শীতে পোশাক-পরিচ্ছদের পাশাপাশি গৃহসজ্জাতেও এসেছে খানিকটা পরিবর্তন। বাড়ির মেঝের ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে ধানমন্ডির বাসিন্দা ফারহানা আলম এসেছেন রাজধানীর অন্যতম কার্পেটের মার্কেট এলিফ্যান্ট রোডে। তিনি বলেন, শীতকালে কার্পেট বেশ আরামদায়ক। এ ছাড়া গৃহসজ্জায় একটি ভিন্নমাত্রা এনে দেয় কার্পেট। আর তাই কার্পেট কিনতে আসা।
ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের কন্টিনেন্টাল কার্পেট লিমিটেডের ম্যানেজার মোহাম্মদ শহীদুর বলেন, ‘শীত মৌসুমে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে অনেকেই কার্পেট বা ম্যাট কিনে থাকেন। বাজারে সাধারণত দুই ধরনের কার্পেট পাওয়া যায়। একটি হলো ‘পিস কার্পেট’, অপরটি ‘ওয়াল টু ওয়াল’ কার্পেট। বিভিন্ন আকারের পিস কার্পেটের দামও বিভিন্ন। বাজার ঘুরে দেখা গেল, চার থেকে পাঁচ ফুট আকারের পিস কার্পেটের দাম এক হাজার ২০০ টাকা। এ ছাড়া পাঁচ থেকে সাত ফুটের পিস কার্পেট দুই হাজার ২০০ এবং ছয় থেকে নয় ফুটের কার্পেট তিন হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। আর ‘ওয়াল টু ওয়াল’ কার্পেট বিভিন্ন ডিজাইন এবং রঙের ওপর নির্ভর করে প্রতি বর্গফুট ২২ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হয়। এ ছাড়া পাটের তৈরি দেশি ম্যাটগুলো প্রতি বর্গফুট আট থেকে ১০ টাকায় পাওয়া যাবে।
গৃহসজ্জা ছাড়াও কার্পেটের আরও নানা ব্যবহার সম্পর্কে রেডিয়েন্ট ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনের ইনটেরিয়র ডিজাইনার গুলশান নাসরীন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশের বাড়িগুলোর মেঝেতে সাধারণত মোজাইক অথবা অক্সাইড রং ব্যবহার করা হয়ে থাকে, যা বেশ ঠান্ডা। শীতকালে এই ঠান্ডাটাই আরও বেড়ে যায়। ফলে প্রয়োজন পড়ে ম্যাট বা কার্পেটের। তবে শুধু ঠান্ডা থেকে রেহাই পেতেই নয়, সৌন্দর্যের বিষয়টি মাথায় রেখে বাড়ি বা অফিসে কার্পেট ব্যবহার করা হয়। আর বাচ্চারা যেহেতু ঠান্ডায় বেশি আক্রান্ত হয়, সেহেতু তাদের ঘরে কার্পেট ব্যবহার করা যেতে পারে। বিশেষ করে বাহারি রঙের কার্পেটগুলো শিশুরা খুব পছন্দ করে। তবে একটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে তা হলো, মাঝেমধ্যেই কার্পেট পরিষ্কার করতে হবে, যেন ধুলোবালি জমে না যায়।’ তিনি বলেন, শোয়ার ঘরে বিছানার চাদর ও পর্দার রঙের সঙ্গে মিল রেখে কার্পেট ব্যবহার করা যেতে পারে। আর খাবার ঘরে কিছুটা কালচে রঙের কার্পেট ব্যবহার করা ভালো।
গৃহসজ্জায় কার্পেটের পাশাপাশি নকশিকাঁথা বা শতরঞ্জি ব্যবহার করা যেতে পারে বলে মনে করেন ক্রিয়েটো ইনটেরিয়র ডিজাইনের স্বত্বাধিকারী ডিজাইনার রশিদ খান। এতে খানিকটা দেশিভাব আসবে গৃহসজ্জায়। তিনি বলেন, প্রথমে আঠা দিয়ে মেঝের সঙ্গে ম্যাট লাগিয়ে তার ওপর কার্পেট ব্যবহার করা উচিত। শীতকালে সাধারণত একটু গাঢ় যেমন—লাল, কমলা বা বাদামি রঙের কার্পেট ব্যবহার করা হয়। অনেকে আবার শীতের শুরুতে পুরোনো কার্পেট রং করিয়ে থাকেন। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পুরোনো কার্পেট রং করা হয়। কোন ধরনের রং ব্যবহার করা হবে, তার ওপর নির্ভর করে প্রতি বর্গফুট ১০ থেকে ১২ টাকা খরচ হবে।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ২৬, ২০১০
Leave a Reply