বাড়ির একঘেয়ে খাবার থেকে ছুটি নিতে কার না ভালো লাগে। হালকা-পাতলা রেস্তোরাঁ বা ফাইভ স্টার হোটেল অথবা আইসক্রিম পারলার বা কফি শপে মানতেই হবে কিছু ম্যানার্স। জেনে নিন বাইরে খেতে গেলে নিজেকে কীভাবে রেডি করবেন। লিখেছেন তামান্না শারমিন
পোশাক-আশাক
বাইরে খেতে গেলে আপনার প্রিপারেশনের প্রথম ধাপ হচ্ছে পোশাক-আশাক। জেনে নিন আপনার আউটলুক কেমন হবে।
০০ প্রথমত কী ধরনের রেস্তোরাঁয় যাচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করবে আপনি কী পরবেন। যদি ফাইভস্টার হোটেলের রেস্তোরাঁয় খেতে যান তাহলে ওয়েল-ড্রেসড হয়ে যাওয়াটা বাঞ্ছনীয়। সেক্ষেত্রে গর্জিয়াস শাড়ি বা সালোয়ারকামিজ হতে পারে ফার্স্ট চয়েস। সঙ্গে মানানসই জুতা আর ব্যাগ। ছেলেরা ফর্মাল সুট-টাই পরতে পারেন। পায়ে ক্লোজড শু।
০০ এমনিতে রেস্তোরাঁর জন্য ক্যাজুয়াল পোশাক আদর্শ। জিন্স, ট্রাউজারের সঙ্গে শর্ট কুরতি বা টপ, এমনকি শর্ট ড্রেসে নিজেকে সাজিয়ে নিতে পারেন। অ্যাকসেসরিজ যত কম থাকে ততই ভালো। মেক-আপেও ন্যাচারাল লুক মেইনটেইন করুন। ছেলেরা ডেনিম, টি-শার্ট এবং পায়ে স্নিকার্স পরতে পারেন। হাতে বড় ডায়ালের ঘড়ি বা স্পোর্টস ওয়াচ ভালো মানাবে।
০০ পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোন সময় রেস্তোরাঁয় যাচ্ছেন, সেটা মাথায় রাখা জরুরি। যদি দিনের বেলা হয় তাহলে হালকা রং ভালো। রাতের জন্য ডার্ক কালার। যদি রিল্যাক্স মুডে থাকেন তাহলে যে পোশাকে আপনি কমফোর্ট ফিল করেন সেই পোশাক বেছে নিন। হালকা সুতির চুড়িদার কুরতি বা কাপরি হতে পারে আপনার প্রথম পছন্দ। সাদা বা প্যাস্টেল শেডের পোশাক এ ক্ষেত্রে একেবারে পারফেক্ট। খোলা চুল বা উঁচু পনিটেল আর চোখে সানগ্লাস আপনার লুককে আরও ডিফাইন করবে।
০০ অনেক সময় রেস্তোরাঁয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকে। তা হতে পারে বিবাহবার্ষিকী বা জন্মদিনের সেলিব্রেশন। অনুষ্ঠানের যদি কোনো ড্রেসকোড থাকে তাহলে তা মেনেন চলুন। নাহলে উপলক্ষ বুঝে পোশাক বেছে নিন।
টেবিল ম্যানার্স
০০ টেবিলে সোজা হয়ে বসবেন। টেবিলের ওপর কোনোভাবেই ঝুঁকবেন না। যতক্ষণ না খাবার সার্ভ করা হচ্ছে। হাত দুটো কোলের ওপর রাখুন। খাওয়ার সময় হাত টেবিলের ওপর রাখতে পারেন।
০০ খাবার আগে কোলে ন্যাপকিন পেতে নিন। শার্টে ন্যাপকিন গুঁজবেন না। যদি কোনো কারণে আপনাকে টেবিল ছেড়ে উঠতে হয় ন্যাপকিন আলতোভাবে ভাঁজ করে প্লেটের ডানদিকে বা বামদিকে রাখুন। প্লেটের তলায় বা চেয়ারে রাখবেন না।
০০ যদি আপনি কোনো ড্রিংক অর্ডার করেন তাহলে খেয়াল রাখবেন যেন ড্রিংকের গ্লাস সব সময় ডিনার প্লেটের বাঁদিকে থাকে। এমনকি পানির গ্লাস বাঁদিকে রাখাই ভালো।
০০ সিলভারওয়ার সাজানোরও একটা নিজস্ব নিয়ম থাকে, পারলে তা মেনে চলুন। ডিনার প্লেট সব সময় মাঝখানে রাখুন, খাওয়া শেষ হলে কাঁটাচামচ ক্রস করে প্লেটের ওপর রেখে দিন।।
০০ খাবার সব সময় বাঁদিক থেকে ডানদিকে পাস করবেন।
আচার-ব্যবহার
০০ রেস্তোরাঁয় জোরে জোরে কথা বলবেন না। হতে পারে আপনি অনেকের সঙ্গে এনজয় করতে এসেছেন এবং স্বাভাবিকভাবে হাসি-ঠাট্টা হবেই, কিন্তু অতিরিক্ত যেন না হয়। কারণ, আপনি ছাড়া রেস্তোরাঁয় অনেকেই থাকেবন, যাঁরা আপনার ব্যবহারে বিরক্ত হতে পারেন।
০০ ওয়েটারদের সঙ্গে ভদ্র ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন, তারা আপনাকে খাবার সার্ভ করার মতো জরুরি কাজ করেন। ফলে তাদের কোনোভাবেই অসম্মান করবেন না।
০০ কোনো কারণে টেবিল ছেড়ে উঠতে হলে বা বাথরুম যেতে হলে নিজেকে এক্সকিউজ করে তারপর উঠুন। স্মোকিং জোন না হলে সিগারেট খাবেন না।
০০ খাবার ও রেস্তোরাঁ ভালো লাগলে শেফকে ধন্যবাদ জানাতে ভুলবেন না।
ইটিং এটিকেট
০০ খাবার দিতে দেরি হলে চিৎকার, চেঁচামেচি করবেন না। নম্রভাবে ওয়েটারকে ডেকে কারণ জিজ্ঞাসা করুন। খাবার দেওয়ার সাথে সাথে তড়িঘড়ি করবেন না। সবাই যখন খাওয়া শুরু করে তখন একসঙ্গে খাওয়া শুরু করুন।
০০ খেতে খেতে শব্দ করবেন না। মুখে খাবার নিয়ে কথা বলবেন না। একেবারে অনেকটা পরিমাণ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন না। মুখ বন্ধ করে খাবার চিবাবেন।
০০ খাবার যতই ভালো লাগুক, টেবিলে বসে আঙ্গুল চাটবেন না। চেষ্টা করবেন জোরে ঢেঁকুর না তুলতে। টেবিলে টুথপিক ব্যবহার না করাই ভালো।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, জুন ০৮, ২০১০
Leave a Reply