এমন অনেক সমস্যা আছে, যা কাউকে বলা যায় না। এ রকম প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবেন সারা যাকের। ১৫ দিন অন্তর সুবন্ধু সমীপেষু কলামে চিঠি লিখুন সাদা কাগজের এক পিঠে সংক্ষেপে, ঠিকানাসহ। চিঠি পাঠানোর ঠিকানা :
সুবন্ধু সমীপেষু, নকশা, প্রথম আলো
সিএ ভবন, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
আমি এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। প্রি-টেস্ট পরীক্ষার আগে মা-বাবা পছন্দ করে আমার বিয়ে দেন। কিন্তু নতুন পরিবেশে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারি না। শ্বশুরবাড়ি থাকলে বাবার বাড়ি যেতে ইচ্ছে করে আবার বাবার বাড়ি থাকলে শ্বশুড়বাড়ি যেতে মন চায়। স্বামী আমার থেকে উচ্চতায় খাটো। কিন্তু বিয়ের পরও তাকে স্বামী হিসেবে মেনে নিয়েছি। ভালোই কাটছিল। হঠাৎ করে গত ঈদের আগে অসুস্থ হই। মানসিক অবস্থাও খারাপ হয়। সেই অবস্থায় আমি শ্বশুরবাড়ি যাই। সেখান থেকে শ্বশুরের ১০ হাজার টাকা আমি চুরি করি। বিয়ের আগে আমার চুরির অভ্যাস ছিল না। পরে আমি স্বামীকে সব খুলে বলি। সে অবিশ্বাস করে আমাকে। যখন চুরি করি, তখন আমার মাথা ঠিক ছিল না। এখন টাকা দিয়ে দেব। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকেরা যেভাবে ফোনে কথা বলে, তাতে মনে হয়, তারা আমাকে রাখবে না। স্বামী খুব জেদি। এ অবস্থায় আমি কী করতে পারি?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
বরিশাল সদর রোড।
এ ধরনের মর্মান্তিক অবস্থা বেশির ভাগ মধ্যবিত্ত বা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবার মেনে নিতে পারে না। যদি তোমার পরিবার বোঝে যে তোমার চিকিৎসা দরকার এবং তারা সেই পথে যাচ্ছে, সেটা তোমার ভাগ্যের ব্যাপার। তোমার শ্বশুরবাড়ি থেকে একই রকম ব্যবহার প্রত্যাশা করো না। ধরে নাও, তোমার এ ব্যাধির জন্য কিছু ভুগতে হবে।
আমি এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী। ১০ বছর ধরে বাংলাদেশে থাকছি। আমার বাবা-মা যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। বাবা আমাকে বাংলার সংস্কৃতি শেখানোর জন্য দুই বছর বয়সে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। আমার মা জানতেন না যে আমি চিরদিনের জন্য তাঁর কোল থেকে বিদায় নিচ্ছি। মা ভেবেছিলেন কিছুদিন ঘুরে ঠিকই আমার কাছে চলে আসবে। কিন্তু তা আর হলো না। বাবা আমাকে তাঁর বোনের কাছে রেখে দেন। আমার বাবার বোনের কোনো সন্তান নেই। তিনি আমাকে অনেক আদর করেন, কিন্তু আমি তাতে কোনো তৃপ্তি পাই না। দুই বছর অন্তর আমার বাবা-মা আমাকে দেখতে আসেন। যেদিন আমার বাবা-মা আমাকে দেখতে আসেন সেদিন আমার কাছে ঈদের দিন মনে হয়। কিন্তু তার পর তাঁরা চলে যান। এখন আমার কথা হলো, আমি যেখানে থাকি তাঁরা আমাকে অনেক ভালোবাসেন। আর আমার বাবা-মা আমাকে অনেক ভালোবাসেন। এখন আমি আমার দেশে ফিরে যেতে চাই। কিন্তু তাঁদের রেখে কীভাবে যাই?
