সারা দিন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে স্টেশনে ফিরে তথ্যমালার সঙ্গে মেধার মিলমিশ দিয়ে আর কণ্ঠের জাদুকরি ছোঁয়ায় শ্রুতিমধুর সংবাদ উপস্থাপন করেন বেতারের সংবাদকর্মীরা। সীমা ভৌমিক তেমনি একজন বেতার সংবাদকর্মী। রেডিও এবিসি-এফএম ৮৯.২-এর নিজস্ব প্রতিবেদক তিনি। কাজের একেকটা দিন কেমন কাটে তাই জানালেন সীমা ভৌমিক
স্টেশন থেকে কাজ শুরু
আগের দিন রাতেই অফিস থেকে অ্যাসাইনমেন্ট ঠিক করা থাকে। অর্থাত্ কোন খবরটা আমাকে সংগ্রহ করতে হবে।নির্দিষ্ট সময়ে অ্যাসাইনমেন্টে গেলেও অফিসে আসতে হয় সকালে। অফিস শুরুর আধা ঘণ্টা আগেই অফিসে আসি। আমার সব সময়ের সঙ্গী রেকর্ডার ও মাইক্রোফোন ঠিকঠাক আছে কি না দেখে নিই। সংবাদ সংগ্রহ করতে বেতার কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যাই সংবাদের খোঁজে।
তথ্য সংগ্রহের কাজ
অনুষ্ঠান বা ঘটনাস্থলে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে হয়। আমার কাছে থাকা রেকর্ডারে কথা ধারণ করি। কোনো কোনো সময় ঘটনা সম্পর্কে বাড়তি তথ্য জানতে সাক্ষাত্কার নিতে হয়। সে সময় মাইক্রোফোন হাতে দাঁড়াতে হয় তথ্য প্রদানকারীর সামনে। এ ছাড়া তথ্য তো লিখে নিতেই হয়। আমি মূলত শেয়ারবাজার নিয়ে কাজ করি। শেয়ারবাজার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে অন্য কোনো অ্যাসাইনমেন্ট থাকলে সেখানে চলে যাই। সব সময় একটা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হয়।
এরপর স্টুডিওতে
অনুষ্ঠান শেষ করে বেতার কেন্দ্রে এসেই তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগে যোগাযোগ করি। অনেক সময় আমি নিজেই ধারণ করা কথাবার্তা কম্পিউটারে স্থানান্তর করি। সংবাদ পরিকল্পনা করি। আমার প্রযোজক বা প্রধান প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলি। সবার পরিকল্পনার সমন্বয়ে খবরটাকে সাজানো হয়।
যে যে ক্লিপ থেকে ব্যাকগ্রাউন্ড বা কণ্ঠ সংবাদে প্রচারের জন্য নির্বাচন করি সেই জায়গা বা ক্লিপগুলো বিশেষভাবে চিহ্নিত করে দিই। এতে কণ্ঠ দেওয়ার সময় সুবিধা হয়। এরপর রেকর্ডে চলে যাই। অধিকাংশ খবরই এক বা দেড় মিনিট প্রচারে যায়। বিশেষ কোনো অ্যাসাইনমেন্ট হলে অফিসের নির্দেশনা অনুযায়ী সংবাদ সাজাই। এ ক্ষেত্রে সময়-ব্যবস্থাপনার পরিপূর্ণ ব্যবহার করে সর্বোচ্চ তথ্য প্রচারকে গুরুত্ব দিই।
শেষ বেলায় কাজ
আমাদের শেষ কাজ বলে কিছু নেই। যখন যেখানে সংবাদ তখন সেখানেই ছুটতে হয়। আমি আমার কাজটাকে খুব উপভোগ করি। এ কাজে আত্মতৃপ্তির অনেক জায়গা আছে। অফিসের কাজ শেষ করে বাড়ি যাই; যার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। তবে তার আগেই পরের দিনের অ্যাসাইনমেন্ট কী তা জেনে নিই।
গ্রন্থণা: রাশেদ শাওন
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ১৯, ২০০৯
Leave a Reply