সকালে ঘুম ভাঙার পর এক কাপ চা না হলে যেন আজকাল আর আমাদের দিনটাই শুরু হয় না। কর্মব্যস্ত দুপুরে কাজের ফাঁকে ঝিম ধরা মাথাটা ঠিকঠাক করতেও চায়ের বিকল্প নেই। আর সন্ধ্যায় বন্ধুদের আড্ডাটাই তো জমে ধোঁয়া ওঠা চা-এ। চা যেন আমাদের সারা দিনের সঙ্গী। আর যে চায়ের কাপে এক চুমুকে ভুলে যাই সারা দিনের ক্লান্তির কথা, সেই চায়ের পাশাপাশি কাপটাও কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। দুধ চা, লেবু চা, আদা চা, মসলা চা—যে চা-ই হোক না কেন, তার জন্য চাই সুন্দর একটি কাপ। সুন্দর কাপ হিসেবে বেছে নিতে পারেন মাটির কাপ-পেয়ালা। সঙ্গে মাটির চায়ের পাত্র, চিনিদানি, দুধের পাত্র। পোড়ামাটির এ কাপ-পেয়ালা আপনার চা পরিবেশনটাই করে তুলবে অনেক বেশি নান্দনিক ও রুচিশীল। মাটির এই চা-সেট পাবেন যাত্রা, আড়ং, আজিজ সুপার মার্কেটে ঘুরতে ঘুরতেই। ঢাকার ধানমন্ডিতে যাত্রার কর্মী শিমুল জানান, মানুষ এখন আবার পুরোনো ঐতিহ্যে ফিরে যাচ্ছে। মাটির সানকিতে ভাত, মাটির ঘটির শীতল পানি কিংবা মাটির কাপে ধোঁয়া তোলা চায়ের স্বাদটাই অন্য রকম। পোড়ামাটির কাপে দুধ চায়ের রংটা যেন একটু বেশিই ভালো লাগে।
মাটির এ কাপ-পেয়ালাটা আবার সাজিয়ে দিতে পারেন বাঁশ কিংবা বেতের ট্রেতে। এতে পরিবেশনটা আরও সুন্দর হয়ে উঠবে। আড়ং ও যাত্রায় পাবেন নান্দনিক এই ট্রেগুলো। মাটির পেয়ালা ছাড়াও আজকাল বাজারে হাতের তৈরি সিরামিকের কাপ-পেয়ালা পাওয়া যাচ্ছে। হাতের তৈরি বলে ডিম্বাকৃতি, গোলাকার, আয়তাকার আকৃতির এ কাপ-পেয়ালাগুলো ভিন্নধর্মী নকশা করা। হাতের তৈরি সিরামিকের দুধের পাত্র, চিনির পাত্র আর চায়ের পাত্রটাও বেশ ভালো লাগবে আপনার।
ক্লে ইমেজের কর্ণধার মো. আকরাম ফারুক জানালেন, চিরাচরিত চায়ের পরিবেশটাকে বদলে দিতে হাতের তৈরি সিরামিকের কাপের জুড়ি নেই। একটু ভিন্ন রূপ দেওয়া হাতের তৈরি এ কাপগুলোতে চা-পানের পর্ব হয়ে উঠবে বেশ আনন্দের। ক্লে ইমেজের হাতের তৈরি চায়ের কাপগুলোয় লাল, নীল, আকাশি, সাদার মধ্যে করা হয়েছে লতাপাতার নানা শৈল্পিক কারুকাজ। বিভিন্ন আকৃতির কাঠের ট্রের সঙ্গে সাজিয়ে করা হয়েছে এক একটি সেট। আপনার পছন্দ ও চাহিদামতো তা থেকে বেছে নিতে পারেন। আবার স্বচ্ছ কাপও বেছে নিতে পারেন। এ ছাড়া নিউমার্কেটে ঘুরতে ঘুরতে চমৎকার সব সাজানো কাপ-পেয়ালা পেয়ে যাবেন, যা আপনার চায়ের টেবিলের এক কোনায় সব সময়ই সাজিয়ে রাখতে পারবেন। চা পরিবেশনের সময়ও হাতের কাছেই থাকবে পরিবেশনের সব কটি উপাদান।
ঐতিহ্য রক্ষা আর নান্দনিকতার এ দৌড়ে কিন্তু পিছিয়ে নেই সিরামিকের শিল্পগুলোও। তারাও তাদের ডিজাইনে নিয়ে এসেছে নানা বৈচিত্র্য। আয়তাকার, গোলাকার, ডিম্বাকৃতি, ত্রিকোণা বিভিন্ন আকৃতির কাপে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বাঁশ, পাতা, ফুল ও জ্যামিতিক মোটিফ। সাদা রং ছাড়াও পাওয়া যাচ্ছে কালো, নীল, সোনালি, রুপালি, লাল রঙের কাপ।
দরদাম: মাটির কাপ-পেয়ালা পাবেন প্রতিটি ৭৫-৮৫ টাকায়, ৬টি একসঙ্গে ৫১০-৫৫০ টাকায়। মাটির চায়ের পাত্র ১৬৫ টাকায়, বাঁশ ও বেতের ট্রে ১০০-৩০০ টাকায়।
হাতের তৈরি সিরামিকের চায়ের কাপ-পেয়ালা প্রতিটি ১২০-১৫০ টাকা, ছয়টি একসঙ্গে ৮৫০-১০৫০ টাকা, চারটি কাপ, চায়ের পাত্র, চিনিপাত্র ও একটি কাঠের ট্রে ১২৮০ টাকা, দুটি কাপ ও কাঠের ট্রে ৪০০-৫০০ টাকা, আলাদা ট্রে ১০০-২০০ টাকা, চিনি ও দুধের পাত্র ১৮০ টাকায় পাওয়া যাবে।
সিরামিকের সোনালি ও রুপালি চায়ের কাপগুলোসহ চা-সেটটি পাবেন বড় আকৃতির ৩৫০০, মাঝারি আকৃতির ৩০০০ ও ছোট আকারের ২০০০ টাকায়। শুধু চায়ের কাপ-পেয়ালা পাবেন ৬০০-১২০০ টাকায়।
কৃতজ্ঞতা: যাত্রা এবং ক্লে ইমেজ
শান্তা তাওহিদা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০৮, ২০১০
Leave a Reply