সুমি
উত্তর গোড়ান, ঢাকা
তোমার ফুপুও তোমাকে ভালোবাসেন। তোমার বাবা-মা তো বটেই। অনেকে মেয়ে বিদেশে বড় করতে চান না। পাশ্চাত্য দেশ তো অনেক পারমিসিভ, হয়তো বা সে জন্যই।
তুমি কি তোমার মনের কথা তোমার মা-বাবা ও ফুপু কাউকে বলেছ? কথার মাধ্যমে অনেক কিছু সমাধান হয়। তুমি কথা বলে দেখ।
আমি উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষের ছাত্রী। আমি যখন অনেক ছোট তখন আমার ভাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া হলে আমার মা সব সময় ভাইয়েরই পক্ষে থাকতেন। সে সময় থেকেই মায়ের প্রতি আমার এক ধরনের ক্ষোভ জন্মে। আমি তাঁকে নানাভাবে কষ্ট দেওয়ার চেষ্টা করতাম। এসবের জের ধরেই আমি যখন সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী তখন ইচ্ছা করেই আমার চেয়ে তিন বছরের বড় একটি ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলি। আমি যখন নবম শ্রেণীতে উঠলাম তখন বুুঝতে পারলাম আমি এখন সত্যিই তাকে ভালোবাসি। এর কিছুদিন পরই ও আমাকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। আমি প্রথমে রাজি না হলেও হঠাৎ একদিন বাসায় মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে ওকে বিয়ে করে ফেলি। তবে নিবন্ধন হয়নি। তারপর আমি একসময় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। আমরা দুজনে মিলে ঠিক করি সন্তানটা নেব। কিন্তু সে সময়ই আমি আরেকটা ছেলের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ি এবং উপলব্ধি করি আগেরজনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা আর সম্ভব না। তাই আমি তাকে অনেক বুঝিয়ে অ্যাবরশন করিয়ে ফেলি। এতে সে অনেক কান্নাকাটি করে। আর এর কয়েক দিন পরই আমি তাকে জানিয়ে দিই যে তার সঙ্গে আমার আর সম্পর্ক রাখা সম্ভব নয়। এতে সে খুব রেগে যায় এবং এখন আমাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। এবং বলছে পরের জনকে সব বলে দেবে। কিন্তু পরের জনকে আমি খুব ভালোবাসি, ওকে ছাড়া আমি বাঁচব না। এখন আমি কী করতে পারি? পরের জনের সঙ্গে আমার তিন মাসের সম্পর্ক। তবে কখনো শারীরিক সম্পর্ক হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
রংপুর।
এত অল্প বয়সে বোঝা মুশকিল যে তুমি সত্যি সত্যি কাকে ভালোবাসো। তা ছাড়া প্রথমেই তোমার মা তোমার ভাইকে ভালোবাসেন, এ রকম দোহাই দিয়ে একখানা বিয়ে করে বসেছ।
তুমি একটু স্থির হও।
এই দ্বিতীয় সম্পর্ক তৈরি করার আগে একটু ভেবে দেখো।
মাঝেমধ্যে ব্রেক কষা প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি। মেয়েটিও আমাকে খুব ভালোবাসে। পরিচয় হয় ফোনে। প্রথমে বন্ধুত্ব, পরে একপর্যায়ে একে অপরকে ভালোবেসে ফেলি। আমাদের ছবি আদান-প্রদান হয়। এতে আরও আমাদের ভালোবাসা গভীর হতে থাকে। এভাবে ভালোবাসা তিন মাস অতিবাহিত হলো। অর্থাৎ একদিন মেয়েটা বলে, তোমাকে যা বলেছি, তার মধ্যে একটা কথা মিথ্যা বলেছি। মেয়েটি যা বলল, তা শুনে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। মেয়েটি বিবাহিত। তার একটা ছেলে আছে। ছেলেটার বয়স দুই বছর। অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় তাকে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মেয়েটি রাজি ছিল না। মেয়েটি তার স্বামীকে পছন্দ করত না। স্বামীটি ছিল খুব খারাপ। শুধু আত্মীয়তার বন্ধন যেন ঠিক থাকে, তাই মেয়েটি কিছু বলতে পারেনি। এখন তার স্বামীর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। শুধু মাঝেমধ্যে এসে ছেলেকে দেখে যায়। এখন সে আর তার স্বামীর সঙ্গে সংসার করতে চাচ্ছে না এবং সে আরও বলল, আমার কাছে চলে এলে সে তার স্বামীকে ডিভোর্স দেবে। মেয়েটি আমাকে খুব ভালোবাসে। আর ছেলেটাকে তার মায়ের কাছে রেখে দেবে। এ কথা বলার পর আমার সিদ্ধান্ত জানাতে বলেছে। আমি এখন কী করব?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
