ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহতাব খানম দীর্ঘদিন ধরে কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিষয়টি পড়াচ্ছেন। তিনি আপনার মানসিক বিভিন্ন সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান দেবেন। অল্প কথায় আপনার সমস্যা তুলে ধরুন। আপনার সঠিক পরিচয় না দিতে চাইলে অন্য কোনো নাম ব্যবহার করুন।—বি.স.
সমস্যা: আমার একটি সমস্যা আমি বেশি ‘কথা’ বলি। এ জন্য অনেকেই আমার প্রতি ভীষণ বিরক্ত হয়ে থাকে। আমি অনেক লোকের কাছ থেকে অনেক সময় গালি শুনি এবং আমাকে প্রায় ধমক দিয়ে কথা বলে। আমার মা-বাবা, আমার ভাই-বোন আমার প্রতি অসন্তুষ্ট। আমার সামনে পরীক্ষা। আমার পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। এখন আমি কী করে কম কথা বলতে পারব?
হীরা, ঢাকা।
পরামর্শ: তুমি শুধুই লিখেছ, বেশি কথা বলো। কিন্তু কী ধরনের ‘বেশি কথা’ তা জানাওনি। যেমন—ধরো, তোমার কথার বিষয়বস্তুগুলো অন্যদের কাছে অপ্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে কি না, অন্যেরা কথা বলার সময় সবটুকু না শুনেই কথা বলতে শুরু করো কি না, বেশি অবান্তর প্রশ্ন করো কি না, সব ব্যাপারে না বুঝেই হঠাৎ মন্তব্য করো কি না ইত্যাদি। আমার মনে হচ্ছে, তোমার পরিবার তোমার প্রতি খুব সুবিচার করছে না। তোমাকে সারাক্ষণ ধমক দিয়ে তাঁরা তোমাকে কোনোভাবেই সাহায্য করছেন না। বরং তাঁদের বুঝতে হবে, তোমার চাহিদাগুলো কী, অর্থাৎ কী কারণে তুমি বেশি কথা বলছ। অনেক সময় যাদের অবচেতন মনে আশপাশের মানুষের মনোযোগ পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা খুব বেশি থাকে, তারা নিজেদের অজান্তেই কথা বেশি বলে। তোমার আচরণে যদি কোনো ভুলত্রুটি থাকে, তাহলে বাবা-মাকে বুঝতে হবে, তাঁরা তোমাকে বড় করতে গিয়ে, না বুঝে কোনো ভুল করে ফেলেছেন কি না। কারণ, অভিভাবকেরা সব সময় সন্তানদের ভালো চাইলেও কখনো বা এমন কিছু ভুল করে ফেলেন, যা তাঁদের সন্তানদের অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ তৈরিতে অবদান রাখে। তোমাকে তাঁরা ছোটবেলায় কম সময় দিয়েছেন কি না, সেটাও ভেবে দেখার প্রয়োজন আছে। কাজেই, তাঁদের প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে তুমি এখন যেমন আছ, ঠিক তেমনভাবেই তোমাকে প্রথমে পুরোপুরি গ্রহণ করে নেওয়া, তোমার চাহিদাগুলো বোঝার চেষ্টা করা, তোমার যে জায়গায় ঘাটতি আছে, সেগুলো বুঝে তোমাকে যতটা সম্ভব সহায়তা করা। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আলাদাভাবে সামাজিক দক্ষতা শেখানো হয় না। তাই সন্তানদের সুন্দরভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে শেখানোর দায়িত্ব মা-বাবাকেই নিতে হবে। তবে সেটা শাসনের মাধ্যমে করা সম্ভব নয়।
তাঁদের এটাও বোঝা দরকার যে বেশি কথা বলার ফলে তুমি কোনোভাবে উপকৃতও হচ্ছো কি না। তোমার কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, তুমি নিজের প্রতি এবং অন্যদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। প্রতিদিন কিছুটা সময় নীরব থেকে চোখ দুটো বন্ধ করে তোমার ভেতরের সত্তাটির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করবে। নিজের নামটি ধরে ডেকে নিজেকে বলবে, অন্যরা ভুল বুঝলেও তুমি যেমন আছ তেমনভাবেই নিজেকে ভালোবাসো এবং শ্রদ্ধা করো। তোমার অন্যান্য ভালো গুণের জন্য নিজেকে অভিনন্দিত করবে এবং একজন মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন মানুষ হওয়ার শপথ নেবে।
