আমি এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী। আগে দুইজন ছেলে আমায় প্রেম নিবেদন করে। ভিন্ন ভিন্ন সময়ে আমি তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলি। পরবর্তী সময়ে তাদের সার্বিক অবস্থা জানার পর আমি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। এখন আমি অন্য একটি ছেলেকে ভালোবাসি। অতীতের জন্য সে আমাকে বিশ্বাস করে না। সে মনে করে, কোনোদিন আমি তাকেও ভুলে যাব। অথচ এই প্রথম আমি মন থেকে কাউকে ভালোবেসেছি। আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য তাকে যারপরনাই এ রকমভাবে অনুরোধ করেছি। সেও আমার সঙ্গে কথা বলতে চায়, কিন্তু আমাকে বিশ্বাস করতে পারে না। সে খুবই ধর্মপরায়ণ ও ভদ্র। আমিও ধর্মভীরু। তার কথা অনুযায়ী, এখন আমি অনেক কাজ করি, যা আগে করতাম না। সে আমার সঙ্গে এখন যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। তার সঙ্গে কথা না বললে আমার খুব খারাপ লাগে এবং পড়ায় মন বসে না। আমি এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছি। ঠিকভাবে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া ও তাকে বিশ্বাস করানোর জন্য আমি কী করতে পারি?
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক
বরিশাল।
তুমি তো নিশ্চিত, ওই ছেলেকেই ভালোবাসো। আমি মনে করি, তোমার ভালোবাসা প্রমাণ করার জন্য বা তুমি বিশ্বাসঘাতকতা করবে না—এটা প্রমাণের জন্য আলাদা করে কিছু করার দরকার আছে। যদি তোমার ভালোবাসায় তুমি ঠিক থাকো, ওই ছেলে সেটা ঠিকই বুঝতে পারবে।
দুই বছর হলো আমাদের বিয়ে হয়েছে। চাকরির ক্ষেত্রে দুজনের অবস্থানই বেশ ভালো। আপাতদৃষ্টিতে আমাদের সুখী দম্পতি মনে হয়। আমার স্বামী আমাকে ভালোবাসে, আমিও ওকে খুব ভালোবাসি। সমস্যা হচ্ছে, আমি ওর কাছ থেকে যে ধরনের ব্যবহার প্রত্যাশা করি, সেরকম পাই না। ও গ্রাম্য ভাষায় কথা বলে, যা সে বিবাহের আগে বলত না। ওর আচরণও আমার মনের মতো না। এতে আমার মনে একটা অতৃপ্তি থেকেই যাচ্ছে। আমি ঢাকা শহরে বেড়ে ওঠা শিক্ষিত মেয়ে। আর ও মফস্বলে বড় হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। কিন্তু ওর মনমানসিকতা আমার সঙ্গে খাপ খায় না। যদিও ওর মন খুব ভালো। সহজ-সরল, সত্ ও ভালো মানুষের সব গুণাবলিই ওর মধ্যে আছে। কিন্তু আমি যেন ঠিক পুরোপুরি সুখী হতে পারছি না। এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো সন্তান হয়নি। দুই বছরের বিবাহিত জীবনে ও তিন বার আমার গায়ে হাত তুলেছে। আর তা খুব সামান্য কারণে। তারপরও ওকে আমি অনেক ভালোবাসি। কীভাবে ওকে আমার মতো করে পাব? বিবাহিত জীবনটা কীভাবে সত্যিকারের সুখের হয়ে উঠবে? ও আমাকে নিয়ে কোথাও বেড়াতে যেতে চায় না। আমি নিশ্চিত, ও আমাকে অনেক ভালোবাসে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক
ঢাকা।
অনেকে আঞ্চলিক ভাষা পরিহার করতে পারে না, এটা কোনো বড় বিষয় নয়। বিষয়টা হচ্ছে, আপনার সেটা ভালো লাগছে না। আরেকটি বিষয়, যেটা আমার কাছে মারাত্মক মনে হচ্ছে—গায়ে হাত তোলা। যে জিনিসটা আপনাদের সম্পর্ককে কুরে কুরে নষ্ট করবে, তা হচ্ছে—আপনাদের দুজনের ভালো লাগার জায়গা এখন পর্যন্ত খুঁজে না পাওয়া। অল্প বয়সের দম্পতিরা বাইরে যাবে, ছোটখাটো বিষয়ে আনন্দ পাবে—এটাই স্বাভাবিক। আপনি মেয়ে বলে যে আপনি এসব বিষয়ে প্রথম প্রস্তাবটা দিতে পারবেন না, তা নয়। আপনার দিক থেকে চেষ্টা থাকা দরকার। তবে প্রথমে দৈহিক নির্যাতন বন্ধ করানো খুব জরুরি।
এমন অনেক সমস্যা আছে যা কাউকে বলা যায় না। এ রকম প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবেন সারা যাকের। ১৫ দিন অন্তর সুবন্ধু সমীপেষু কলামে চিঠি লিখুন সাদা কাগজের এক পিঠে সংক্ষেপে, ঠিকানাসহ। চিঠি পাঠানোর ঠিকানা :
সুবন্ধু সমীপেষু, নকশা, প্রথম আলো
সিএ ভবন, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ০২, ২০১০
Leave a Reply