এ যে শখের দুনিয়া। একেক মানুষের শখ একেক রকম। এমনই এক শখ প্রাণী পোষা। কুকুর, বিড়াল, খরগোশ থেকে শুরু করে পাখিকে পোষ মানিয়ে ফেলেছে মানুষ। এসব পোষা প্রাণী একসময় তার সবচেয়ে প্রিয় জিনিসে পরিণত হয়। শুধু প্রিয় হলেই হবে না, নিতে হবে এর পরিপূর্ণ যত্ন। ছোটবেলা থেকে রিমির কাছের সঙ্গী হলো তাঁর কালো বিড়াল। কীভাবে এর যত্ন নেন, তিনি তা জানান। ‘প্রাণী পোষার ব্যাপারটা নির্ভর করে বাড়ির পরিবেশের ওপর। পরিবেশভেদে যত্নটাও ভিন্ন হবে। খাবারের মান ও পরিমাণের দিকেও লক্ষ রাখতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, খাবার যেন বাসি না হয়। পোষা প্রাণীর প্রায়ই খাদ্যে বিষক্রিয়া ঘটতে দেখা যায়। খাবারের জন্য নির্দিষ্ট বাটি রাখতে হবে। শোবার জায়গাটা সব সময় পরিষ্কার রাখা উচিত। যাতে শরীরের লোম যেখানে-সেখানে না থাকে। এ ছাড়া দুই বেলা বড় দাঁতের চিরুনি দিয়ে শরীর আঁচড়িয়ে দিতে হবে। তাহলে বাড়তি লোম ঝরে যাবে। উকুন থাকলে তাও কমে যাবে। আসল কথা হলো, প্রাণীটি বাড়িতে আনার পর থেকেই তাকে একটু একটু করে প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত। তাহলে বাড়ির পরিবেশের সঙ্গে সহজে মানিয়ে যাবে।’ শুধু বিড়াল নয়, কুকুর, খরগোশ ও গিনিপিগের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। পোষা প্রাণীর যত্ন নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি বাড়ির সবারই জানা উচিত। এ বিষয়ে নানা টিপস দিয়েছেন রাজশাহীর রাজবাড়ী হাটের দুগ্ধ ও গবাদিপশু উন্নয়ন খামারের ভেটেরিনারি সার্জন কাওসার আলী।
পোষা প্রাণীকে বাড়িতে আনার পর পরই তাকে র্যাবিশ ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত। যাতে তার আঁচড়ে কোনো রোগ সংক্রমণ না হয়।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
তার থাকার জায়গায় পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
শীতকালে বাড়তি আলো বা উষ্ণতার ব্যবস্থা করতে হবে।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্য তালিকা তৈরি করুন।
গর্ভকালীন তাকে পুষ্টিকর, ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ খাবার দেওয়া উচিত।
সপ্তাহে এক দিন পানিতে জীবাণুুনাশক ওষুধ মিশিয়ে গোসল করাতে হবে। এ ছাড়া শ্যাম্পুও ব্যবহার করা যেতে পারে।
অসুস্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বাজারদর: কুকুরের মধ্যে থাইল্যান্ড ল্যাপলার্ড পাবেন ১৫০০০-২০০০০ টাকায়। জার্মান শেফার্ড পাবেন ৩০০০০ টাকার মধ্যে। ১২০০০ টাকায় পাবেন স্যাসুসেল। বিড়াল ৫০০-৫০০০ টাকায়। দেশি, মিয়ানমার ও বেলজিয়াম থেকে আনা খরগোশ পাবেন ৩০০-১০০০ টাকার মধ্যে। আর এগুলো পাবেন কাঁটাবন মার্কেটে।
পাখির যত্ন
পাখির যত্নের বিষয়ে কাওসার আলী বলেন, ‘পোষা পাখিকে সব সময় মানুষের সংস্পর্শে রাখা উচিত। তাদের বিষয়ে বিশেষ যত্নবান হতে হবে। পাখির যত্ন নেওয়ার টিপস হলো—
খাঁচা বাঁশের তৈরি হলে ভালো হয়। কেননা স্টিলের পাত থেকে অনেক পাখির ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
খোলা জায়গায় পর্যাপ্ত আলো-বাতাসে রাখতে হবে।
তিন মাস পরপর কৃমিমুক্তকরণ ওষুধ খাওয়াতে হবে।
সুষম খাদ্য খাওয়াতে হবে।
ছয় মাস পরপর ভ্যাকসিন দিতে হবে।
প্রতিদিন পা পরিষ্কার করিয়ে দেওয়া উচিত।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ৩০, ২০১০
Leave a Reply