সমস্যা: প্রতিবেশী এক চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে আমার পাঁচ বছরের সম্পর্ক। সে উচ্চমাধ্যমিক পাস। আমি স্নাতক (মার্কেটিং) দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছি। আব্বু-আম্মু দুজনই শিক্ষকতা করেন। আমি তাঁদের একমাত্র মেয়ে। তাঁরা চান, আমার স্বামী উচ্চশিক্ষিত, প্রতিষ্ঠিত কেউ একজন হোক। আমার মাকে আমি ওর কথা বলেছি, মা রাজি হননি। বাবাকে বললে বাবাও রাজি হবেন না কিংবা হয়তো বিয়ে দেবেন, কিন্তু কখনোই মন থেকে আমাদের গ্রহণ করবেন না। এখন আমি যে তার হাত ধরে পালিয়ে যাব, সেই বয়সও আমার নেই। তা ছাড়া মনও সায় দেয় না। সে বলেছে, কখনো জোর করে বিয়ে করবে না। ওকে যদি বলি, আমাদের বিয়েটা মনে হয় হবে না, তাহলে আমার সঙ্গে কথা বলতে চায় না (ফোনে)। সে নিরপরাধ, তাকে কষ্ট দিতে ইচ্ছে করে না। মা-বাবার মানসম্মানের কথা ভাবলে ওর কথা ভুলে যাই।
নিঝুম, ঢাকা।
পরামর্শ: তোমার মনে এখন দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে, আর সে কারণেই মানসিক অস্বস্তি হচ্ছে। তুমি যদি মা-বাবার সম্মতি ছাড়া ছেলেটিকে বিয়ে করো, তাহলেও কষ্টে থাকবে, আবার ছেলেটিকে বিয়ে না করলেও ছেলেটি কষ্ট পাবে বলে তোমার মন অশান্ত থাকবে। তবে তোমার চিঠি পড়ে বোঝা গেল না, তুমি নিজে আসলে কী চাইছ। কারণ, একসময় তো তোমাকে এই দ্বন্দ্ব থেকে বেরিয়ে এসে কোনো একটি সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। মা-বাবা অবশ্যই তোমার সুন্দর ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাঁদের একমাত্র মেয়েকে প্রতিষ্ঠিত ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে চাইবেন।
তবে তুমি যদি আগে পড়ালেখাটা শেষ করো, তাহলে খুব ভালো হয়।
নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর যদি বিয়ে করার সিদ্ধান্তটি নাও, তাহলে বেশ কিছুটা সময় পাবে এই সম্পর্কটি নিয়ে খুব ভালো করে চিন্তাভাবনা করার। তখন যদি তুমি সিদ্ধান্ত নাও, তাহলে অন্তত নিজেকে বোঝাতে সক্ষম হবে যে তুমি অনেক ভেবেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছ। তবে অপেক্ষাকৃত কম কষ্ট যেখানে হবে বলে মনে হয়, সেটি নির্বাচন করার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।
একটি পেতে গেলে অন্য একটি তোমাকে কষ্ট হলেও ছেড়ে দিতে হবে। আর সেটাই বাস্তবতা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ২১, ২০১০
ষুভ
আমি এক্তটা মেয়ে কে খুব পছন্দ করি।কিন্ত সে হিন্দু।
মেয়ে টাও আমাকে পছন্দ করে।
করে। কিন্ত সে কয়েক দিন থেকে ও আমাকে বলছে
“আমাদের সম্পর্ক কেউ মেনে নিবে না।
সুতরাং আমাদের আর কথা বলা বা মেলামেশা ঠিক হবে না।
আবার বলে আমরা ফ্রেন্ড হিসাবে থাকতে পারি।”
ওকে ভূলে থাকা ও আমার পক্ষে সম্ভব না
আমার পরাসশুনা অ কিছহু হচ্ছে না।
আমি বুজতে পারসিনা আমি কি করব।
প্লিজ হেল্প মি…