‘আজকের আমি। এই আমি হয়ে উঠতে যে মানুষটি অনেক পরিশ্রম, অনেক ভালোবাসা, স্নেহ-মমতা, ছায়া দিয়ে বড় করে তোলেন, তিনি বাবা। যাঁর জন্যই আমার এই পৃথিবী। আর তাই আমাদের সব দিনই তাঁদের জন্য। তবু আমরা বড় হই, ব্যস্ত হয়ে পড়ি কর্মস্থল, লেখাপড়া, নানা কাজের চাপ কিংবা প্রবাসে। অনেক সময় ভুলতে বসি বাবাকে আর তাই বাবার জন্য বিশেষ একটা দিন সত্যিই উপভোগ্য।’ বলছিলেন ফ্যাশন হাউস রঙের ডিজাইনার বিপ্লব সাহা। ‘সেই মানুষটি সারা দিনের কর্মব্যস্ততা শেষে ঘরে ফিরেই কোলে নিয়ে চুমু খান তাঁর প্রিয় সন্তানকে। ভুলে যান তাঁর সারা দিনের ক্লান্তি অথবা সেই কর্মব্যস্ত মানুষটি যখন সকালে উঠে চশমার পুরু লেন্সের ভেতর দিয়ে উঁকি দেন সংবাদপত্রে, চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে তাকিয়ে থাকেন ফুলের টবের ওপরের প্রজাপতির দিকে, অন্তত এই একটা দিনে সব ব্যস্ততাকে ছুটি দিয়ে আমরা বেরিয়ে পড়তে পারি বাবাকে নিয়ে, উপহার দিতে পারি তাঁর প্রিয় অথবা প্রয়োজনের জিনিসটা। এতে বাবা অনেক খুশি হবেন।’ বলেন সাদাকালোর ডিজাইনার তাহসিনা শাহিন। ২০ জুন অর্থাৎ জুন মাসের তৃতীয় রবিবারটি বাবা দিবস। এ উপলক্ষে আপনি আপনার বাবাকে দিতে পারেন তাঁর প্রিয় বা অতি প্রয়োজনীয় একটা কিছু। এতে আপনার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বাবাকে ছুঁয়ে যাবে। কী দেবেন বাবাকে? খুঁজে পাচ্ছেন না? বাবা দিবসে বাবার প্রতি আপনার ভালোবাসা প্রকাশের কিছু ধারণা দিয়েছেন আইডিয়াসের স্বত্বাধিকারী নিপা খালেদ। বাবাকে দিতে পারেন পাটের তৈরি ব্যাগ, পেনহোল্ডার, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, নরম ধরনের স্যান্ডেল, হালকা পারফিউম, পুরো পরিবারের ছবি বাঁধাই করে বা ফ্রেমে ভরে। এখন যেহেতু রোদ-বৃষ্টি, তাই দিতে পারেন ছাতা, রেইন কোট, চশমা। কিনে দিতে পারেন তাঁর প্রয়োজনীয় ডায়াবেটিস অথবা রক্তচাপ মাপার যন্ত্র।বাবার প্রিয় খাবারটি রান্না করে খাওয়াতে পারেন নিজের হাতে। চিকিৎসকও দেখিয়ে আনতে পারেন। ভ্রমণের জন্য তাঁর হাতে দিতে পারেন বাস, ট্রেন বা বিমানের টিকিট। মনে রাখবেন, আপনার হয়ে আপনার উপহারটি বাবাকে মনে করিয়ে দেবে যে আপনি বাবাকে ভুলে যাননি। তাই উপহারটিতে থাকতে পারে বাবাকে নিয়ে লেখা কোনো উক্তি। এ দিকটি মাথায় রেখেই সাদাকালো বাজারে এনেছে তিনটি ভিন্ন মূল্যের তিন ধরনের গিফট প্যাক, যার মধ্যে আছে মগ, কার্ড, কলম, প্যাড, পেপার বক্স ইত্যাদি। ফ্যাশন হাউস রঙ বাজারে এনেছে বাবা দিবসের মগ, গানের সিডি, শার্ট, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, টি-শার্ট ইত্যাদি। এর কোনোটিতে আছে গান বা কবিতার লাইন, কোনোটিতে বাবাকে লেখা বিশেষ কোনো উক্তি। অনেক সময় ভয়ে বা লজ্জায় হয়তো বাবাকে বলা হয়নি, ‘ভালোবাসি তোমাকে বাবা’। প্রবাসজীবনে তাই আজ বড্ড মনে পড়ছে বাবাকে। ফোন করে অথবা ভিডিও কনফারেন্সে জানিয়ে দিন বাবাকে আপনার না-বলা কথাটি। টাকা পাঠিয়ে দিতে পারেন তাঁর খরচের জন্য।
কিনে দিতে পারেন তাঁর প্রিয় রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র অথবা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বই, যার প্রতি পৃষ্ঠাজুড়ে বাবা খুঁজে পাবেন তাঁর আদরের সন্তানকে।
হাসান ইমাম
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ১৫, ২০১০
Leave a Reply