মেয়েটি মিথ্যা কথা বলে আপনার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছে। এটি আপনাদের সম্পর্কের বড় অন্তরায়। আপনি সে জন্যই (এবং সঠিক কারণেই) হতচকিত।
আপনি এই সম্পর্ক বেশি এগোতে দেবেন না। অন্তত আপনার দিক থেকে কোনো প্রশ্রয় দেওয়া উচিত হবে না।
মেয়েটি যদি স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করে আপনার কাছে আসে, তবে তার প্রেমের প্রমাণ মিলবে।
আপনি এগোবেন না। আপনার কাছে এই আমার পরামর্শ।
আপা আমি বিবাহিত, যার সঙ্গে আমার সম্পর্ক সেও বিবাহিত। আমি আমার দোষ স্বীকার করছি। আমার জীবনে ওর কোনো প্রয়োজন ছিল না। আমি জেনে-বুঝে ভুল করেছি। দীর্ঘদিন তার সঙ্গে ফোনে আমার আলাপ হতো। একদিন ওর বাসায় যাই। কিছুটা ঘনিষ্ঠ হওয়ার পর আমার ওকে সন্দেহ হয়। ওকে সরাসরি জিজ্ঞেস করলাম, ঘরে কোনো ক্যামেরা ফিট করা আছে কি না। সে আমাকে পরীক্ষা করতে বলে। আমি কোনো কিছুই পাইনি। এরপর থেকে ওর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক জড়িয়ে পড়ি। ও এ জন্য জোর করত আমাকে। আমি খুব অপরাধবোধে ভুগতাম, সৃষ্টিকর্তার কাছে ক্ষমা চাইতাম। ওকে প্রচণ্ড বিশ্বাস করতাম। কিন্তু একদিন ওর কাছের মানুষের কাছে জানতে পারি, সে আমার ব্যক্তিগত মুহূর্তে তোলা ছবি ওদের দেখায়। কিন্তু ওদের কথা আমি বিশ্বাস করিনি। একসময় ছেলেটি নিজেই স্বীকার করে। এর মধ্যে সে অন্য আরেকটি মেয়ের এমন ছবি তোলার অপরাধে গ্রেপ্তার হয়। আমি সম্পর্ক থাকাকালে ওকে অনেক টাকা দিয়েছি। আমি জানতে চাই, ও আমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে কি না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
আপনি আপনার অজান্তে এক ভীষণ ফাঁদে পড়ে গিয়েছিলেন। আপনার দিক থেকে প্রেমটা সত্যই ছিল।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত আপনার প্রেমিকের প্রতারণা এবং আপনার প্রেমের ঘৃণ্যতম সুযোগ নেওয়ার কারণে আপনি সম্পূর্ণ পরাজিত।
আপনি মেনে নিন যে আপনি একটা অত্যন্ত খারাপ লোকের খপ্পরে পড়েছিলেন। আইনিভাবে আমার মনে হয় না আপনি কিছু করতে পারবেন। সে জেলখাটা লোক। এ রকম লোক আপনাকে জব্দ করার শক্তি রাখে না। আপনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকুন যে আপনি আর এই লোকের সঙ্গে যাবেন না। আশা করি, সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমার বাবা বিদেশে থাকতেন। তখন আমি নবম শ্রেণীতে পড়ি। আমার বাবা দেশে ফিরে এলে প্রায়ই দেখতাম, মায়ের সঙ্গে কারণে-অকারণে তাঁর ঝগড়া হতো। এভাবেই চলতে থাকে দিন। একদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে দেখি, মা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। তারপর বাবা আবার বিয়ে করেন। আমি তখন এসএসসি পরীক্ষার্থী। এ রকম দুশ্চিন্তার কারণে পরীক্ষায় পাস করলেও ভালো ফল করতে পারিনি। বাবার কথায় উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হয়েছি কিন্তু পড়ালেখায় মন বসে না। মাথায় কেবলই বাজে চিন্তা কাজ করে। বাবা পড়ালেখার খরচ দিতে চাইলেও মা (সৎমা) তা চান না। এদিকে আমার মামারা মাকে আবার বিয়ে দিতে চাইছেন। আমি মানা করা সত্ত্বেও তাঁরা তা করতে চাইছেন। আমার ওপর মা ভরসা করতে পারছেন না। আমার আর কিছু ভালো লাগে না।
