সামনেই আসছে বাবা দিবস। বাবার জন্য ভালোবাসা প্রকাশ করার দিন প্রতিদিনই। তবে এই বিশেষ দিবসটিতে ভালোবাসার ব্যারোমিটারটিকে একটু বাড়িয়ে নেয়ার জন্য ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা প্রতিটি সন্তানেরই করা উচিত। বাবাকে ভালোবাসার কথা বলার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ফ্যাশন হাউজ ও গিফট আইটেমের দোকানগুলো। বাবা দিবসকে সামনে রেখে এসব ফ্যাশন হাউজ ও গিফট শপের চিত্র তুলে ধরা হলো
বাবা দিবসের বিশেষ আয়োজনকে স্মরণীয় করে রাখতে গিফট শপগুলো নতুন সাজে সেজেছে। ২০ জুনকে সামনে রেখে কার্ড, কেক, মগ, শো-পিসসহ নানা স্যুভিনিরের সংগ্রহ দেখা যাচ্ছে গিফট শপগুলোতে। বাবা দিবসে বাবার প্রতি ভালোবাসার লাইন সংবলিত কার্ড পাওয়া যাচ্ছে আর্চিজ, হলমার্ক, আইসকুল, আইডিয়ালসহ কার্ডের দোকানগুলোতে। নানা ডিজাইনের এসব কার্ডের দাম পড়বে ৮০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। ইচ্ছে করলে বাবাকে চমক দিতে মিউজিক্যাল কার্ডও দেয়া যেতে পারে। কার্ডের পাশাপাশি বাবার জন্য আদর্শ গিফট হতে পারে বাহারি মগ। সাদা, কালো, লাল, নীল, সবুজ, কমলা প্রভৃতি রঙের উপর বাবার জন্য লেখা বিশেষ কোনো শব্দ সংবলিত এই মগগুলো হতে পারে বাবার জন্য আকর্ষণীয় উপহার।
বিশেষ দিবস মানেই কেক। বাবা দিবসও এর ব্যতিক্রম হওয়া উচিত নয়। এ দিবসকে সেলিব্রেট করতে সন্তানরা বেছে নিতে পারেন সুস্বাদু কেক। চকলেট, ভ্যানিলা, ব্ল্যাক ফরেস্টসহ নানা স্বাদের কেক হতে পারে এ দিনটিতে বাবার জন্য বিশেষ চমক। ইচ্ছে করলে অর্ডার দিয়েও কেক বানিয়ে নিতে পারেন। কেকের ওপর বাবার জন্য কিছু কথা লিখে দিলে তা ভিন্ন মাত্রা যোগ করতে পারে। তাই সাধারণ একটি কেককে অসাধারণ করে তুলবার জন্য কেকের ওপর ‘বাবা শুধু তোমার জন্য’ এই জাতীয় বাক্য লিখতে পারেন। কেকের অর্ডার দিতে হটকেক, কুপার্স, সুইস, বাসকিন রবিনসসহ নগরীর বিভিন্ন কেকের দোকানে ঢুঁ মারতে পারেন।
যে কোনো বিশেষ দিবসকে স্বাগত জানাতে ফুলের কোনো বিকল্প নেই। বাবা দিবসের আয়োজনে সন্তানেরা বাবাকে শুভেচ্ছা জানান ফুল দিয়ে। একগুচ্ছ রজনীগন্ধা কিংবা একতোরা গোলাপের ফুলেল শুভেচ্ছা এই আয়োজনকে পৌঁছে দিতে পারে ভিন্ন মাত্রায়। এই ফুলেল শুভেচ্ছায় আরো খানিকটা চমক তৈরি করতে চাইলে বাবার হাতে তুলে দিতে পারেন বাকেট। এই বাকেটে স্থান করে নিতে পারে রজনীগন্ধা, গোলাপ, গাঁদা, জিনিয়া, অর্কিড, জিপসিসহ নানা ফুল। চমকদার ও সৌন্দর্যমণ্ডিত বাকেট পেতে হলে ফুলের দোকানগুলোতে যোগাযোগ করতে পারেন।
শাহবাগ ও কাটাবনের ফুলের দোকান থেকে বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের বাকেট।
বাবা ও সন্তানের ভালোবাসার স্মৃতিকে চিরভাস্বর করে রাখতে চাইলে বাবার জন্য আদর্শ উপহার হতে পারে ফটোফ্রেম। এই বিশেষ দিনটিতে বাবাকে সুরের মূর্চ্ছনায় মাতিয়ে রাখতে চাইলে উপহার দিতে পারেন বাবার পছন্দের গানের সিডি, ডিভিডি। এছাড়া গোটা দিনটি বাবার জন্য আনন্দময় করতে চাইলে তার পছন্দের সিনেমা দেখাতে পারেন।
শুধু গিফট দিয়ে নয়, বাবা দিবসের এই বিশেষ ক্ষণটিতে সন্তানদের প্রয়োজন কিছু মানসিকতা পরিবর্তনের। মানুষে মানুষে যেমন ভিন্নতা থাকে তেমনি বাবার অভিব্যক্তিতেও ভিন্নতা থাকাটা স্বাভাবিক। অনেক বাবা-ই আছেন যারা খানিকটা গুরুগম্ভীর থাকতে পছন্দ করেন। তবে এর মানে কিন্তু এই না যে এ ধরনের বাবা তার সন্তানকে কম পছন্দ করেন বা কম ভালোবাসেন। বরং বাইরের কঠিন রূপটির অন্তরালে বাবা কিন্তু তার সন্তানের জন্য ঠিকই লুকিয়ে রাখেন অফুরন্ত ভালোবাসা। কাজেই বাবার গম্ভীরতার দোহাই দিয়ে তার সাথে অনাবশ্যক দূরত্ব তৈরি হতে দেয়া কোনো সন্তানের জন্যই ঠিক হবে না। বরং বাবার গাম্ভীর্য বুঝে এবং বাবার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই তার সাথে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে। অন্যদিকে বাবা যদি সন্তানের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে বিশ্বাসী হন তাহলে সচেতন থাকতে হবে যেন বাবার এই সরলতার সুযোগ নিয়ে এমন কিছু করা না হয় যাতে বাবার অসম্মান হয়। সেই সাথে বাবার কাছে অন্যায় আবদারের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
পারিবারিক কাঠামোতে বেড়ে ওঠার সময় আমরা অনেকেই ভেবে নেই যে শুধু মা-বাবাই সন্তানের প্রতি দায়িত্ব পালন করবেন এবং সন্তানের ভালো-মন্দ দেখভাল করবেন। কিন্তু সন্তান যখন একটু বড় হয়ে পড়াশোনা বা কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে তখন বাবা-মা’ও প্রত্যাশা করেন যে সন্তানরাও একইভাবে তাদের খোঁজ-খবর নেবে। তাই কাজের ফাঁকে একটু সময় বের করে বাবা-মা’র খোঁজখবর নেবার চেষ্টা করুন। আর এ বিশেষ দিনটিতে বাবাকে জানিয়ে দিন তার প্রতি আপনার ভালোবাসার কথা।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, জুন ১৫, ২০১০
Leave a Reply