শীতল হাওয়া গরমে স্বস্তি পেতে এবং প্রতিদিনের কাজকর্ম সচল রাখতে হলে নানা বৈদ্যুতিক যন্ত্রের সাহায্য তো নিতেই হবে। জেনে নিন এসবের খোঁজখবর।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র
মূলত দুই ধরনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র পাওয়া যায়- স্প্লিট ও উইন্ডো। ব্যবহারের জায়গার আকার অনুযায়ী এগুলো আবার বিভিন্ন সাইজের হয়। এগুলো বিক্রি হয় টন হিসেবে।
রকমফের
ওয়ার্লপুল, ট্রান্সটেক, সিমেন্স, জেনারেল, হাইসেন্স, স্যামসাং, ক্যারিয়ার, এলজি, ফুজি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
ওয়ার্লপুল: ওয়ার্লপুলে স্প্লিট শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসি আপনি পাবেন ১ টন, ১.৫ টন ও ২ টনের। ১ টন ওয়ার্লপুল স্প্লিট এসির দাম পড়বে ৪৪ হাজার টাকা। দেড় টন ৭০ হাজার এবং ২ টন হচ্ছে ৭৫ হাজার টাকা। তবে বর্তমানে মূল্য ছাড়ের বিশেষ সুযোগ চলছে। এতে দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় পেতে পারেন। এ ছাড়া বিনা মূল্যে ইনস্টলেশন তো থাকছেই।
ট্রান্সটেক: ট্রান্সটেক কোম্পানির ১ টন, ২ টন ও দেড় টনের এসি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। ১ টনের দাম পড়বে ৪০ হাজার, দেড় টনের দাম ৫৫ হাজার আর ২ টনের দাম ৬৭ হাজার টাকা। বিশেষ মূল্য ছাড়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৩৮ হাজার, ৫১ হাজার ও ৬২ হাজার টাকায়। এ ছাড়া ক্রেতা বিনা মূল্যে ইনস্টলেশন সুবিধা পাচ্ছেন।
সিমেন্স: সিমেন্সের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র পাবেন ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকস লিমিটেডের কেন্দ্রগুলোয়। সিমেন্সের স্প্লিট ধরনের ১ টনের দাম ৪৩ হাজার ৫০০ টাকা। বিনা মূল্যে ইনস্টলেশন থাকছে।
জেনারেল: জেনারেল কোম্পানির দুই ধরনের এসি বাজারজাত করেছে। উইন্ডো আর স্প্লিট। জেনারেলের উইন্ডো এসির দাম রকমভেদে ৩২ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। আর স্প্লিট এসির মূল্য ৪০ হাজার থেকে ৬৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। জেনারেল এসি আপনি পাবেন ১ টন, ১.৫ টন ও ২ টনের। এগুলোর ক্ষেত্রেও পাওয়া যাবে ইনস্টলেশন সুবিধা।
বৈদ্যুতিক পাখা: বাজারে অনেক বিক্রিতা প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক পাখা পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে ন্যাশনাল, যমুনা, সিঙ্গার, র্যাংগ্স, মিতসুবিশি, তানিন, ফিলিপ্স ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
ন্যাশনাল ফ্যান: ন্যাশনালের বিভিন্ন ধরনের মডেলের পাখা রয়েছে। এগুলোর দাম পড়বে এক হাজার ১০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। তবে আপনাকে দামাদামি করে কিনতে হবে। ন্যাশনালের পণ্যের বিভিন্ন মেয়াদে ওয়ারেন্টি রয়েছে।
যমুনা: যমুনা ফ্যানের দাম পড়বে এক হাজার ২০০ থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে।
সিঙ্গার: সিঙ্গার ফ্যানের দাম পড়বে দেড় হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ টাকার মধ্যে। প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই ৪র্৮র্ ও ৫র্৬র্ বাজারে সাধারণত সিলিং ফ্যান, টেবিল ফ্যান ও স্ট্যান্ড ফ্যান পাওয়া যায়। টেবিল ফ্যানের দাম তুলনামূলক কম।
আইপিএস: ঘন ঘন লোডশোডিং আর প্রচণ্ড গরম থেকে রক্ষা পেতে ব্যবহার করা যেতে পারে ইনস্ট্যান্ড পাওয়ার সিস্টেম (আইপিএস)। এর মাধ্যমে টিউব লাইট, ফ্যান, ফ্রিজ, কম্পিউটার, টিভি, ডিভিডি প্লেয়ারসহ বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি চালানো যায়। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ হওয়ায় এতে কোনো ঝামেলা নেই। এ ছাড়া আইপিএস চালাতে কোনো জ্বালানি দরকার পড়ে না। কারণ, এতে রয়েছে চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা। সাধারণত আইপিএসের ব্যাকআপ সময় দুই ঘণ্টা। বাজারে বর্তমানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আইপিএস রয়েছে। ফিলিপস, সনি, স্যামসাং ব্র্যান্ডের আইপিএস উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া রহিমআফরোজ কোম্পানির আইপিএসও বাজারে জনপ্রিয়। বাজারে ২০০, ৫০০, ৬০০ থেকে ১৫০০ ওয়াটের আইপিএস পাওয়া যাবে। দাম পড়বে ১৫ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
কোথায় পাবেন
গরমে শীতলকরণ যন্ত্র এসি পাওয়া যাবে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব শোরুমগুলোয়। রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহরে বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর শোরুম রয়েছে। রাজধানীর বড় বাজার হচ্ছে স্টেডিয়াম মার্কেট। এখানে এসি, ফ্যান ও আইপিএস পাওয়া যাবে। ফ্যান পাবেন স্টেডিয়াম মার্কেটসহ বায়তুল মোকাররম মার্কেট, নিউমার্কেট, বিজয় সরণিসহ আপনার আশপাশের প্রায় সব ইলেকট্রনিকসের দোকানগুলোয়। আইপিএসও পাওয়া যেতে পারে এসব দোকানে। তবে শোরুমগুলো থেকে আইপিএস কেনাটাই নিরাপদ। আইপিএসের শোরুম আছে মতিঝিল, মহাখালী, কলাবাগান, পাটুয়াটুলী, মিরপুর ইত্যাদি এলাকায়।
সাইদ আরমান
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ১৮, ২০১০
Leave a Reply