ইমন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
মা-বাবার মধ্যে সমঝোতা না হলে বা ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলে ছেলেমেয়েরা কষ্ট পায়, এটাই স্বাভাবিক। তবে বড়দের ব্যাপারগুলো মেনে নিতে পারলে ভালো। বাবা যদি আরেকটা বিয়ে করে ভালো থাকেন, ভালো। আর মা যদি আরেকটা বিয়ে করে ভালো থাকেন, সেটাও ভালো। তাঁরা যেভাবে ভালো থাকতে চান, থাকুন। তুমি তাঁদের সন্তান, সন্তানের প্রতি ভালোবাসা তাঁদের থাকবেই।
বাবা এবং মায়ের দিকের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলে তোমার পড়াশোনার ব্যাপারটা নিশ্চিত করা দরকার। তুমি সৎমায়ের মুখাপেক্ষী হয়ে থেকো না।
আমি স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষে পড়ি। চার বছর আগে আমার এক চাচাতো বোনের বিয়েতে তাঁর এক উকিল বোনের সঙ্গে আমার পরিচয়। মেয়েটি দেখতে খুব সুন্দর। আমার তাঁকে ভালো লাগে। তার পর থেকে মাঝেমধ্যে ফোনে কথা হয়। এরপর ধীরে ধীরে আমরা পরস্পরকে ভালোবেসে ফেলি। এখন মেয়েটি এইচএসসি পাস করেছে। দুই মাস আগে মেয়েটির মা-বাবা এসএসসি পাস এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে তার ঠিক করেন এবং চাকরির জন্য তাঁরা টাকাও দেন। মেয়েটি আমাকে বলে, ‘আমি কী করব?’ আমি তাকে বলি, বাড়িতে সবকিছুই জানাতে এবং আমার জন্য দুই বছর অপেক্ষা করতে। কিন্তু মেয়েটি আমার জন্য অপেক্ষা না করে সবকিছু ভুলে গিয়ে বিয়েতে রাজি হয়ে যায়। তাদের বাগদানও হয়ে গেছে। এর পর থেকে আমার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ। তখন থেকে আমি যেন পাগলের মতো হয়ে গেছি। শত চেষ্টা করেও তার সঙ্গে আর কথা বলতে পারি না।
এখন ছেলেটির চাকরি না হওয়ায় বিয়েটাও ভেঙে গেছে। আমার কি এখন মেয়েটার সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত?
মামুন
টাঙ্গাইল
এটা নির্ভর করে মেয়েটি আপনাকে এখনো ভালোবাসে কি না, তার ওপর। হয়তো চাপে পড়ে মা-বাবা এই লেনদেনের বিয়েতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। মেয়েটিকে বুঝে তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হবে।
আমি স্নাতক চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। দুই বছর ধরে একটি মেয়েকে ভালোবাসি। সে সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। সেও আমাকে ভালোবাসে। কিন্তু আগে তার অন্য একজনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। সেই ছেলেটি অবশ্য বিয়েও করে ফেলেছে। কিছুদিন ধরে ছেলেটি আবার তার সঙ্গে ফোনে কথা বলে এবং তাকে বিয়ে করতে চায়। ছেলেটি খুব প্রভাবশালী। সে (ছেলেটি) এখন ভয় দেখাচ্ছে, যদি সে আমাকে বিয়ে করে, তবে আমাদের দুজনকেই মেরে ফেলবে। এরই মধ্যে আমাদের দৈহিক সম্পর্কও হয়ে গেছে। ওই ছেলের সঙ্গে বিয়ে মেয়ের পরিবার কখনো মেনে নেবে না। বিষয়টি মেয়ের পরিবার এখনো জানে না। ভয়ে মেয়েটি আমাকে বলে তাকে ভুলে যেতে। কিন্তু আমি তাকে কিছুতেই ভুলতে পারছি না। তা ছাড়া সামনের মাসে আমার ফাইনাল পরীক্ষা। আমি কিছুতেই পড়াশোনা করতে পারছি না। এই মুহূর্তে আমার কী করণীয়?
