ওজন কমাতে অনেকেই নানা রকম ডায়েট করেন, কসরত করেন। কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে এসবে কোনো লাভই হয় না। এতে হতাশা বাড়ে। কিন্তু কেন এমন হয়? আসুন, জেনে নেওয়া যাক ত্রুটিগুলো কোথায়।
এক. ডায়েট করলেও প্রতিটি খাদ্য উপাদান গ্রহণ করতে হবে সঠিক মাত্রায়। অনেকেই প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান দু–একটি পুরোপুরি বাদ দিয়ে দেন। এতে লাভ তো হয়ই না, বেশি দিন অনুসরণও করা যায় না।
দুই. ক্রাশ ডায়েটে প্রথমে ওজন খানিকটা কমলেও সাধারণ ডায়েটে ফিরে যাওয়ার পর দ্রুত ওজন বাড়তে থাকে। এই ডায়েটে আসলে দীর্ঘমেয়াদি সুফল পাওয়া যায় না। ক্রাশ ডায়েট দীর্ঘদিন করাও যায় না।
তিন. অনেক সময় আমরা ডায়েট করার নামে দুর্লভ, ব্যয়বহুল উপাদান বা সাপ্লিমেন্টের দিকে ঝুঁকি। ব্যয়বহুল হওয়ায় এ ধরনের ডায়েট অনিয়মিত হয়ে পড়া স্বাভাবিক। ফলে সুফল পাওয়া যায় না।
চার. অতিরিক্ত ডায়েটের কারণে বিপাকক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। এতে ক্যালরি খরচ তুলনামূলক কম হয়। ফলে সুফল কম পাওয়া যায়।
পাঁচ. মাত্রাতিরিক্ত ক্যালরি কমালে বা খাদ্য উপাদান কমিয়ে দিলে ক্ষুধামান্দ্য, ক্লান্তি, দুর্বলতা, অমনোযোগ, বদমেজাজ ইত্যাদি সমস্যা হয়। আবার কী খাবেন, আর কী খাবেন না, তা নিয়ে অতিরিক্ত ভেবে মানসিক চাপ বাড়ে। মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের অভাবে অপুষ্টিও হয়। শর্করা বেশি কমিয়ে দিলে মস্তিষ্কে গ্লুকোজ কমে, মানসিক অবসন্নতা দেখা দেয়।
ছয়. ক্ষুধার্ত থাকার কারণে ঘুম কম হয়। নিদ্রাহীনতা হরমোনের তারতম্য ঘটায়। ক্ষুধা ও তৃপ্তি নিয়ন্ত্রক হরমোন গ্রেলিন ও লেপটিনের ওপর ঘুম প্রভাব ফেলে। ফলে ক্ষুধা আরও বেড়ে যায়। বিশেষ করে রাতে বারবার খাওয়া পড়ে। ফলে ওজন বাড়ে।
সাত. সঠিক দিকনির্দেশনা অনুসরণ না করে অবৈজ্ঞানিক উপায়ে ডায়েট করলে (যেমন কেউ সকালের নাশতাই বাদ দিয়ে দেন, কেউ আবার বাদ দেন শর্করা বা ফ্যাট) প্রাথমিক অবস্থায় ওজন কিছুটা কমে। কিন্তু একটা পর্যায়ে গিয়ে আর এতে কাজ হয় না। তা ছাড়া একজনের জন্য যে ধরনের ডায়েট প্রযোজ্য, অন্যের জন্য তা না–ও হতে পারে। তাই অন্যের কথা শুনে বা ইন্টারনেটে দেখে করা ডায়েট প্রায়ই কোনো সুফল দেয় না।
যা করবেন
● সুষম খাবার খান। খাবারে মোট ক্যালরির পরিমাণ কমালেও কোনো খাদ্য উপাদান বাদ দেওয়া চলবে না।
● দৈনন্দিন তালিকা থেকে ক্যালরি কতটা কমাবেন এবং কীভাবে করবেন, তা একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শে ঠিক করে নিন।
● শর্করা, আমিষ, ফ্যাট—সবই খাবেন। তবে তা সীমিত হতে হবে।
● দীর্ঘদিন, অর্থাৎ বছরজুড়ে অনুসরণ করা যায়, এমন ডায়েট পরিকল্পনা করুন।
● বাড়িতে যা আছে, তা–ই দিয়েই ডায়েট পরিকল্পনা করুন। নিজের জন্য আলাদা রান্না বা কেনাকাটা দরকার নেই।
●ওজন বৃদ্ধির পেছনে কোনো শারীরিক কারণ রয়েছে কি না, জেনে নিন। কোনো রোগ বা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা থাকলে আগে চিকিৎসা করুন।
জেনিফার বিনতে হক / পুষ্টিবিদ, গ্রিন লাইফ হাসপাতাল
প্রথম আলো, ৫ ডিসেম্বর ২০২০
Mahfuz
বিভিন্ন স্বাস্থ্য টিপস পেতে এই ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করুন https://bdhealthtips5.blogspot.com/
Mahfuz
বিভিন্ন স্বাস্থ্য টিপস পেতে এই ওয়েবসাইট এ প্রবেশ করুন। প্রবেশ এই লেখার উপর ক্লিক করুন করতে