ভালোবাসার অনুভূতিই তো সবচেয়ে বড়। তবে এর প্রকাশটাও থাকা চাই। বিশেষ দিনে প্রিয়জনকে ছোট্ট একটি উপহার, শুভেচ্ছা কার্ড আর ফুল দিয়ে নতুন করে যদি একবার বলি ‘তোমায় বড় ভালোবাসি’ তবে মন্দ কী? ভালোবাসার মানুষ হতে পারে বিশেষ একজন বা পরিবারের কেউ অথবা বন্ধুরা।
ফ্যাশন হাউস সাদাকালোর স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার তাহসিনা শাহিন বলেন, ‘আমাদের কর্মব্যস্ত একঘেয়ে জীবনের মধ্যে কিছুটা হলেও ভিন্ন আমেজ নিয়ে আসে বিশেষ দিবসগুলো। বিশেষ করে ভালোবাসা দিবসের কথা বললে তো কথাই নেই। ভালোবাসার হয় না বিশেষ কোনো রং। মনের রঙেই রাঙিয়ে যায় দিনটা। আর বুক ভরা ভালোবাসার সঙ্গে যদি থাকে ছোট কোনো উপহার, তবে ভালোবাসা দিবসটা হয় পরিপূর্ণ। এ বছর যেহেতু কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশত (১৫০তম) জন্মবার্ষিকী পালিত হচ্ছে, তাই উপহারসামগ্রীর মধ্যে রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতি রয়েছে বেশ।’
‘তোমারে যেন ভালোবাসিয়াছি শতরূপে শতবার
জনমে জনমে যুগে যুগে অনিবার’— রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার এ দুই লাইন দিয়ে টি-শার্ট, মগ ও কার্ড করা হয়েছে। ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের হলমার্কের দুই তলাজুড়েই ভালোবাসা দিবসের বর্ণিল সব উপহারে ঠাসা। সিঁড়ি ভেঙে ওপরে উঠেই দেখা যাবে হূদয় আকৃতির শো-পিস, তাতে আবার চাপ দিলেই ভালোবাসার বাণী ভেসে আসে। এ রকম কথা বলা বিভিন্ন উপহারই মিলবে এখানে। আছে বিভিন্ন আকার আর ডিজাইনের পুতুল, মগ, গয়না, শো-পিস, কার্ড, শুকনো ফুল, ফটোফ্রেম, ঘড়ি, আরও কত কী। হলমার্কের স্বত্বাধিকারী জাকির বলেন, ‘ভালোবাসা দিবসে আমাদের উপহারের আয়োজনটা একটু বেশি। বড় উপহারের সঙ্গে ছোট উপহার রাখার উদ্দেশ্য হলো, সব শ্রেণী-পেশার মানুষ যেন তার ভালোবাসার মানুষকে উপহার দিয়ে খুশি করতে পারে।’
পাশেই অবস্থিত গিফট শপ আইস কুলে উপহার কিনতে আসা একজনের হাতে ‘কাপল মগ’ দেখে আর কিছু জিজ্ঞেস করতে হলো না, কার জন্য এই উপহার। মুচকি হেসে জানালেন, মা আর ভাইয়াদের জন্যও কিনেছেন শো-পিস আর টি-শার্ট। তবে বন্ধুদের জন্য কার্ড আর হাতে বাঁধা ব্যান্ডই বেশি পছন্দ করছেন তিনি।
শাহবাগে অবস্থিত আজিজ সুপার মার্কেটের নিচতলার ভার্টিক্যাল ও শেইপ অ্যান্ড ফর্মে মিলবে হাতে তৈরি কার্ড, ভালোবাসার চিরায়ত বাণীসংবলিত কোটেশন হোল্ডার, আরও অনেক কিছু। গিফট কর্নার আইডিয়াসে পাওয়া যাবে গিফট আর পোশাক দুটোই। আইডিয়াসের স্বত্বাধিকারী নিপা খালেদ জানালেন, ফাল্গুনের দ্বিতীয় দিন ভালোবাসা দিবস। তাই উপহার নির্বাচনের সময় ফাল্গুনের আবেশটা রাখতে চাইছেন অনেকেই। বন্ধুদের জন্য মূলত ছোট গয়না আর শো-পিস বেশি চলে। তবে যদি হয় পরিবারের সদস্য বা বিশেষ কেউ, তাহলে পোশাকের দিকে ঝোঁকটা থাকছে বেশি।
ভালোবাসা দিবসে আড়ংয়ের চমকটা থাকছে ভিন্ন রকম। এখান থেকে কিনতে পারবেন প্রিয়জনের জন্য হীরার অলংকার।
বিভিন্ন আকার আর উপহারগুলোর ধরনের ওপর দামের রয়েছে ভিন্নতা। হলমার্কে কার্ডের দাম পড়বে ৬০-৮০০ টাকা, মগ ১৪৭-১৭৪৫, কাপল মগ ১২৯৫, পুতুল ১২০-১৫৫০০, মিউজিক্যাল হার্ট ৬৫-৮৯৫, অলংকার ১২০-২৫০০, চকলেট বক্স ৭৫-৬০০ টাকা এবং বিভিন্ন ধরনের শো-পিস ৮৫-২০০০ টাকা। উপহার দেওয়ার জন্য চাই সুন্দর একটা ব্যাগ আর তা কেনা যাবে ৪৫-৪৭৫ টাকায়, হাতে বাঁধা ব্যান্ড ৪৫-১৫০ টাকায়। আর্চিজ গ্যালারি আর আইস কুল থেকে এ রকম দামেই কিনতে পারবেন উপহারসামগ্রী। সাদাকালো থেকে মগ ২২০-২৫০, টি-শার্ট ২০০-৩০০, কার্ড ৫০ টাকায় কেনা যাবে। ফ্যাশন হাউস রঙের মগগুলো বেশ বর্ণিল—এগুলো পাওয়া যাবে ২৪৫ টাকায়। কার্ড ৩৬-২০০ টাকা ও চাবির রিং ৩০-১৮০ টাকায়।
এ ছাড়া রাজধানীতে এখন চলছে একুশে বইমেলা। চাইলে ভালোবাসা দিবসে প্রিয়জনকে দিতে পারেন বই। আর হূদয় নিংড়ানো ভালোবাসার সঙ্গে ফুল তো চাই।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ০৮, ২০১০
Leave a Reply