আকাশ
ময়মনসিংহ
মেয়েটি এক সন্ত্রাসীর খপ্পরে পড়েছে, তার সঙ্গে আপনিও। আমি আপনার জায়গায় হলে পড়াশোনা চালিয়ে যেতাম। নিজেকে তৈরি করতাম। তারপর যোগ্য হয়ে দেখিয়ে দিতাম ‘কত ধানে কত চাল’। আসলে পড়াশোনা করে লায়েক হয়ে থাকার ওপরে আর কিছু নেই।
আমি কিছুদিন আগে পড়াশোনা শেষ করেছি। এখন একটা ভালো চাকরি খুঁজছি। এক বছর আগে ফোনে এক মেয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। প্রথমদিকে বন্ধুত্ব এখন তার চেয়ে একটু ঊর্ধ্বে। তবে প্রেম বা ভালোবাসার পর্যায়ে নয়। আমরা অনেক দূরত্বে আলাদা আলাদা শহরে বাস করি। আমরা এখনো দেখা করিনি। আমি চাইলেও সে কখনো চায় না, আমাদের দেখা হোক। তার কথা শুনেই বুঝতে পেরেছি, সে খুব সুন্দরী, ভালো মনের অধিকারী। ছাত্রী হিসেবেও মেধাবী। সে অনার্স চতুর্থ বর্ষে পড়ছে, মা-বাবার একমাত্র সন্তান। আমাদের দুজনের বোঝাপড়া অনেক ভালো। পারিবারিক ও সামাজিক মর্যাদায় তাদের অবস্থান আমাদের চেয়ে অনেক ওপরে। তবে এসব উপেক্ষা করে আমরা দুজন মিলে অনেক স্বপ্ন দেখি। তাই আমি চাইছি, আমাদের সম্পর্কটার একটা রূপ দিতে। কিন্তু সে তো দেখা করতে চায় না, এমনকি বিষয়টা সিরিয়াসভাবেও নিতে চায় না। এদিকে তার চিন্তা ছাড়া আমার কিছু ভালো লাগে না। সারাক্ষণ মনে মনে তার ছবি আঁকি। রাস্তায় বের হলে সবার মধ্যে তার মুখটি খুঁজে বেড়াই। আমি অনেক বাস্তববাদী। কিন্তু এখন আমি প্রায়ই ভাবি, আমার ঘোড়ারোগ হয়েছে। এ অবস্থায় আমার কী করা উচিত?
তপু
ঠাকুরগাঁও
আপনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে, আপনি ভালো চাকরি পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন। তবে মেয়েটার মতিগতি খুব সুবিধার নয়। সে কেন ধরা দিতে চাইছে না? আপনি ক্যারিয়ারের ব্যাপারে সিরিয়াস হোন। ভালো চাকরি পেলে সব দিক থেকেই আপনার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে।
আমি স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে পড়ি। আর আমি যাকে ভালোবাসি, সে স্নাতক তৃতীয় বর্ষে পড়ে। যদিও বয়সে সে আমার থেকে প্রায় দেড় বছরের ছোট। প্রায় দশ বছর ধরে আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি। ফোনে আমাদের যোগাযোগ হয়। এমন কোনো দিন নেই যে আমাদের মধ্যে কথা হয় না। আমরা দুজনই খুবই ভালোভাবে আমাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। এখন ওর পরিবার বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। এ জন্য ও আমাদের সম্পর্কের কথা তার পরিবারকে জানিয়েছে। তাদের জানিয়ে দিয়েছে, প্রয়োজন হলে মরবে কিন্তু আমাকে ছাড়া অন্য কোনো ছেলেকে ও বিয়ে করবে না। আমাদের সম্পর্কের কথা দুই পরিবারই জানে। ওর পরিবারের অনেকেই এ সম্পর্ক মেনে নিলেও ওর বাবা মেনে নেননি। এদিকে আমার মা-বাবাও এ সম্পর্ক মেনে নিতে চাইছেন না। আমরা দুজনই আমাদের মা-বাবাকে ভালোবাসি এবং শ্রদ্ধা করি। আমাদের পালিয়ে বিয়ে করার ইচ্ছা কোনো দিনই ছিল না। মা-বাবার মনে কষ্ট দিয়ে এবং তাঁদের সম্মান ক্ষুণ্ন হয়—এমন কোনোকিছু আমরা করতে চাই না। আমাদের পরিবারকে আমরা যথেষ্ট বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা মেনে নিতে চাইছে না। ওর বাবার ধারণা, ওকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের গোপনে বিয়ে করে ফেলা কি উচিত হবে?
