বৈশাখের প্রথম দিনে সবাই যেমন নিজেকে সাজাতে পছন্দ করেন, তেমনি অন্দরের সাজেও নতুনত্ব্ব আনতে চান। বছরের অন্য সময় হয়তো নানা জিনিস কিনে ঘর সাজানো হয়। তবে এই দিনে অনেকে চান অন্দরের সাজে তাঁর নিজের হাতের ছোঁয়া থাকুক। যেমন—অনেকে নিজেই আলপনা আঁকেন ও হাতপাখা, মাদুরে নকশা করেন। একটু সময় দিলেই খুব সহজে নিজেই করে ফেলা যায় মনের মতো অন্দরসাজ।
ইনস্টিটিউট অব ইনোভেটিভ ডিজাইনের স্থপতি সাইদা ফজিলাতুন নাজ বলেন, খুব সহজে এবং কম খরচে অন্দরে দেশীয় আমেজ আনা যায়। শুরুটা করতে হবে ঘরের মূল ফটক থেকে। মূল ফটকে মাটির বড় কয়েকটা পাত্র রাখা যেতে পারে। তাতে আল্পনা করা হতে পারে। দরজার দুই পাশে রাখা যেতে পারে হাতপাখা। তালের কিংবা কাপড়ের নকশা করা বাহারি পাখা ঘরে ঢোকার মুখে অতিথিকে স্বাগত জানাবে। বসার ঘরের সোফাটা সেদিনের জন্য না হয় বাদই দেওয়া যাক। বসার ঘরের মেঝেতে শীতলপাটি কিংবা মাদুর পেতে তার উপর বিভিন্ন সাইজের কুশন দেওয়া যেতে পারে। চাইলে মাদুরের চারপাশে লেইস কিংবা বিভিন্ন রঙের টুকরো কাপড় জোড়া দেওয়া যায়। আবার তাতে ঘরে বসে রংতুলির আঁচড় কেটে দেওয়া যেতে পারে। কুশন কভারটা নকশিকাঁথার ফোঁড়ের হলে দেশীয় আমেজটা বেশি ফুটে ওঠে। আর এই মাদুর কিংবা পাটি বিছানো বসার জায়গার পাশে মাটির পাত্রে ভাসমান ফুল আর আর পাতা ছেড়ে দিতে পারেন।
খাবার টেবিলের রানারটা নকশিকাথাঁর ফোঁড়ের হলে ভালো। আবার পাটি কিংবা বাঁশের রানারও বিছিয়ে দিতে পারেন। ঘরে যদি গ্রাম কিংবা প্রকৃতির কোনো পেইন্টিং থাকে, তবে অনান্য আসবাবের সঙ্গে মিলিয়ে পেইন্টিং ঝোলাতে পারেন।
বৈশাখের প্রথম দিন সারা দিন শেষে ঘরে ফিরে যখন সবাই ক্লান্ত, তখনই দরকার একটু প্রশান্তির পরশ। আর শোবার ঘরে এবং ঝুলবারান্দায় যদি মঙ্গলপ্রদীপ জ্বেলে দেওয়া যায়, তবে দেখতে যেমন ভালো লাগে তেমনি ক্লান্তিও চলে যায় অনেকখানি। শোবার ঘরে রাখা যেতে পারে সবুজের আবেশ। আর গাছের ফাঁকে ফাঁকে মঙ্গলপ্রদীপ জ্বেলে দেওয়া যেতে পারে। বড় মাটির পাত্রে রাখা যেতে পারে কয়েক রঙের ফুল।
আর এভাবেই বর্ণিল আবেশে পহেলা বৈশাখের ছোঁয়া লাগবে অন্দরে।
কৃতজ্ঞতা: সাইদা ফজিলাতুন নাজ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ১২, ২০১১
Leave a Reply