মগ শুধু চা এবং কফি পানের পাত্র হিসেবেই সীমাবদ্ধ নেই। শৌখিনতা আর শৈল্পিকতার পরিচয়ও দিচ্ছে এখন। পান করার পাত্র বা উপহারের সামগ্রী হিসেবে এটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এখন তো অনেকে শখের বশেই কিনছেন। হ্যাঁ, সংগ্রহের তালিকায় খুঁজলে এখন রংবেরঙের কাপের হদিসও পাওয়া যাবে বৈকি। যত দেখা যায়, ততই কম, শুরু আছে, শেষ নেই। বাজারে মগের মুলুকে ঘুরে বেড়ালে দ্বিধায় অবশ্যই পড়তে হয় কোনটা কিনব, কোনটা নয়। শুধু দেশের তৈরি নয়, বিদেশের হরেক রকম রং ও নকশায় মগ থরে থরে সাজানো রয়েছে দোকানের তাকগুলোতে।
সিরামিক, কাচ, মাটি, কাঠ, বাঁশ অগণিত উপাদানে তৈরি নানা রকম মগ পাওয়া যাচ্ছে এখন।
ক্লে ইমেজের কর্ণধার রেহানা আক্তার বলেন, ‘সিরামিকসের তৈরি সামগ্রীর চল শুরু অনেক আগে থেকেই। এখানকার মগগুলো সম্পূর্ণভাবে হাতে তৈরি করা। বাজারে চলতি নানা রকম মগের সঙ্গে আমাদের তুলনা চলে। এ কারণে নতুনত্বের কথা সব সময় চিন্তা করি। কীভাবে একটু ভিন্নতা আনা যায়।’ তিনি বলেন, ‘কারখানায় তৈরি মগগুলোর ক্ষেত্রে নিচে কম ওপরে বেশি চওড়া এবং ওপরে-নিচে সমান—এই দুই ধরনের আকারই দেখা যায়। কিন্তু হাতে তৈরি করি বলে আমাদের মগ নিচের দিকটা চওড়া এবং ওপরের দিকটি একটু ভেতরে ঢোকানো থাকে। এ ছাড়া ড্রাম শেপ, বাঁশ শেপ তৈরি করে থাকি। তুলি দিয়ে এগুলোর ওপর রং করি।’
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিত্যনতুন নকশায় মগকে নান্দনিক রূপ দিচ্ছে। বিশেষ দিবস উপলক্ষে তৈরি হচ্ছে মগ। মগের গায়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বাঙালি সংস্কৃতির রং ও রূপ। যাত্রার ডিজাইনার কো-অর্ডিনেটর কামাল আহমেদ বলেন, ‘রিকশা পেইন্টিংকে আমরা সুন্দরভাবে মগে উপস্থাপন করছি। আমরা লোকাল উপাদান নিয়ে কাজ করতে উত্সাহী। সেটা থেকেই ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে আসা মগগুলোকে ভিন্নভাবে সাজিয়েছিলাম আমরা।’
পিছিয়ে নেই টেরাকোটার নকশা করা মাটির মগগুলোও। ঐতিহ্যবাহী এ নকশাগুলোকে ব্যবহার উপযোগী মগে তুলে ধরা হচ্ছে।
নির্দিষ্ট কোনো বয়স নয়, বাজারে শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ সবার জন্যই মগ রয়েছে। লাল-নীল মিকি মাউসের চেহারা, গোলাপি নকশায় ফুলের সৌন্দর্য, বল প্রিন্ট, স্ট্রাইপ প্রিন্ট, চ্যাপ্টা, গোল, লম্বা, কত ধরনের নকশায় চান? সব পাবেন।
কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের চাহিদামতো মগের গায়ে পছন্দমতো লেখা লিখে দিয়ে থাকেন। এ প্রসঙ্গে রেহানা আক্তার বলেন, ‘কোনো নাম, দু-এক লাইন কেউ চাইলে আমরা মগের গায়ে লিখে দিই, এর জন্য এক মাস আগে ফরমায়েশ দিলে ভালো।’
মগের নির্দিষ্ট মাপ সম্পর্কে তিনি জানান, ৩০০-৭০০ সিসি মাপই হচ্ছে যথার্থ।
রয়া মুনতাসীর
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ১৬, ২০১০
Leave a Reply