‘শিল্পীরা যেন এক জায়গায় আবদ্ধ না থাকেন। গ্যালারি থেকে তাঁরা বাইরে আসবেন। মানুষের কাছাকাছি, প্রকৃতির কাছাকাছি। আমরা ইদানীং এক যান্ত্রিক জীবে পরিণত হয়েছি। জীবন কাঠামোকে সেভাবে তৈরি করেছি। এখানেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে শিল্পীদের পার্থক্য। তাঁরা বহুভাবে সবকিছু দেখেন। তাঁদের দেখার চোখ দিয়ে আমাদের দেখাবেন।’ বলেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশ আর্ট কাউন্সিলের আয়োজনে ঢাকার গুলশানে ‘বর্ষাবরণ উৎসব ১৪১৭’-এর উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। তিন দিনের এ বর্ষাবরণ উৎসব শুরু হয় ১৭ জুন। এবারের আয়োজনের আকর্ষণীয় দিক ছিল তরুণ শিল্পীদের নানা মাধ্যমের শিল্পকর্ম প্রদর্শনী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীসহ ৪০ জন শিল্পী এ প্রদর্শনীতে অংশ নেন। বাংলাদেশ আর্ট কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক মাহিন খান বলেন, ‘এটি আমাদের দ্বিতীয় উদ্যোগ। তরুণ শিল্পীদের সুযোগ করে দেওয়ার প্রচেষ্টা মাত্র।’ ভাস্কর্য, ছাপচিত্র, পেইন্টিংস, কাঁসা-পিতলসহ নানা শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হয় এতে। উৎসবে অংশ নেওয়া শিল্পী সাদিয়া শারমিন বলেন, ‘এ ধরনের উদ্যোগ আরও নেওয়া উচিত। এতে আমরা গ্যালারির বাইরেও শিল্পকর্ম প্রদর্শনের সুযোগ পাব।’ ‘বৃষ্টি ছাপিয়ে এই তরুণেরা উৎসাহের সঙ্গে এ উদ্যোগে অংশ নিয়েছেন। এটি ইতিবাচক দিক।’ বলেন বাংলাদেশ আর্টস কাউন্সিলের সভাপতি আফরোজা জামিল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কবি সৈয়দ শামসুল হক, শিল্পী মনিরুল ইসলাম, বাংলাদেশে স্পেনের রাষ্ট্রদূত তারতুড়ো ম্যানুয়েল পেরেস মারটিনেজ, পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স জিসান কিংসুক হক, মারিকো বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ঋষি পার্দাল উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকার নর্থ গুলশান এভিনিউয়ে ১৭ জুন রাত ১০টা পর্যন্ত পরিবেশিত হয় বাদ্যযন্ত্রের শাস্ত্রীয় সংগীত। পরদিন বরেণ্য চিত্রশিল্পীদের চিত্রাঙ্কন উৎসবের পাশাপাশি শিশুশিল্পীদের ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ১৮ জুন ছিলশিশুশিল্পীদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। এরপর বিশিষ্ট শিল্পীদের বর্ষার সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে তিন দিনের এ উৎসব শেষ হয়।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ২২, ২০১০
Leave a Reply