চোখ রাস্তার দিকে। সব দিকে তাড়াহুড়া। কখন লাল আলোর বদলে সবুজ আলো জ্বলবে। কখন যানজট ছাড়বে। এত হট্টগোলের মধ্যেও নজর আটকে যাচ্ছে এক জায়গায়। চিকন লাঠিতে সাজানো সারি সারি বেলি ফুলের মালায়। বছরের এ সময় বেলির আগমন। রাস্তার মোড়ে, ফুলের দোকানে সব জায়গায় উপচে পড়ছে এর সৌন্দর্য। বাতাসের ঝাপটায় মনমাতানো গন্ধ বাড়িয়ে তোলে সাদার স্নিগ্ধতাকে।
বেলি ফুলের জনপ্রিয়তা টের পাওয়া যায় এর বিক্রি হওয়া দেখেই। এ সময় অন্যান্য ফুল থেকে বেলি ফুলের চাহিদাই বেশি। মাথায় লাগানোর জন্যই হোক কিংবা হাতে জড়ানোর জন্য, প্রতিদিন অসংখ্য ক্রেতা কেনে ফুল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মিলিয়া আঁখি। শাহবাগে ফুল কেনার সময়ই তাঁর সঙ্গে দেখা। বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে এ ফুল তাঁর কেনা চাই-ই চাই। ‘বিকেলে বাসায় ফেরার সময় একবার ঢুঁ মারি। তাজা ফুল এলে কিনে নিই। না হলে অপেক্ষা পরের দিনের জন্য’। বললেন তিনি।
একটু এদিক-ওদিক তাকালেই ফুল বিক্রেতাদের দেখতে পাওয়া যায়। রাস্তার মোড়ে থাকা ফুল বিক্রেতাদের হাতে ধরা এ লোভনীয় সৌন্দর্য আকর্ষণ করবেই। গাড়ির ভেতর তাই প্রায় সময়ই দেখা যায় বেলির মালা ঝুলছে। গাড়িচালক রুহুল আমিন এ কারণে প্রায়ই মালিককে আবদার করে থাকেন, ‘স্যার, তাজা বেলি ফুলের মালা, ‘দুইটা কিন্না লন। গাড়িটাতে সাজায় রাখমু।’
জানেন কি, বেলি ফুল স্নায়ুর চাপও কমায়? রহস্যটি জানান রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা। তিনি বলেন, আমার কাছে এ ফুলটি কাজ করে মনের খোরাক হিসেবে। মনের ক্লান্তি কাটাতে এর উজাড় করে দেওয়া সুগন্ধ কাজ করে জাদুর মতো। রাতে ঘুমানোর সময় বিছানার পাশে প্লেটে বেশ কিছু বেলি ফুল রেখেই দেখুন না। অবসাদ কমিয়ে আনবে। পাশাপাশি কমিয়ে আনবে আপনার স্নায়ুচাপ। এটি পরীক্ষিত বলে জানান রাহিমা সুলতানা।
নানা রকম ফুলে বাজার এখন সমৃদ্ধ। একটা নয়, দুটি নয়, অসংখ্য ফুলের রঙে চোখে ধাঁধা লেগে যায়। কিন্তু এমন সাদার মাধুর্য অন্য কোনোটিতে নেই। খোঁপার ওপর একগুচ্ছ বেলি। সবার মন কাড়তে এর তুলনা হয় না। দাওয়াতে স্বাগতম জানানোর প্রতীক হিসেবেও ব্যবহূত হচ্ছে এ ফুল। অন্য কোনো ফুলের ক্ষেত্রে এটি দেখা যায় না। একমাত্র বেলি ফুল দিয়েই এটি করা হয়। যেকোনো অনুষ্ঠানে, বাসায় গুচ্ছ গুচ্ছ বেলি ফুলের মালা এনে রাখি। আগত অতিথিরা সেখান থেকে মালা নিয়ে মাথায় বা হাতে জড়িয়ে নেন। অন্য কোনো ফুল নয়, এ সময় দাওয়াতে বেলি ফুলটাই উপহার হিসেবে নিয়ে যান অনেকে। ফুলের স্নিগ্ধতা যে আদান-প্রদান করবে, অন্য কিছু দিয়ে তা সম্ভব নয়।
সাদা ছোট্ট ফুলকে অসম্ভব ভালোবাসেন ইরিয়া জাহানও। তা প্রকাশ করার চেষ্টাও করেন তিনি ভিন্নভাবে। ‘আমার বাসরঘর সাজানো হয়েছিল শুধু বেলি ফুল দিয়ে। আমাকে অবাক করার জন্যই এ আয়োজন। এত সুন্দর লাগবে কখনো ভাবতে পারিনি। পুরোটাই সার্থক।’ বিবাহিত জীবনের শুরুর কথা তুলে ধরেন এভাবেই তিনি।
সাজার জন্যই হোক কিংবা মাতাল করা গন্ধের কারণেই, বেলি ফুল প্রিয় সবারই। হাজারো আধুনিক সৌন্দর্যের মধ্যে এটি আজও অনন্য।
রয়া মুনতাসীর
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০৮, ২০১০
deepankar
ami ekta jinish bolte chai apnader Bangla lekhar akshargulur binyas emon elomelo keno? ekhan bhalo Bangla software esegechhe. je kono juktakshar sundor lekha jay. ajatha hasanta byabohar korte hoi na. Kolkatay Bangla software royechhe.Khub soja aar common photetics nirvar. tai du-char din abhyas korlei English key board e hath rapto hoye jay.
apnader site content bhalo kintu porte khub dhakka khete hoy.