগা-৩) মেদ-অম্ল প্রদাহরোধী ফলাফল প্রদর্শন করে। এ ধরনের মেদ-অম্ল প্রচুর রয়েছে শীতল পানির মাছে, তিলবীজে ও আখরোটে।
এমন গবেষক রয়েছেন, যাঁরা বলছেন মূলত নিরামিষ খাবার আর্থ্রাইটিসের রোগীদের বেশ আরাম দেয়। এ হিতকর প্রভাবের কারণ কিছুটা আমাদের মলান্ত্রে যে জীবাণুপুঞ্জ রয়েছে, এদের ওপর সবজির প্রভাবের জন্য। আমাদের খাওয়া ও খাবারে পরিবর্তন আনলে আমাদের মলান্ত্রের জীবাণু-বসতি যায় বদলে; যেসব মেদ-অম্ল, যা তৈরি হয় এবং শোষিত হয়, সেগুলোর সংযুক্তিতেও আসে পরিবর্তন।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ভিটামিনসমৃদ্ধ খাদ্যের মধ্যে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন, টকোফেরোলস (ভিটামিন-ই) এবং এসকরবিক এসিড (ভিটামিন সি)−এগুলোও উপকারী।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে উচ্চ আঁশ, কম চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া, যাতে থাকবে প্রচুর তাজা ফল, সবজি ও গোটা দানার শস্য।
অনেক সময় ব্যথা-বেদনার জন্য নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ায় শরীরে ওজন বেড়ে যেতে পারে, শরীরে এমন ভার থাকলে অবস্থা আরও শোচনীয় হতে পারে। তাই সুষম খাদ্য ও নিয়মিত ব্যায়ামচর্চা প্রয়োজনীয় বিষয়।
কয়েক বছর ধরে গবেষণা থেকে দেখা গেছে, গ্লুকোস্যামাইন সালফেট এবং কনড্রয়টিন সালফেট আথর্্রাইটিসের ব্যথা কমাতে সহায়ক।
তবে ২০০৮ সালের মে মাসে নিউ ইংল্যান্ড জর্নাল অব মেডিসিন-এর সংখ্যায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, প্রাণিজ কোমলাস্থি এবং চিংড়ি ও কাঁকড়াজাতীয় প্রাণীয় খোলস থেকে আহরণ করা এসব রাসায়নিক আর্থ্রাইটিসের ব্যথায় তেমন কার্যকর নয়, তবে মাঝারি থেকে তীব্র হাঁটুব্যথায় কিছুটা কার্যকর হতে পারে। আয়ুর্বেদ চিকিৎসকেরা আর্থ্রাইটিসের ব্যথায় ব্যবহার করেন ‘কম্মিফোরা মুকুল গুল্ম’। একটি রজন থেকে উদ্ভূত এই গুল্মের অন্য নাম ‘গুগ্গুলু’, যা রক্তের কোলেস্টেরলও হ্রাস করে। এর ৩০০ মিলিগ্রাম পরিমাণ দিনে তিন থেকে চারবার গ্রহণ করা কার্যকর বলে দাবি করেন চিকিৎসকেরা। আর্থ্রাইটিসরোধী অন্য আয়ুর্বেদ-গুল্ম হলো ‘বসওয়েলিয়া স্যারেটা’। এ বৃক্ষ থেকে আসে ফ্রাংকিনসেনস, যা প্রদাহ রাসায়নিক ‘লিকোট্রাইনস’-এর উৎপাদন ব্যাহত করে বলে ধারণা।
ব্যথা যাতে প্রবল না হতে পারে সে জন্য রয়েছে পরামর্শ। পর্যাপ্ত বিশ্রাম, সঠিক খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম এবং শরীরের সংকেত শোনার মতো কাজ করলে ব্যথা দমিয়ে রাখতে পারবেন।
সূত্রঃ প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০০৮
mohsin
amar babar age 55, tar peter nis theke pa porjonto obos lage . thik moto hatte parena kosto hoy. R porsab korte onek somoy lage , aktu aktu hoy bole. ar jonno ki korte pari, amake aktu janan. ami khub tensone asi.