বিবাহিত অনেক পুরুষ মজা করে বলে থাকেন, ‘বিয়ে করে মরেছি!’ দাম্পত্য জীবনের নানা খিটিমিটি থেকে এই রসিকতা।
কিন্তু পুরুষদের এমন মনোভাব কেন? সুখে-শান্তিতে ঘর করার জন্যই তো বিয়ে। সে ক্ষেত্রে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে ভালো বোঝাপড়াটা জরুরি। বিয়ের আগে এ ব্যাপারটি ঝালিয়ে নিলেই হয়। অন্য সব কাজের মতো বিয়ের আগেও কিছু প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার। এতে বিয়ের পর দাম্পত্য জীবনের ঝুটঝামেলা সামলানো যায় সহজে।
আসুন জেনে নিই এমন কিছু বিষয়ের কথা, যা আপনার সদ্য বিবাহিত জীবনে অশান্তির বাতাস দূরে রাখবে।
গঠনমূলক যোগাযোগ
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে চিন্তাভাবনা ও আবেগীয় আদান-প্রদান নিয়মিত হওয়া জরুরি। সঙ্গীর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনার অভ্যাস করতে হবে। তা না হলে সঙ্গী মনে করতেই পারেন যে তাঁর প্রতি আপনার আগ্রহ কম। এটি মনে হলেই তৈরি হবে অনুযোগ। তা থেকে সৃষ্টি হতে পারে মনোমালিন্য। সুতরাং অন্যের সঙ্গে কথা বলার ক্ষেত্রে আপনার সমস্যা থাকলে, বিয়ের আগেই ঠিক করার চেষ্টা করুন। তা না হলে পরে কিন্তু পস্তাতে হবে।
ঝগড়া করবেন সামলে
কোন দম্পতি ঝগড়া করেন না? সবাই করেন। কেউ কম, কেউ বেশি। ঝগড়ার পর অবধারিতভাবেই বন্ধ থাকে কথাবার্তা। কিন্তু কখনোই সেটিকে বাড়াবাড়ি পর্যায়ে নেওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে রাগ করে বাড়িতে ভাঙচুর, সম্পর্ককে আরও খারাপ করে। দ্বন্দ্বকে এমন অবস্থায় নেবেন না, যাতে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ নষ্ট হয়। একে-অপরের মতপার্থক্য গ্রহণ করার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। সম্পর্ককে দাম দিতে শিখতে হবে।
সমস্যার সমাধান করুন দুজন মিলে
একা একা সমস্যা মেটাতে কাঁহাতক ভালো লাগে? আর বিয়ের পর তো অবশ্যই না। কিন্তু অনেকে আবার নিজেকে বেশি পণ্ডিত ভাবেন। মনে করেন, সব সমস্যার সমাধান শুধু তাঁর মাথায়! এতে করে জীবনসঙ্গী নিজেকে অবহেলিত ভাবতে পারেন। তাই বিয়ের পর যেকোনো সমস্যার সমাধান করুন স্বামী-স্ত্রী মিলে। দুজনার দুটি পথ তৈরি করার কী দরকার?
ইতি-নেতি, গ্রহণ করুন সবই
প্রত্যেক মানুষ আলাদা আলাদা মানসিকতার। একসঙ্গে চলতে গেলে হয়তো জীবনসঙ্গীর কোনো বিষয় আপনার পছন্দ নাও হতে পারে। কিন্তু তাই বলে তা নিয়ে সঙ্গীকে বারবার উত্ত্যক্ত করা উচিত নয়। এর চেয়ে ভালোভাবে বুঝিয়ে বলার অভ্যাস করুন। একই সঙ্গে এসব বিষয় মেনে নেওয়ার অভ্যাস করুন, গুরুত্ব কম দিন। ধীরে ধীরেই পরিবর্তন আসবে। সবচেয়ে বড় বিষয়, পরস্পরের ভুলকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
রোমান্স করুন প্রাণখুলে
বিয়ে করবেন আর রোমান্টিক হবেন না—তা কি হয়! ‘রামগরুড়ের ছানা’ হয়ে থাকলে মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করুন। দাম্পত্য জীবন হাসিখুশি করার কোনো বিকল্প নেই। জীবনসঙ্গীর সঙ্গে আড্ডা দিন, গল্প করুন। অভ্যাস না থাকলে বিয়ের আগেই এসব ঠিক করে নেওয়া ভালো। মনে রাখবেন, বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল হতে চান। সুতরাং সেই দায়িত্ববোধ গড়ে তুলতে হবে।
ওয়েবএমডি অবলম্বনে অর্ণব সান্যাল
সোর্স – প্রথম আলো
Leave a Reply