বিশেষজ্ঞের চেম্বার থেকে
পরামর্শ দিয়েছেন
অধ্যাপক ডা· আবুল হাসনাত জোয়ারদার
নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
সমস্যাঃ আমার বয়স ২৩ বছর। উচ্চতা পাঁচ ফুট তিন ইঞ্চি। ওজন ৫৫ কেজি। আমার প্রথম সমস্যা হলো, প্রায় সময়ই নাকের ডান পাশ খোলা থাকে এবং বাঁ পাশ বন্ধ থাকে। আবার ডান পাশ বন্ধ থাকলে বাঁ পাশ খোলা থাকে। তবে শ্বাসকষ্ট তেমন একটা নেই। মাঝেমধ্যে নাক আবার স্বাভাবিক হয়-বন্ধ হয় না। আমার আরেকটি সমস্যা হচ্ছে, দূরে কোথাও ভ্রমণে গেলে, অর্থাৎ ১০ থেকে ১২ মাইল দূরে গেলেই বমি হয়। এ কারণে বাসে চড়তে ভয় লাগে এবং দূরে কোথাও যাওয়া হয় না। উল্লিখিত সমস্যা দুটির সমাধানে পরামর্শ চাই।
রাসেল, চরপাড়া, ময়মনসিংহ
পরামর্শঃ আপনার প্রথম সমস্যা, নাকের একপাশ বন্ধ থাকলে অন্যপাশ খোলা থাকে। এটি ন্যাজাল সাইকেল বা নাসিকা-চক্রের কারণে হতে পারে। এই সাইকেলকে মানুষের শরীরের একটি ফিজিওলজিক্যাল বা স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে গণ্য করা যায়। সাধারণভাবে মানুষের নাসিকা-চক্রের বিষয়টি বুঝতে পারার কথা নয়। তবে নাকের বন্ধ ভাব যদি বেশি আকারে হয়, তাহলে নাকের পার্টিশন বা সেপটাম বাঁকা আছে কি না তা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া দরকার। নাকের পার্টিশন বাঁকা থাকায় এ সমস্যা দেখা দিলে পার্টিশনের সার্জারি করিয়ে নিতে হবে। এতে নাকে বাতাস চলাচল স্বাভাবিক হবে।
আপনার দ্বিতীয় সমস্যা, ভ্রমণের কারণে বমি হওয়া। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ভ্রমণের কারণে বমি হতে পারে, মাথাও ঘুরতে পারে। এটাকে মোশন সিকনেস বলা হয়। কারও কারও ক্ষেত্রে শরীরের ভারসাম্য-ব্যবস্থার অতিসংবেদনশীলতার জন্য এমনটি হয়। সাধারণত মোশন সিকনেসকে বড় সমস্যা হিসেবে গণ্য করা হয় না।
ভেস্টিবুলার এক্সারসাইজ বা ভারসাম্য-ব্যবস্থা শক্তিশালী করার ব্যায়াম করলে এসব ক্ষেত্রে বমির ভাব কমে যায়। আপনি ভ্রমণের ঘণ্টাখানেক আগে স্টেমেটিল বা প্রক্লোরপ্যারাজিন পাঁচ মিলিগ্রামের একটি বড়ি খেতে পারেন। এতে ভ্রমণের সময় বমি হওয়া বা মাথাঘোরা কমে আসতে পারে। তবে দু-একজনের ক্ষেত্রে এই ওষুধে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। সে জন্য স্টেমেটিল বা অন্য কোনো ভেস্টিবুলার সিডেটিভ খেতে হলে আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ০৯, ২০০৮
Leave a Reply