এখনকার যত্ন বর্ষার সময় আমাদের ত্বকের বাড়তি যত্ন নেওয়া দরকার। এ সময়ে বাতাসের আর্দ্রতার কারণে রোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে ত্বক পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন পায় না। এ কারণে ত্বকে কালচে ভাব দেখা যায়। এ সময় দিনে কয়েকবার করে মুখ ধোয়া উচিত। বর্ষায় ত্বকের যত্ন সম্পর্কে জানালেন রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা।
শুষ্ক ত্বক
প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এক চা-চামচ গোলাপজল ও এক চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে মুখে লাগাতে হবে। কিছুক্ষণ পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
তৈলাক্ত ত্বক
গোলাপজল অথবা দুধের সঙ্গে বেসন মিশিয়ে পুরো মুখে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে। মুখ ধুয়ে পানির ভাগ বেশি এমন কোনো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
স্বাভাবিক ত্বক
পেস্তা বাদামের গুঁড়ো, গোলাপজল ও দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। বছরের এ সময়ে দিনে দুবার মুখ ধুতে হবে। ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণ রোধ করবে, এমন সাবান ও পাউডার ব্যবহার করা উচিত। ভারী মেকআপ একদম নয়। পাশাপাশি ভারী ময়েশ্চারাইজারও এড়িয়ে গেলে ভালো হয়।
বর্ষায় হাত ও পায়ের যত্ন নিচের দুটি প্যাক ব্যবহার করতে পারেন
আনারস আধা কাপ, পেঁপে আধা কাপ, মধু আধা কাপ, ভুসি এক কাপ। উপাদানগুলো একসঙ্গে বাটতে হবে। হাতের কনুই, বাহুতে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। হালকা গরম পানিতে ধুয়ে ফেলতে হবে। প্যাকটি পায়েও লাগানো যেতে পারে। ত্বক মসৃণ ও সুন্দর হবে।
এক চামচ নারকেল তেল, আধা চামচ লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে হাতে, কনুইয়ে ও তালুতে ঘষে লাগাতে হবে। ১০-১৫ মিনিটের জন্য। হাত ও পায়ের কালো দাগ দূর হবে। জীবাণুর সংক্রমণ হবে না।
পায়ের যত্ন
কাদামাটি লেগে পায়ের অবস্থা যাচ্ছেতাই থাকে এ সময়। তাই দরকার বিশেষ পরিচর্যা। আধা চা-চামচ সিরকা, আধা কাপ টক দই মিশিয়ে নিন। পা ও গোড়ালিতে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন পাঁচ মিনিট। জীবাণুর সংক্রমণ হবে না। পা সুন্দর থাকবে।
চুলের যত্ন
আর্দ্রতার কারণে বা ভেজা রাখার কারণে চুলের গোড়ায় ছত্রাকের সংক্রমণ হয়ে যায়। এ ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়ারও উপায় আছে। চুল ধুয়ে ব্লো ড্রাই করে নিতে হবে। অথবা ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে নিতে হবে। চুল যাতে সুন্দর ও ঝলমলে থাকে, সে জন্য সপ্তাহে এক দিন এ প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। মেহেদির সঙ্গে চার চামচ লেবুর রস, চার চা-চামচ কফি এবং দুটি ডিম ও টক দই মিশিয়ে দিলে চুল অনেক সুন্দর হবে।
চুলে কোনো ধরনের প্যাক বা শ্যাম্পু করার আগে অবশ্যই ভালোভাবে তেল ম্যাসাজ করতে হবে। রক্ত চলাচল বৃদ্ধির পাশাপাশি চুলের গোড়া এতে পুষ্টি পাবে। এ ছাড়া চুল ভালো রাখার জন্য প্রোটিন ও মিনারেলযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। প্রচুর পরিমাণে পানিও পান করা দরকার।
বর্ষার খাওয়াদাওয়া
বর্ষায় আমাদের হজমশক্তি দুর্বল হয়ে যায়। এ কারণে খাওয়াটা এ সময় একটু হালকা হলেই ভালো।
হজমশক্তি বাড়ানোর জন্য জিরা, ধনে, মরিচ, হলুদ ইত্যাদি নিয়মিত খেতে হবে।
প্রতিদিন দুধ খেতে হবে। এ ছাড়া তিতা খাবার, যেমন—করলা, মেথি, তুলসী, নিম খেতে হবে। বর্ষায় চা তো চাই-ই চাই। তবে একটু ভিন্ন স্বাদের জন্য পুদিনা পাতা, আদা দিয়েই না হয় পান করুন। অতিরিক্ত তেল, ঝাল, মসলা দেওয়া খাবার খাওয়া যাবে না। মাছ-মাংস কম খেলেই ভালো।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ০৩, ২০১০
Leave a Reply