বালা-চুড়ির আবেদন সব সময়ই। একসময় শুধু শাড়ির সঙ্গেই পরতেন মেয়েরা। সোনার কিংবা কাচের চুড়ির প্রতিই তাঁরা আকৃষ্ট ছিলেন। সময় বদলে গেছে। কিন্তু এর আবেদন কমেনি। বরং হাল ফ্যাশনের অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে এই বালা-চুড়ি। যেকোনো পোশাকের সঙ্গেই পরা যায় এই গয়না, তা আপনি যে বয়সেরই হোন না কেন। কাচের চুড়িকে ছাপিয়ে জায়গা করে নিয়েছে কাঠ, সুতা, হাড়, মাটি ও ধাতব উপাদানের বালা।
পিরানের স্বত্বাধিকারী হোসনা বানু বলেন, ‘কাচের চুড়ি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সে কারণে অন্যান্য চুড়ির দিকে ঝোঁক বেড়েছে। হাত ভর্তি বালা-চুড়ি পরতে সবার ভালো লাগে না। এ ধরনের বালা একটি পরলেও ভালো লাগে। সব বয়সের মেয়েরা এসব গয়না পরতে পারে।’ তিনি বলেন, শাড়ির সঙ্গে বালাই বেশি মানানসই। তবে দুই হাতে না পরে এক হাতে পরলে বেশি ভালো লাগে। কাঠ, রুপা, মাটি বা পিতলসহ অন্যান্য ধাতব বালা শাড়ির সঙ্গে মানায়। বালা চওড়া হলে একটিও পরা যেতে পারে। তা না হলে দুটি বালা একসঙ্গে পরতে পারেন। একই রঙের, একই রকম হতে হবে এমনটি নয়। দুটি দুই ধরনের হতে পারে। তবে যাঁদের হাতের গড়ন একটু মোটা ও গোল, তাদের সরু আকারের চুড়ি পরা উচিত। পুরো শরীরের গড়ন মোটা হলে হাতে চওড়া আকারের একটি বালা ভালো মানাবে। তবে হাতের গড়ন চিকন হলে হাত ভর্তি করে নানা রকমের বালা পরলে ভালো দেখাবে।
কম বয়সের মেয়েরা ফতুয়া, কামিজের সঙ্গে এসব বালা-চুড়ি পরতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। প্লাস্টিক, চামড়ার চুড়ির সঙ্গে কাচের চুড়ি মিলিয়ে পরলে ভেঙে যাওয়ার ভয় থাকে না। এ ছাড়া বিভিন্ন রঙের বালা মিলিয়ে পরতে পারেন সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে। খাড়ু আকৃতির বালা একটি পরলেই ভালো দেখাবে। তবে অনেক বালা পরলে কানে, গলায় গয়না না পরাই ভালো। যে ধরনের বালা পরুন না কেন তা যেন পরিবেশ, পোশাকের সঙ্গে মানানসই হয়।
মাদুলির স্বত্বাধিকারী মো. তমিজউদ্দীন মনে করেন, হালকা ধরনের গয়না কামিজ, ফতুয়ার সঙ্গে বেশি মানানসই। ধাতব বালা বিশেষ করে পিতল, তামার বালা পরতে পারেন। ব্রেসলেট, বালা ও প্লাস্টিকের চুড়ি মিলিয়ে পরলে অনেক আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে হাত। কাঠ, হাড়ের বা ধাতব বালা তিন-চারটি পরতে পারেন। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন, কোন ধরনের পোশাক পরছেন। কোন অনুষ্ঠানে যেতে জমকালো শাড়ির সঙ্গে ভারী ধরনের বালা পরা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে অক্সিডাইজ, রুপার গয়না মানানসই হবে। যাঁরা একটু অন্য ধরনের গয়না পরতে ভালোবাসেন তাঁরা চাইলে কাঠ কিংবা মাটির গয়নায় মনের মতো নকশা করে নিতে পারেন। নানা আঁকিবুকির হাড়ের গয়নাও ভিন্ন আমেজ এনে দেয়। তিনি আরও বলেন, সুতার বালার ক্ষেত্রেও ভিন্নতা দেখা দেয়। পুতি, কুন্দন বসানো বালা মেয়েরা পছন্দ করেন। তা ছাড়া কাতান কাপড়ের বালাও হাল ফ্যাশনে বেশ চলছে। যাঁরা সব সময় বালা পরতে চান তাঁদের জন্য প্লাস্টিকের চুড়ি বা তামার বালা উপযুক্ত। তবে সুন্দর বালা পরার আগে হাতের যত্ন নিন। তা না হলে বালার সৌন্দর্য খানিকটা কমবে বৈকি।
কোথায় পাবেন: মাদুলি, পিরান, মায়াসির, রং, যাত্রা, নাগরদোলা, দেশাল আড়ংসহ দেশি প্রায় সব ফ্যাশন হাউসেই এই বালা পাবেন। দাম পড়বে ২০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। কিছুটা কম দামে এসব বালা পাবেন নিউমার্কেট ও গাউছিয়ায়।
তৌহিদা শিরোপা
মডেল: সীমানা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ২০, ২০১০
Leave a Reply