যেকোনো উৎসবে শাড়ি হয়ে ওঠে মেয়েদের প্রিয় ভূষণ। বেশির ভাগ সময়ই দেখা যায়, দীর্ঘদিন ব্যবহারের পর এই শাড়িগুলো পরার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। আলমারিতে অনেক দিন ধরে জমে থাকা এই শাড়িগুলো দিয়ে গৃহসজ্জায় আনতে পারেন বৈচিত্র্য। ‘অন্দরসজ্জায় এমন অনেকেই পর্দার বিকল্প হিসেবে শাড়ির ব্যবহার করছে। আর কাতান, সিল্ক, টাঙ্গাইল, কোটা, বেনারসি, জামদানি, জর্জেট—এ ধরনের শাড়িগুলো বেশ ভালোভাবেই মানিয়ে যায় অন্দরসজ্জায়।’ জানালেন অন্দরসজ্জা নামের একটি ইন্টেরিয়র ডিজাইন প্রতিষ্ঠানের ডিজাইনার রুমানা আফজাল খান। তিনি আরও জানান, ঘরের আসবাব ও দেয়ালের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে পর্দার শাড়ি নির্বাচন করতে হবে। ঘরের আসবাবগুলো যদি অভিজাত নকশার হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে গাঢ় রঙের কাতান ও বেনারসি শাড়ি ব্যবহার করা যেতে পারে। পর্দার কুচি হিসেবে এসব শাড়ির রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যবহার করতে পারেন জর্জেট শাড়ির ব্যবহার। এ ছাড়া দেশীয় বা হালকা নকশার আসবাবে সাজানো গৃহসজ্জায় টাঙ্গাইল অথবা কোটা শাড়ির ব্যবহার করা হয়। সে ক্ষেত্রে বসার ঘরের দেয়াল যদি হালকা সাদা রঙের হয়ে থাকে, তাহলে জানালায় যেকোনো রঙের সোনালি পাড়ের শাড়ির পর্দা ব্যবহার করতে পারেন। একইভাবে শোবার ঘরেও ব্যবহার করতে পারেন লেবু রঙের কোটা শাড়ি। পর্দাগুলোকে সরিয়ে একদিকে বেঁধে রাখার জন্য পাটের দড়িকে বেণি আকারে বেঁধে তা ব্যবহার করতে পারেন। আর একইভাবে বসার ঘরের জানালার সামনে শাড়ির পাড়ের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে ছোট স্টিলের হারিকেন ও শোপিসও সাজিয়ে রাখতে পারেন। একইভাবে শোবার ঘরের জানালার সামনে শাড়ির রঙের সঙ্গে মিলিয়ে রাখতে পারেন ছোট টবে গাছ। শাড়ি দিয়ে শুধু পর্দাই নয়, বানাতে পারেন ওয়ালম্যাট, বিছানার চাদর, কুশন কাভারসহ অন্যান্য গৃহসজ্জার সামগ্রী। এ বিষয়ে ইন্টেরিয়র ডিজাইনার গুলশান নাসরীন চৌধুরী বলেন, বসার ঘরের সুবিধামতো একদিকে দেয়ালের পুরোটা জুড়েই তৈরি করতে পারেন ওয়ালম্যাট। সে ক্ষেত্রে পুরোনো শাড়ির আঁচল কেটে নিয়ে মার্কিন কাপড়ের ওপর সুঁই-সুতা দিয়ে সেলাই করে বসিয়ে নিন। তারপর বাঁধাই করে নিন। ফ্রেমের চারদিক শাড়ির পাড় দিয়ে মুড়িয়ে দিতে পারেন। একইভাবে বসার ঘরের দেয়ালজুড়ে ওয়ালম্যাট তৈরি করতে ব্রোকেড অথবা জামদানির জমকালো কাজ করা গাঢ় রঙের শাড়ি বেছে নিন। মাপমতো দৈর্ঘ্যে কেটে শাড়িটি বাঁধাই করে বসিয়ে দিন দেয়ালে। এরপর দেয়ালের ওপরে শাড়ির রঙের সঙ্গে মিলিয়ে বসাতে পারেন স্পট লাইট। আর এভাবেই পুরোনো শাড়িগুলো জমিয়ে না রেখে সেগুলো দিয়েই নান্দনিকভাবে সাজাতে পারেন আপনার ঘর।
বিপাশা রায়
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ০৮, ২০১০
Leave a Reply