তারুণ্য মানেই বাঁধন হারা বন্ধুত্ব। নিজের ভেতরে নিজেকে খুঁজে পাবার চেষ্টা। বন্ধুত্বের অনাবিল দাবিতে উচ্ছল এই সময়ে গ্রুপ হয়ে উঠে তারুণ্যের প্রাণের স্পন্দন। এই গ্রুপে যেমন থাকে হাসি-আনন্দ তেমনি তৈরি হয় নানা ভুল বোঝাবুঝি। বন্ধুত্বের সেই দাবিতে যেন কোন অপছায়া বিস্তার না করে তার জন্য প্রয়োজন কিছু পদক্ষেপের। তাই নিয়ে এই আলোচনা
বন্ধু মানে কি ? দুটি দেহের মাঝে এক অভিন্ন হৃদয় ? নাকি অনেক দেহের মাঝে এক অভিন্ন হৃদয় ?
বন্ধুত্বের শুরু স্কুল জীবন থেকে। তারপর কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বন্ধুত্ব শব্দটি সবচেয়ে জনপ্রিয় কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরতদের মাঝে। কারণ তখন তাদের সবার বয়স আঠারো, উনিশ, বিশের মধ্যে থাকে। আর এ বন্ধুত্বের সূত্র ধরে তৈরি হয় গ্রুপ। প্রথম প্রথম দেখা যায় গ্রুপের সদস্য সংখ্যা অনেক। তারপর কয়েক মাসের মধ্যে চিত্রটি পাল্টে যায়। কারণ গ্রুপের মধ্যে দেখা যায় যে, আপনি ‘স’ কে সবার চাইতে বেশি পছন্দ করেন এবং ‘স’ ও আপনাকে অন্য সবার চাইতে বেশি পছন্দ করে। কিংবা গ্রুপের মধ্যে সবার সাথে আপনার বনিবনা হচ্ছে না ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রথম যে গ্রুপটা হয় সেটা আর দেখা যায় না। অবশ্য আরো বড় একটা কারণ আছে গ্রুপ ভাঙার পেছনে সেটা হলো, এ গ্রুপের মধ্যে চলে বিভিন্ন ধরনের পলিটিক্স। আর এ পলিটিক্স যে হাত পাকাতে পারে সেই শেষ পর্যন্ত টিকে যায়। আর যে পারে না সে গ্রুপ থেকে ছিটকে পড়ে।
আপনি যদি গ্রুপে টিকে থাকতে চান তাহলে আপনাকে যেটা করতে হবে সেটা হলো-
ক্লাস নেই হাতে প্রচুর সময়, তাহলে একটু বেড়িয়ে আসা যাক। বেড়াতে গিয়ে মারামারি করে আসলেন। এতে করে আপনার বন্ধুরা আপনাকে অন্য চোখে দেখতে পারে। এ ব্যাপারগুলো এড়িয়ে চলুন।
আপনাকে সবক্ষেত্রে পারদর্শী হতে হবে। যেমন ক্লাশ-নোট, পরীক্ষার নোট, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ ইত্যাদি। আপনার উপস্থিতি সকল ক্ষেত্রেই যেন গুরুত্বপূর্ণ হয়।
গ্রুপের মধ্যে যখন রাজনীতি চলে তখন আপনাকে কেউ যদি না ডাকে তাহলে আপনি সেই ফালতু রাজনীতিতে নিজেকে জড়াবেন না।
গ্রুপ ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে শেষে দেখা যায় গ্রুপে আছে দু’জন মানুষ। আপনি আর আপনার বন্ধু বা বান্ধবী এবং শেষ পর্যন্ত যা ঘটার তাই ঘটে যায় আপনাদের মাঝে। অর্থাৎ প্রেম। চেষ্টা করবেন এরকম সম্পর্ক থেকে দূরে থাকতে।
যদি প্রেম হয়েই যায় তাহলে বন্ধুদের জানিয়ে দিন। প্রেম আর বন্ধুত্বের মাঝে যে বিশাল ভারসাম্য আছে তা আপনাকে বজায় রাখতে হবে।
গ্রুপে ছেলে এবং মেয়ের ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করুন। এবং সকল বন্ধুদের অনুরোধ করুন বন্ধুত্বের সম্পর্কের মধ্যে ভালোবাসা বা প্রেমের সম্পর্ক যেন সৃষ্টি না হয়।
এরকম আরও ছোট ছোট অনেক ব্যাপার আছে যা গ্রুপের মধ্যে থাকলে আপনি এমনিই শিখে যাবেন।
ফারজানা বখতিয়ার (তমা)
সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক, ডিসেম্বর ১৯, ২০০৯
Leave a Reply