বন্ধত্বের কারণগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্ত্রী, ৩৫ শতাংশ ক্ষেত্রে স্বামী এবং ১০-২০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের ত্রুটির জন্য গর্ভধারণ হয় না। বাকি ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে অনুর্বরতার কোনো সঠিক কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।
সন্তান লাভের আশায় কোনো দম্পতি কোনো ধরনের জন্মনিরোধক উপায় অবলম্বন না করে এক বছর পরও যখন স্ত্রীর গর্ভধারণ হয় না তখন তাকে বলা হয় বন্ধ্যত্ব বা ইনফার্টিলিটি।
সন্তান স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার এক মজবুত সেতুবন্ধন, দাম্পত্য সম্পর্ক তাতে পুর্ণতা পায়। পরিবার, সমাজ তথা মানবজাতির অস্তিত্বের জন্য শিশুর জন্ম অপরিহার্য। আমাদের দেশে এখনো গর্ভধারণ না করার জন্য প্রথমেই মেয়েদের দায়ী করা হয়।
সামাজিকভাবে মেয়েদের অবহেলা করা হয়, মেয়েরা মানসিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্বাভাবিক দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করার এক বছরের মধ্যে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা না ঘটলে ত্রুটি স্বামী বা স্ত্রীর অথবা উভয়েরই থাকতে পারে। বন্ধ্যত্বের কারণগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্ত্রী, ৩৫ শতাংশ ক্ষেত্রে স্বামী এবং ১০-২০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের ত্রুটির জন্য গর্ভধারণ হয় না। বাকি ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে অনুর্বরতার কোনো সঠিক কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।
আজকের চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক ধাপ এগিয়ে আছে। টেষ্টটিউব বেবি পদ্ধতি সম্পর্কে আজকাল কমবেশি সবার জানা আছে। শরীরের ভেতরে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলনকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় ইন ভিভো ফার্টিলাইজেশন, আর কৃত্রিম উপায়ে শরীরের বাইরে, পরীক্ষাগারে উপযুক্ত পরিবেশে এই নিষেক বা মিলন সফল হলেই তার নাম হলো ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন সাধারণ মানুষের কাছে, যা টেষ্টটিউব বেবি পদ্ধতি নামে পরিচিত।
তবে বন্ধ্যত্ব মানেই টেষ্টটিউব বেবি পদ্ধতি নয়। যে কোনো নিঃসন্তান দম্পতির ক্ষেত্রে বন্ধ্যত্বের কারণ শুধু স্বামী বা স্ত্রী প্রজনন অঙ্গের নানা ত্রুটি বা অসুখ নয়, আরো নানা বিষয় আছে যার কারণে বন্ধ্যত্ব হতে পারে। বয়স ৩৫-এর বেশি হলে, অস্বাভাবিক মোটা শরীর হলে, মানসিক কারণে শারীরিক মিলনে লজ্জা বা ভয় বন্ধ্যত্বের কারণ হতে পারে।
বৈবাহিক জীবনে অশান্তি বা দ্বন্দ্বের জন্য শারীরিক সম্পর্ক অনিয়মিত বা সময়মত না হলে গর্ভসঞ্চার নাও হতে পারে। অনেক সময় স্বামীর কিছু রোগের (অওউঝ, সিফিলিস, গনোরিয়া) কারণেও স্ত্রীর বাচ্চা ধারণক্ষমতা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। সেই সঙ্গে স্ত্রীর সেইরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
থাইরয়েড গ্রন্হির অসুখ অনুর্বরতার কারণ হতে পারে। মেয়েদের বন্ধ্যত্বের জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে দায়ী ফ্যালোপিয়ন টিউবে বাধা, পলিসিষ্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম, ডায়াবেটিস ইত্যাদি।
পুরুষের বন্ধ্যত্বের অন্যতম কারণ সিমেনে উপযুক্ত পরিমাণে গতিশীল স্পার্মের অভাব। এ ছাড়াও পরিবেশ দুষণ, কায়িক পরিশ্রমের অভাব, অতিরিক্ত গরমে কাজ করা, স্মাম্পস, টাইফয়েড, আর্থাইটিস, হাইড্রোসিল ইত্যাদি অসুখে শুক্রাণুর উৎপাদন কমে গিয়ে দেখা দেয় বন্ধ্যত্ব। সেই সঙ্গে অতিরিক্তি ধুমপানও বন্ধ্যত্বের কারণ হতে পারে।
আমাদের দেশে বন্ধ্যত্ব নিয়ে আছে হাজার কুসংস্কার। মনে রাখা উচিত বন্ধ্যত্বের চিকিৎসার ক্ষেত্রে বয়স একটা বিরাট ফ্যাক্টর। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বন্ধ্যত্বের চিকিৎসা নিতে হবে। বন্ধ্যত্বের সঠিক কারণটি নানারকম আধুনিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে অনুসন্ধান করে এর সঠিক চিকিৎসা নিলে বন্ধ্যত্ব এড়ানো সম্ভব। তাই প্রতিটি দম্পতির উচিত হতাশায় না ভুগে বন্ধ্যত্বের চিকিৎসা শুরুতেই গ্রহণ করা; কারণ সময় গড়িয়ে গেলে চিকিৎসার জটিলতা বাড়ে।
——————
প্রফেসর ডা. ফিরোজা বেগম
লেখকঃ অধ্যাপক-গাইনি বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
চেম্বারঃ বাংলাদেশ এ্যাসিসটেড কনসেপশন সেন্টার এ্যান্ড উইমেনস হাসপাতাল। রোড নং-৬, বাড়ী নং-৮, ধানমন্ডি ঢাকা।
আমার দেশ, ২৭ মে ২০০৮
Amit Chakraborty
Hi i’m Amit from Kolkata,India.I’m an unmarried person.I would like to know from you whether masterbission is harmful for future sex life or not.Plz.answer me as soon as possible.