‘সুরের ফুর্তির সঙ্গে রসনার তৃপ্তি’ স্লোগান নিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি চালু হয়েছে মিউজিক ক্যাফে। ঢাকার পান্থপথে বসুন্ধরা সিটির লেভেল ৮-এ এই ক্যাফের দরজা পেরোলেই খোলা চত্বর। পুরোটা জুড়েই টেবিল-চেয়ার বিছানো। দেয়াল থেকে চুইয়ে আসা আলোতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে চারপাশ। বেশ সাদাসিধে একটা আভা ছড়ানো চারদিক। ক্যাফের একধারে টানা স্বচ্ছ কাচ। সূর্যের আলো ঠিকরে আসে ভেতরে। ক্যাফের একধারে আলো-আঁধারির মঞ্চ। আধুনিক বাদ্যযন্ত্র পুরোটা মঞ্চজুড়ে। শক্তিশালী সাউন্ড সিস্টেম থেকে ভেসে আসে বাঁশির সুর। আস্তে-ধীরে ভরে ওঠে ক্যাফে। আড্ডা চলে টেবিলে টেবিলে। মিউজিক ক্যাফের একজন স্বত্বাধিকারী সংগীতশিল্পী হাসান আবিদুর রেজা বলেন, ‘আমরা সমমনা কয়েকজন মিলে এই মিউজিক ক্যাফেটা দাঁড় করিয়েছি। সত্যি কথা বলতে কি, এটা এখন আর কয়েকজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটা এখন বিশাল পরিবার। সবাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। অনেক দিন ধরে এ ধরনের একটি মিউজিক ক্যাফের স্বপ্ন ছিল আমাদের। আজ পূর্ণতা পেল।’
ক্যাফেতে খেতে আসা মানুষকে আনন্দ দিতে মিউজিক ক্যাফের আয়োজনটা একটু ভিন্নধর্মী, এখানে দুপুর ১২টা থেকে দুইটা পর্যন্ত একজন বাদক থাকবেন। তিনি খেতে আসা মানুষদের গান বাজিয়ে শোনাবেন। বেলা দুইটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত প্রজেক্টরে দেখানো হবে কনসার্ট। ছয়টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে সরাসরি গানের অনুষ্ঠান। সপ্তাহের ছয় দিন ছয়টি দল এখানে গান পরিবেশন করবে। সেই সঙ্গে বিশেষ দিন উপলক্ষে থাকবে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শরিক হতে আসা সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী বলেন, ‘অনেক জগদ্বিখ্যাত সংগীতায়োজক, শিল্পী আছেন, যাঁরা মিউজিক ক্যাফের এমন পরিবেশ থেকে উঠে এসেছিলেন। আমরা মাঝেমধ্যে এখানে এসে গাইব আর গাইতে হলে তো শুনতেও হয়। আমরা ভালো একটা পরিবেশে গান শুনতে পারব—এটা ভেবেই ভালো লাগছে।’ আরও এসেছিলেন সৈয়দ আবদুল হাদী, ফাহমিদা নবী, রিজিয়া পারভীনসহ সংগীতজগতের অনেকেই।
মিউজিক ক্যাফে পরিবারের কেকা ফেরদৌসী বলেন, ‘এখানে আছে পরোটা, নান, কাবাব, চিংড়ি ফ্রাই, থাই খাবার ইত্যাদি। ওক-এর খাবারও এখানে পাওয়া যাবে। ওক একধরনের বিশেষ কড়াই, যেখানে চটজলদি রান্না করা হয়। আরও আছে বিশেষ জুস, নানা রকম কফি তো থাকছেই। দুপুর গড়িয়ে যেতে থাকে। টেবিলে টেবিলে জমে ওঠে আড্ডা। সংগীত আর রসনাবিলাসে ভালোবাসা দিবসটা এক সময় দ্রুত ফুরিয়ে যায়।
সিদ্ধার্থ মজুমদার
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০১০
Leave a Reply