অফিসের কাজে এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলে ছুটতে হয় সানজিদা ইসলামকে। প্রতিবার বড় ব্যাগটি টানাহেঁচড়া করা ঝামেলা। তাই ব্যাগ রেখেই ছুটতে হয় তাঁকে। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের পাশাপাশি মুঠোফোনও থাকে তাঁর ব্যাগে। ফলে প্রায়ই তিনি গুরুত্বপূর্ণ কলগুলো ধরতে পারেন না। আবার ব্যাগে রাখা টাকা-পয়সা নিয়েও চিন্তায় থাকতে হয়। একটি ছোট ব্যাগেই যদি মুঠোফোন, টাকা-পয়সা, পরিচয়পত্র রাখা যেত, তবে তাঁর এ সমস্যা মিটে যেত।
বাজারে এখন এ ধরনের ব্যাগ বেশ দেখা যায়। দুই বা তিনটি পকেটওয়ালা এসব ব্যাগ হাতে বহন করতে পারেন অথবা গলায় ঝুলিয়ে রাখার ব্যবস্থা আছে। এগুলো আকারে বড় ব্যাগের মতো নয়, আবার টাকা-পয়সা, চাবির রিং বা টুকিটাকি প্রসাধনীসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র রাখা যায়।
ফ্যাশন হাউস পিরানের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার হোসনা বানু বলেন, ‘একসময় শুধু মুঠোফোন রাখার জন্য ছোট ব্যাগ তৈরি করতাম। কিন্তু ক্রেতাদের চাহিদা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাগের আকারেও কিছু পরিবর্তন এসেছে। এখন আমরা কয়েকটি পকেটসমৃদ্ধ জিন্স, পাট ও চামড়াজাত ব্যাগ বিক্রি করে থাকি।’ তিনি আরও বলেন, একটি বড় ব্যাগে বিভিন্ন জিনিসপত্র এলেমেলোভাবে ছড়িয়ে থাকে। তাই কিছুটা গুছিয়ে রাখার জন্য এমন ছোট ব্যাগের প্রয়োজন পড়ে। চামড়ার তৈরি ব্যাগগুলোর মধ্যে আভিজাত্য ফুটে উঠলেও এগুলোর দাম একটু বেশি। তার পরও চামড়া ও মোটা কাপড়ের ব্যাগের চাহিদা বেশ।
ফ্যাশন হাউস আড়ংয়ের তৈরি এ ধরনের ব্যাগগুলো বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। কখনো হাতলওয়ালা, কখনো হাতলছাড়া, কখনো আবার ফিতাওয়ালা, যা অনায়াসে গলায় ঝুলিয়ে রাখা যায়। আরও আছে বটুয়া ব্যাগ, যা দেখতে অনেকটা থলের মতো। এতে আলাদা কোনো পকেট নেই। ফিতার মুখ খুলে জিনিসপত্র ঢোকাতে বা বের করতে হয়। এই ব্যাগ সাধারণত হাতের সঙ্গে ঝুলিয়ে ব্যবহার করতে হয়। ছেলেদের ওয়ালেট ধাঁচে তৈরি ব্যাগও আছে। মোটা কাপড়, পাট, চামড়া ছাড়াও শুধু পুঁতি বা কড়ি ব্যবহার করেও ব্যাগ তৈরি করা হয়। তৈরির ধরন ও উপকরণভেদে ব্যাগের দাম বিভিন্ন হয়ে থাকে। পাটের তৈরি ব্যাগের দাম পড়বে স্থানভেদে ২৫ থেকে ৮০ টাকা। সাধারণ কাপড়ের তৈরি ব্যাগের দাম ৫০ থেকে ১০০ টাকা। আর কাপড়ের ওপর সুতার কাজ বা নকশা করা থাকলে আপনাকে একটু বেশি টাকা গুনতে হবে। সে ক্ষেত্রে দাম পড়বে ৮০ থেকে ২৫০ টাকা। আর চামড়ার ব্যাগের দাম স্বাভাবিকভাবেই একটু বেশি—২৫০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে। পুঁতির ব্যাগ পাওয়া যাবে ১৮০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে।
রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট এবং ফ্যাশন হাউসে এসব ব্যাগ পাওয়া যায়। বিশেষ করে আড়ংয়ের বিভিন্ন শো-রুম, পিরান, চাঁদনী চকের দ্বিতীয় তলা, বসুন্ধরা সিটি, আজিজ সুপার মার্কেটে দেখতে পাবেন এসব ব্যাগের বাহারি পসরা।
শারমিন নাহার
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ২৭, ২০১০
Leave a Reply