অন্তরে অন্তরের অন্দরসাজেও রয়েছে দেশি আমেজ চারপাশ বাঁশে মোড়া। এখানে ওখানে ঝুলছে বাবুই পাখির বাসা। বাবুই পাখির নিপুণ কারুকাজের কথা ভাবতে ভাবতে সামনে চলে আসবে গরম গরম সব খাবার। এখানেই দেশি খাবারের পসরা নিয়ে বসেছে অন্তরে অন্তরে। ঘরোয়া পরিবেশ বলতে যা বোঝায়, ঠিক সে রকমটাই পাওয়া যাবে ঢাকার শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের দোতলার এই দোকানে। বাংলা খাবারের সঙ্গে আড্ডার চমৎকার পরিবেশ—এটাই অন্তরে অন্তরে।
বইয়ের দোকান আর কবি-সাহিত্যিকদের আড্ডার জন্য একসময় বিখ্যাত ছিল আজিজ সুপার মার্কেট। এখন ফ্যাশন হাউসের দোকান বেড়ে গেলেও কবি-সাহিত্যিকদের আড্ডা কমেনি। যেমন কমেনি অন্তরে অন্তরের খাবারের স্বাদ।
এক যুগ তিন বছর
১৯৯৬ সালে নিজের চাকরি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন ইফতেখার আহমেদ। তখন অনেকটা শখ করেই রেস্তোরাঁ ব্যবসার শুরু। আজিজ সুপার মার্কেটের দোতলার ছোট্ট একটা পুরোনো রেস্তোরাঁর জায়গা নিয়ে শুরু করলেন ব্যবসা। এখন ইফতেখার আহমেদ পুরোদস্তুর রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী। ২০০৮ সালে রেস্তোরাঁর পরিসর বেড়েছে। জায়গা ভাড়া নিয়ে বাড়ানো হয়েছে বসার জায়গা। তাও সব সময় বসার জায়গা দেওয়া যায় না।
কেমন খাবার
সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকে রেস্তোরাঁটি। শুরু হয় সকালের নাশতা দিয়ে। রুটি-পরোটা, সবজি, ডিম, ডাল, কলিজা ভুনা, পায়েস, হালুয়া ইত্যাদি পাবেন সকালে। দুপুরে থাকবে সাদা ভাত। ভর্তা থাকবে শুঁটকি, টাকি, চিংড়ি, ধনেপাতা, টমেটো, সিম, আলু, কলা, বেগুন ইত্যাদি ১০-১৫ পদের। বিভিন্ন মৌসুমি সবজি তো আছেই; লালশাক, পুঁইশাক, মুড়িঘণ্ট, ডাল ভুনা এগুলোও পাবেন।
কাজলি, কাচকি, বাতাসি, পাবদা ইত্যাদি ছোট মাছের স্বাদ তো পাবেনই; রুই, ইলিশ, রূপচাঁদা, চিংড়ি ইত্যাদি মাছও থাকছে। মুরগি, খাসির একাধিক পদও চেখে দেখতে পারেন। এ ছাড়া সপ্তাহে এক দিন (বেশির ভাগ সময় শনিবার) হাঁসের মাংসের বিশেষ আয়োজন থাকে। প্রতিদিন বিকেলে থাকছে লুচি-সবজি। চাইলে স্পেশাল পায়েস দিয়েও খেতে পারেন। এ ছাড়া ঝালফ্রাই, হালিম, জিলাপিও আছে বিকেলের খাবারের তালিকায়। চা পাবেন সারা দিন।
খাবারের দামটাও নাগালের মধ্যেই। ৫০ টাকা নিয়েও পেট পুরে খেয়ে আসতে পারবেন।
স্পেশাল পায়েস
উপকরণ: গরুর দুধ ১০ কেজি, চিনিগুড়া চাল ৫০০ গ্রাম, খেজুরের গুড় ৩ কেজি
প্রণালী: বড় পাত্রে ১০ কেজি দুধ নিয়ে জ্বাল দিতে হবে।
ঘণ্টাখানেক জ্বাল দেওয়ার পর দুধ লালচে রং নেবে।
দুধ যখন কমতে কমতে ৫-৬ কেজিতে দাঁড়াবে, তখন তাতে চাল দিতে হবে।
১৫ মিনিট জ্বাল দিতে হবে।
এরপর কুচি কুচি করে কেটে রাখা খেজুরের গুড় দিয়ে ৫ মিনিট জ্বাল দিতে হবে।
ব্যস, পায়েস তৈরি।
এবার ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।
পার্থ সরকার
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ১৫, ২০১০
Leave a Reply