অরিত্র
যশোর
মা-বাবা সব সময় ছেলেমেয়ের নিজস্ব পছন্দ মেনে নিতে পারেন না। আবার মা-বাবা নিশ্চয়ই এটাও চিন্তা করেন (বা করা উচিত), আমরা সন্তানের পছন্দকে উপেক্ষা করে অন্য আর একজনকে তার জীবনে চাপিয়ে দিচ্ছি। এতে কি আমাদের সন্তান সুখ পাবে? সবচেয়ে ভালো হয়, পালিয়ে বিয়ে না করে যদি মা-বাবাকে বোঝানো সম্ভব হয় যে এই মেয়েকে ছাড়া আপনি সুখী হবেন না।
অল্প বয়সে ছেলেমেয়ের এই আত্মবিশ্বাস এবং সাহস থাকে না। কিন্তু জীবনটাকে নিজের মতো করে সাজাতে সাহস করে বড়দের সামনে দাঁড়ানো উচিত।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১০
মনিকা
আমার বিয়ে হয়ে যাবার পর আমার স্বামী আমাকে রেখে বিদেশ চলে যান। এর পর ফেইসবুকে এক ছেলের সাথে আমার পরিচয় হয়। আমরা অনেক ভাল বন্ধু ছিলাম। আমার একাকী সময়ে আমরা দু বন্ধু দুজন কে জ্বালাতাম, গল্প করতাম। যেহেতু পরিচয় টা সামনা সামনি ছিলনা তাই তাকে আমি আমার আসল নাম আর আমি যে বিবাহিতা তা বলাই হয়নি। কখনো ভাবিনি যে এক সময় তাকেই অসম্ভব ভাল লেগে যাবে। কিন্তু কয়েক মাস পরে আমরা দুজন ই অনুভব করি যে আমরা দুজন দুজন কে ভালবেসে ফেলেছি। ছেলেটা আমার সাথে কথা না বলে থাকতে পারতনা, আমি ও একই রকম। খারাপ লাগে ওর জন্য। আমি ওকে অনেক ভালবেসে ফেলেছি। এখন আমাদের সম্পরকের ৩ বছর। একনও ও জানেনা আমি আসলে কে। সে আমাকে আগের নামেই ডাকে। আমারও ভালো লাগে। এখন আমি ওকে হাঁড়াতে চাইনা। কি করে ওকে সব খুলে বলি? আর আমি কি করবো বুঝতে পারিনা। আমাকে কেউ সাহায্য করুন দয়া করে। উল্লেখ্য যে আমি এখন আমার স্বামীর সাথে আছি। কিন্তু আমার স্বামী আমাকে শুধু মাত্র বিয়ে করা লাগবে বলেই বিয়ে করেছেন। আমার সাথে তার মানসিকতা যায়না, তবুও যেহেতু বাবা মা পছন্দ করে বিয়ে দিয়েছিলেন তাই এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছিনা,এই অবস্থা থেকে মুক্তি চাই আমি। আমি কি করবো? কেউ আমাকে সাহায্য করুন। আমাকে মেইল করে যানান দয়া করে। ধন্নবাদ–মনিকা
Bangla Lifestyle
একটি সম্পর্কে থাকাকালীন সময়ে অন্য আরেকটি সম্পর্কে না জড়ানোই ভালো।