বাজার ভরা দেশি ফল বৈশাখের শেষ দিক আর জ্যৈষ্ঠের শুরু। প্রখর তাপে পাকতে শুরু করেছে হরেক রকমের দেশি ফল। চারদিকের বাতাসে ফলের ম-ম গন্ধ বলে দেয়, এটাই ফল খাওয়ার আসল সময়। এ সময়টাতে বেশির ভাগ দেশি ফলের দেখা মেলে। আর তাই তো শহরের অলিগলিতে ও ফলের বাজারগুলোয় নানা ধরনের দেশি ফলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ফল-ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় লিচুর ঝুলি নিয়ে বসেছেন এক ফল-বিক্রেতা, বিক্রিও হচ্ছে বেশ। তিনি জানান, নতুন ফলের প্রতি সবারই একটা আগ্রহ থাকে, তাই এখন দেশি ফলের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। এরই মধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে জাম, জামরুল, কতবেল, অরবরই, আনারস, তরমুজ, কাঁচা-পাকা আম, আতা, কাঁঠাল, পেয়ারা, সফেদা প্রভৃতি ফল। ‘এখন যেহেতু দেশি ফলেরই সময়, তাই এখন সব ধরনের ফলই খেতে ভালো লাগে।’ পল্টনের ফলের বাজারে ফল কিনতে কিনতে জানালেন মতিঝিলের বাসিন্দা খোরশেদ আলম। দেশি ফলের পুষ্টিগুণ নিয়ে জানালেন বারডেমের প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা আখতারুন নাহার। তিনি বলেন, ‘দেশি ফলের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি, তাই বেশি বেশি করে দেশি ফল খাওয়া উচিত। ফলের মৌসুম বিধায় এ সময় বিক্রেতারা ফলে ফরমালিন মেশান না, তাই এসব ফল ক্ষতিকর নয়। আর মৌসুমি ফলের দামও থাকে হাতের নাগালে।’ তিনি আরও জানান, ফলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন। এটি একদিকে দেহের খনিজ লবণের চাহিদা পূরণ করে ভিটামিনের অভাব দূর করে, অন্যদিকে রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বাড়ায়। বড়দের পাশাপাশি ছোটদের জন্যও দেশি ফল খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশি ফল খেলে চোখের দৃষ্টি ভালো থাকে; দাঁত, চুল ও ত্বক ভালো থাকে। তবে ছোটদের কাঁঠাল একটু কম খাওয়াই ভালো। কেননা এটি খুব সহজে হজম হয় না।
রাজধানীর পুরানা পল্টন, গুলিস্তান, কারওয়ান বাজার, বায়তুল মোকাররম, নিউমার্কেট, পলাশী, শাহবাগসহ বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন মৌসুমি ফল। এর মধ্যে জামরুল প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, বিভিন্ন জাতের কাঁচা-পাকা আম ১২০ থেকে ২০০ টাকা, আনারস প্রতি হালি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, আতা প্রতি কেজি ১২০ থেকে ২০০ টাকা, তরমুজ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। তবে ফল বাজারের কিছু কিছু জায়গায় কাঁঠাল মিলছে একটু চড়া দামে। একেকটি কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
ফলের দাম-দর বাজারভেদে কিছুটা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। ফল-বিক্রেতারা জানান, বাজারে ফলের সরবরাহ বেড়ে গেলে দামটা আরও কমে যাবে। তবে দাম যা-ই হোক, দেশি ফল খাওয়ার কিন্তু এটাই উপযুক্ত সময়।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ১৮, ২০১০
Leave a Reply