ঠোঁটের সাজ হওয়া চাই গায়ের রং ও মুখের আকৃতি অনুযায়ী শীত মানে যেমন ধূসর রংহীন রুক্ষ প্রকৃতি, তেমনি শীতের সাজ মানে বর্ণিলতা। সেই সাজের ছোঁয়া লাগে স্নিগ্ধ ঠোঁটের মিষ্টি হাসিতেও। কিন্তু ঠোঁট যদি হয় ফাটা আর সাজ যদি না হয় সঠিক, তবে তো সবই মাটি।
ঠোঁটের নানাবিধ সাজ ও যত্ন সম্পর্কে বলেছেন রূপবিশেষজ্ঞ নাহিন।
শীতে ঠোঁটের সাজ
নাহিন বলেন, শীতকালে ঠোঁট শুকনো থাকে বলে ম্যাট লিপস্টিক কম ব্যবহার করে লিকুইড ও গ্লস লিপস্টিক ব্যবহার করা উচিত। যাঁরা সবস ময় ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করে অভ্যস্ত, তাঁরা ম্যাট লিপস্টিকের ওপর হালকা গ্লস লাগাতে পারেন।
ঠোঁট ভারী বা মোটা হলে এ নিয়ে চিন্তিত থাকেন অনেকে। নাহিন বলেন, ঠোঁট মোটা হলে লিপলাইনার দিয়ে চিকন করে আগে এঁকে নেবেন। তারপর ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করে এর ওপর হালকা গ্লস দিতে পারেন। গ্লস বেশি লাগালে ঠোঁট বেশি ফোলা দেখায়। চিকন বা পাতলা ঠোঁটের অধিকারীরা ঠোঁটকে একটু মোটা ধাঁচে এঁকে নিয়ে গ্লস লিপস্টিক লাগিয়ে নিতে পারেন। তিনি আরও বলেন, লম্বাটে ধরনের মুখ যাঁদের, তাঁরা ঠোঁটকে গোল আকৃতির করে এঁকে নেবেন এবং ভারী মুখ যাঁদের, তাঁরা ভি-আকৃতির করে এঁকে নিতে পারেন।
জমকালো পার্টিতে ঠোঁট সাজাতে গায়ের রঙের সঙ্গে মানিয়ে যায়, এমন শেডের লিপস্টিক নির্বাচন করা উচিত মনে করেন রূপবিশেষজ্ঞ নাহিন। গায়ের রং কালো বা শ্যামলা ধরনের হলে পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে হালকা শেডের লিপস্টিক নির্বাচন করতে পারেন। যেমন বাদামি, চকলেট, সোনালি, গোলাপির নানা শেড। গায়ের রং উজ্জ্বল হলে হালকা শেডের পাশাপাশি গাঢ় শেডগুলোও তাঁরা ব্যবহার করতে পারেন। যেমন মেরুন, লাল, বার্গেন্ডি আবার গোলাপি, সোনালির নানা রকম শেড।
নাহিন জানান, পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে ঠোঁট সাজাতে হয়। অনেক রঙের সঙ্গেই গোলাপির হালকা ও গাঢ় শেডগুলো মানিয়ে যায়। নীল, সাদা, কালো, হলুদ, সবুজ, চকলেট, বাদামি এসব রঙের পোশাকের সঙ্গে অনায়াসে গোলাপির শেডগুলো ব্যবহার করতে পারেন। আবার লাল পোশাকে মেরুন, লাল, সোনালি শেড এবং সবুজ ধরনের পোশাকে লাল, মেরুন শেড মানিয়ে যায়।
নাহিন বলেন, রাতের পার্টিতে গাঢ় শেড আর দিনের অনুষ্ঠানে হালকা শেড ব্যবহার করা উচিত। চোখ ও মুখের মেকআপে সোনালি রং প্রাধান্য পেলে ঠোঁটে সোনালি লিপগ্লস লাগাতে পারেন। তরুণীরা যাঁরা প্রতিদিন বাইরে পড়াশোনার কাজে যান, তাঁরা হালকা গ্লস আর কর্মজীবীরা লাইনার দিয়ে এঁকে গ্লস ব্যবহার করতে পারেন বলে জানান নাহিন। তিনি বলেন, আগের লাল, কমলা, মেরুন, ম্যাজেন্টা রঙের চলন আবার এসেছে। লিপস্টিক হিসেবে গ্লস খুব বেশি জনপ্রিয় এখন।
শীতে ঠোঁটের যত্ন
ঠোঁট ফাটা থেকে বাঁচতে এবং ঠোঁট সুরক্ষিত রাখতে প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে গ্লিসারিন ও ভ্যাসলিন একসঙ্গে মিশিয়ে ঠোঁটে লাগাবেন।
শীতকালে ঠোঁটে জমে থাকা মরা কোষ পাতলা চামড়ার স্তর পড়ে। ভেজা অবস্থায় বা গোসলের সময় তা পাতলা কাপড় দিয়ে ঘষে তুলে ফেলবেন। এতে ঠোঁটের গোলাপি আভা ফুটে উঠবে।
সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন দুধের সর ও মধু মিশিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ঠোঁটে রেখে ধুয়ে ফেলবেন। এতে শীতের রুক্ষতা থেকে আপনার ঠোঁট সুরক্ষিত থাকবে।
লেবু খাওয়ার পর খোসায় লবণ লাগিয়ে ঠোঁটে ঘষলে ঠোঁটের কালো দাগ দূর হবে।
মনে রাখুন
সব সময় ভালো ব্র্যান্ডের গ্লস ও লিপস্টিক ব্যবহার করবেন এবং একটি লিপস্টিক এক বছরের বেশি সময় ব্যবহার করবেন না। বারবার জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজাবেন না, এতে ঠোঁটে রুক্ষভাব হয়। অনেকের ঠোঁটে বেশিক্ষণ লিপস্টিক থাকে না। এ ক্ষেত্রে রূপবিশেষজ্ঞ নাহিন বলেন, মুখে লাগানোর ফাউন্ডেশন ঠোঁটে লাগিয়ে লিপলাইনার দিয়ে এঁকে নেবেন। তারপর একটি স্তর লিপস্টিক লাগিয়ে টিস্যু পেপার দিয়ে চেপে এর ওপর পাউডার দিন। পরে টিস্যু দিয়ে চেপে লিপস্টিক লাগিয়ে নিন। এতে দীর্ঘক্ষণ ঠোঁটে লিপস্টিক থাকবে। অবশ্যই লিপস্টিক ব্রাশ দিয়ে দেবেন তাহলে ঠোঁটে ভালোভাবে মিশবে।
ফারহানা জামান
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ২৬, ২০১০
Leave a Reply