সকালে ঘুম থেকে জেগে বিছানায় আড়মোড়া ভাঙতে-ভাঙতেই কেউ হয়তো দূরের নীলাভ আকাশটাকে দেখতে চান। দিনের শুরুটা যেন ভালো হয়, তার জন্যই যত চেষ্টা! এ জন্য অনেকে বারান্দা ও শোবার ঘরের মাঝে কোনো দেয়াল রাখতে চান না। আবার কেউ কেউ রান্নাঘর থেকে খাবার ঘর কিংবা খাবার ঘর থেকে বসার ঘর বা ড্রয়িং রুমের মাঝে দেয়াল রাখতে চান না। তবে এসব জায়গায় ব্যবহার করে থাকেন অস্থায়ী দেয়াল। মনে হওয়া স্বাভাবিক, দেয়াল আবার অস্থায়ী হয় কীভাবে! যে দেয়াল চাইলেই স্থানান্তর করা যায়, আবার প্রয়োজন বুঝে আপনি ভাঁজ করেও রাখতে পারেন, সেটাই হলো অস্থায়ী দেয়াল। আর সৌন্দর্য সচেতন মানুষ ঘর সাজাতে এই অস্থায়ী দেয়ালের মাঝেও নান্দনিকতার পরশ খোঁজেন।
উপকরণটা যেমন
রেডিয়েন্ট ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনের স্বত্বাধিকারী গুলশান নাসরিন চৌধুরী বলেন, ঘরে অস্থায়ী বেড়া বা দেয়াল তুলতে অনেক ধরনের উপকরণ ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, এ দেয়ালটা কোন ঘরের জন্য বা কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে। কেউ কেউ পড়ার জায়গাটা আলাদা করতে একটা অস্থায়ী দেয়াল তোলেন। এ ক্ষেত্রে একটু ভারী বুননের দেয়াল দেওয়াই ভালো, যাতে করে বাইরের কোনো শব্দ শিক্ষার্থীর মনোসংযোগে ব্যাঘাত না ঘটাতে পারে। পড়া শেষে চাইলে তা গুটিয়েও রাখা যাবে। এ ক্ষেত্রে একটু ভারী বুননের ছয়-সাত ফুট উচ্চতার বেতের বেড়া ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার কাচের স্লাইডিং দরজা বা প্লাস্টিকের দেয়াল ব্যবহার করলে মন্দ হয় না। এ ছাড়া ঝিনুক, কড়ি, পাটের তৈরি কিছুটা দৃশ্যমান বা কাঠের ওপরে নকশা করেও অস্থায়ী দেয়াল দেওয়া যেতে পারে।
যেখানে যেমন দেয়াল
‘বসার ঘরের সঙ্গে খাবার ঘরের সংযোগ—প্রতিটি বাড়িতেই লক্ষ করা যায়। অনেকেই হয়তো চাইবেন না একজন অতিথি এসেই দেখুক অন্দরটা। বসার ঘর আর খাবার টেবিলের মাঝে ব্যবহার করা যেতে পারে পাট, শামুক, ঝিনুক, সিরামিক কিংবা পুঁতি দিয়ে তৈরি দেয়াল। শোবার ঘর ও বারান্দার মাঝে অনেকেই দেয়াল পছন্দ করেন না। তাই এখানে কাচের দেয়াল ব্যবহার করা যেতে পারে। এটা অনেকটা দরজার মতো, চাইলে টেনে খোলাও যাবে। আবার অনেকে বেতের দেয়ালটা বেশ পছন্দ করেন। ঘরের মাঝে হালকা আলো-বাতাস প্রবেশ করানোর উদ্দেশ্যে এ দেয়ালটা বেশ ভালো। বাড়ির প্রধান দরজা থেকে সরু পথ দিয়ে বসার ঘরে ঢুকতে গেলে অনেক সময় অন্দরের সব কিছু দেখা যায়। এ জন্য কিছুটা নকশা করা কাঠের বা কাপড়ের দেয়ালটা বেশ ভালোই লাগে।’ বলেন ডিজাইনার গুলশান নাসরিন চৌধুরী। অন্যদিকে বাচ্চাদের ঘরের জন্য কাচের ওপরে বিভিন্ন ধরনের নকশা করা বর্ণিল দেয়াল ব্যবহারেরও পরামর্শ দেন তিনি।
যেখানে পাবেন
ঢাকার আড়ং, যাত্রা ছাড়াও বেশ কিছু ফ্যাশন হাউসে কিনতে পাওয়া যাবে এই অস্থায়ী নান্দনিক দেয়াল। তবে বেতের বেড়া বা দেয়াল কিনতে হলে পান্থপথের বেতের দোকানগুলোতে মিলবে তা। এ ছাড়া কাঠের নকশা করা, রট আয়রনের অথবা কাঠের ফ্রেমের ওপর কাপড় বসিয়ে ছোট ছোট ফোঁড় দিয়ে তৈরি করে নেওয়া যায় এই নান্দনিক অস্থায়ী দেয়াল।
জেনে নিন
ঘরে দেয়াল বা অস্থায়ী বেড়া ব্যবহার করার প্রয়োজন না পড়লে নিছক ব্যবহার না করাই ভালো।
ঘরের আসবাবের সঙ্গে মিলিয়ে অস্থায়ী দেয়াল ব্যবহার করা ভালো।
দেয়ালের ব্যবহার যেন নান্দনিক হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
যে ধরনের দেয়াল ব্যবহার করা হোক না কেন, তা হালকা উপকরণের হলে ভালো হয়।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১১
Leave a Reply