পরামর্শ দিয়েছেন
ডা· মো· দেলোয়ার হোসেন
বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ
বারডেম হাসপাতাল ও ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, শাহবাগ, ঢাকা
সমস্যাঃ আমার বয়স ২৪ বছর। অনেক দিন ধরে বুকের ব্যথায় ভুগছি। ছয়-সাত মাস আগে আমার কাশি হয়। কাশির সঙ্গে কফ বের হয়। আমি সেটা ধুলোবালি মনে করে গুরুত্ব দিইনি। কিন্তু এর পর থেকে কফের পরিমাণ বাড়তে থাকে। বুকে শব্দ হয়। আমি একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিই। তিনি এক্স-রে দেখে বলেন, বুকে কফ জমেছে। আমাকে একটি কফের সিরাপ খেতে বলেন। কিন্তু কাশি, বুকের ব্যথা বা কফ সমস্যার কোনো উন্নতি হয়নি। কফ পরীক্ষায় যক্ষ্মা ধরা পড়েনি। আমি ধূমপান বা অন্য কোনো নেশা করি না। আমার কী রোগ হয়েছে? কী করলে বুকের ব্যথা ও কফ থেকে আমি মুক্তি পাব?
–এম কে কবীর
ঝিনাইদহ।
পরামর্শঃ আপনি দুটি সমস্যার কথা লিখেছেন-বুকের ব্যথা ও কফ পড়া। আসলে এ দুটির কোনোটিই নির্দিষ্ট কোনো রোগ নয়। বুকের ব্যথা ও কফ পড়া বুকের বিভিন্ন রোগের উপসর্গমাত্র। আপনাকে বুকের ব্যথা ও কফ থেকে মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই এর সুনির্দিষ্ট কারণ জানতে হবে। এটি জানতে পারলেই সঠিক চিকিৎসা সম্ভব। বুকে বিভিন্ন কারণে ব্যথা হতে পারে। যেমন-ফুসফুসে সমস্যার কারণে, ফুসফুসে আবরণ বা ঝিল্লির প্রদাহের কারণে, শ্বাসনালি ফুলে গেলে বা প্রদাহ হলে, বুকের মাংস বা হাড়ের কোনো সমস্যা হলে, হৃৎপিণ্ডের রক্তপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হলে এবং খাদ্যনালি বা বুকের বড় বড় রক্তনালির বিভিন্ন সমস্যা হলে বুকের ব্যথা হতে পারে। তবে প্রতিটি ব্যথারই নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, যার মাধ্যমে চিকিৎসক বুকে ব্যথার কারণ সম্পর্কে একটি প্রাথমিক ধারণা পান। যেমন-ব্যথা বুকের কোন জায়গায় হয়েছে, ব্যথার তীব্রতা কেমন, ব্যথা বুক বা শরীরের অন্য অংশে যায় কি না, কী করলে ব্যথা বাড়ে, কী করলে ব্যথা কমে, ব্যথার সঙ্গে ঘাম হয় কি না, বুকে চাপ অনুভব হয় কি না বা বুকে কোনো আঘাত পেয়েছে কি না, ব্যথার জন্য ঘুম বা দৈনন্দিন কাজকর্মের ব্যাঘাত ঘটে কি না।
চিঠিতে আপনি লিখেছেন, বুকের ব্যথার কথা। কিন্তু বুকের ব্যথা সম্পর্কে বিস্তারিত না জানানোয় এ সম্পর্কে সঠিক পরামর্শ দেওয়া সম্ভব হলো না।
আপনি কফ সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন। বুকে বিভিন্ন কারণে কাশির সঙ্গে কফ আসতে পারে। যেমন-ব্রঙ্কিয়াকটেসিস, ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা, ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস, লাং অ্যাবসিস ইত্যাদি। তবে প্রতিটি রোগেরই আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। আপনার কফের সঠিক কারণ জানতে হলে রোগের বিস্তারিত ইতিহাস, শারীরিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা প্রয়োজন। আপনি একজন বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে দেখা করুন।
সূত্রঃ প্রথম আলো, আগস্ট ২০, ২০০৮
Leave a Reply