দেখতে ঠিক যেন আধখানা খোসা ছড়ানো কলা। রং কেমন ফ্যাকাসে হলুদ। তবে রূপের ঘাটতি পুষিয়ে গেছে সুবাসে। ফুল ফুটলে বাতাসে গন্ধ ম ম করে ওঠে মিষ্টি নেশা ধরা গন্ধ! এই ফুলের নাম মুচকুন্দ চাঁপা।
কেউ বলেন কুসুম ফুল, আবার কেউ বলেন কনকচাঁপা। ঢাকার শিশু একাডেমীর বাগানে কনকচাঁপা বলতে বোঝানো হয়েছে রামধন চাঁপাকে। আবার বলধা গার্ডেনে মুচকুন্দ চাঁপা হলো কনকচাঁপা। কাঠচম্পা , মুচকুন্দ, কনকচাঁপা, কুসুম ফুল- নানা নাম এর।
বিশাল গাছের পাতা গোলাকার বলা চলে। পাতার উপরিভাগ উজ্জ্বল সবুজ, চকচকে আর মসৃণ। পেছনটা রুক্ষ ধূসর। গাছের উচ্চতা ৫০-৬০ ফুট হয়ে থাকে। উচ্চতার জন্য গাছে ফুল দেখা কঠিনই বটে। আরও কঠিন গাছ থেকে ফুল সংগ্রহ করা। ফুলের ছবি তোলা কতটা কঠিন তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। মুচকুন্দ চাঁপারা আড়াল বেশি পছন্দ করে। তবে ফুলপ্রেমীদের নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। ফুল বাসি হলে ঝরে পড়ে। পুরো মুচকুন্দ তলা বাসি ফুলে ছেঁয়ে যায়। এভাবেই ফুল সংগ্রহ করতে হয়। এবার পকেটে, বইয়ের ভাঁজে , বালিশের তলায়—যেখনেই রাখুন সুগন্ধ শেষ হবে না! আমার সঙ্গে মুচকুন্দ চাঁপার দেখা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, শিশু একাডেমী ও বলধা গার্ডেনে। শিল্পী এস এম সুলতানের প্রিয় ফুল মুচকুন্দ চাঁপা। তিনি সাতটি মুচকুন্দ চাপা সত্তরের দশকে যশোর মাইকেল মধুসূদন কলেজ ক্যাম্পাসে রোপণ করেছিলেন।
সত্যজিৎ রায়েরও ভালোবাসা ছিল মুচকুন্দ চাঁপার প্রতি।
ফারুখ আহমেদ
ছবি: লেখক
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১১
Leave a Reply