চোখ জোড়াকে মায়াময় করে তুলতে কাজলের ব্যবহার হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। একসময় আগুনের উত্তাপে নিকষ কালো দাগ ফেলা হতো কাজলদানির গায়ে। একবার করে আঙুলের কোনায় তা ছুঁইয়ে আলতো করে লাগানো হতো চোখের কিনারে। এখন অবশ্য এত সময় কারই বা আছে? চিকন কাজল পেনসিলের মাথায় লাগানো খাপ (ক্যাপ) খুলতেই যা দেরি।
কাজল লাগানোর কাহিনি হয়তো বদলে গেছে। কিন্তু বদলায়নি এবং কমেনি এর চাহিদা। যেকোনো বয়সেই এখনো এটি সাজের প্রিয় একটি অনুষঙ্গ।
এখন ফ্যাশনে
রূপবিশেষজ্ঞ নাহিন জানাচ্ছেন কাজলের তিন ধরনের ব্যবহারের কথা:
১. পুরো চোখ কাজল দিয়ে সাজানো, চোখের ওপরের অংশে লাইনার টেনে দিন। নিচের দিকে আগে কাজল দিন। এরপর তার নিচে লাইনার দিয়ে আবারও টেনে দিন। অর্থাত্ চোখের ওপরে ও নিচে লাইনার থাকছে। তার মাঝে কাজল।
২. চোখে কাজল লাগিয়ে হাত দিয়ে ঘষে (স্মাজ) দেওয়া। কাজল থাকবে, কিন্তু আবছাভাবে। স্মোকি লুকের জন্য এভাবে কাজল লাগাতে পারেন।
৩. চোখের দিকে মোটা করে কাজল দেওয়াটাও এখন জনপ্রিয়। চোখের ওপরের অংশে দিতে পারেন নীল, সবুজ রঙের পেনসিলের ছোঁয়া।
৪. চোখের ওপরে আইলাইনার দিতে হবে। নিচে চোখের ভেতরে কাজল দিতে হবে।
তবে নাহিন জানান, ‘দিনের বেলায় কালোর বদলে অন্য রঙের কাজল ব্যবহারই ভালো। দেখতে সুন্দর লাগে, এ ক্ষেত্রে বাদামি রং বেশি ভালো লাগে।
যে চোখে যে সাজ
ছোট চোখের ক্ষেত্রে নাকের দুই পাশে শুরুতে একটুই জায়গা ছেড়ে দিয়ে কাজল লাগান। চোখের বাইরের দিকে কাজলের রেখা ওপরের দিকে তুলে ছেড়ে দিন। চোখ দেখতে বড় লাগবে। অন্যদিকে চোখ বড় যাদের টানা করে লাগিয়ে নিলে বেশ লাগবে।
কাজল ছড়িয়ে গেলে
কাজল দিলেই একটু পর ছড়িয়ে যায়—এ অভিযোগ অনেকের। রইল কিছু টিপস।
ফাউন্ডেশনের বেইসটি মুখের সঙ্গে চোখের নিচেও লগিয়ে নিন।
একটু পাউডার চোখের নিচের অংশটায় ছড়িয়ে দিন। এবার কাজল লাগান।
কাজল লাগিয়ে নিজের হাতে একটু ঘষে দিতে পারেন। তাহলে আর ছড়িয়ে পড়বে না।
নাহিন জানান, যাঁদের চোখের ওপর কাজল ঠিকমতো বসে না তাঁরাও একইভাবে লাগাতে পারেন। এ ক্ষেত্রে সব সময় ভালো ব্র্যান্ডের কাজল ব্যবহার করা উচিত।
কাজলের জ্বলুনি
হঠাত্ কোনো প্রতিষ্ঠানের কাজল নতুনভাবে ব্যবহার করলে কিছুটা সমস্যা দেখা যায়— চুলকানি বা র্যাশ জ্বলুনি হতে পারে। তাই মেকআপ রিমুভার দিয়ে কাজল তুলে ফেলতে হবে। এরপর ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিন র্যাশের সমস্যাটা অনেকাংশে কমে যাবে। র্যাশ না কমলে ঠান্ডা পানির সঙ্গে একটু গোলাপজল মিশিয়ে চোখে ঝাপটা দিন।
রয়া মুনতাসীর
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ০৯, ২০১০
Leave a Reply