তারুণ্যের ধর্মই হচ্ছে নিজেকে নতুনত্বের মাঝে খুঁজে ফেরা। যারা নিজেদের শাণিত করতে চান কর্মময় দীপ্তিতে অধ্যায়নের পাশাপাশি তাদের জন্য খন্ডকালীন পেশা নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে। খুঁজে পেতে পারেন জীবনের সাফল্যের মানে। পাশাপাশি সঞ্চয় করা যেতে পারে আগামীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা। খন্ডকালীন পেশার সেই ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার
কথা জানিয়েছেন এস এন ইসলাম
খন্ডকালীন পেশা প্রথাটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে ইউরোপ, আমেরিকায় প্রচলিত হলেও এশিয়ান কান্ট্রিগুলোতে উন্নত কয়েকটি দেশ ব্যতীত তেমন একটা প্রচলিত নয়। বিদেশে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ভ্যাকেশনে এবং অনেকেই প্রায় নিয়মিত পার্টটাইম জব করে। এদের বেশির ভাগই এশিয়ান, বিশেষত বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের নাগরিক। আমাদের ছোট দেশগুলোর অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা তথা চাকরীর বাজারের সীমিত সুযোগ-সুবিধার কারণে এখানে খন্ডকালীন চাকরীরর সুযোগ সুবিধা নেই বললেই চলে। বরং এ বিষয়ে আমাদের মনোভাব তথা বাস্তবতা হচ্ছে; যেখানে পূর্ণকালীন চাকরী জোটাতে ডজন ডজন জুতা ক্ষয় করতে হয় সেখানে আবার খন্ডকালীন চাকরী! বড্ড বেমানান! কিন্তু না এতটা হতাশ হলে চলবে না, এখন যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে তৈরী হচ্ছে চাকরীর নতুন নতুন ক্ষেত্র তথা মাধ্যম, যেখানে ফুল টইম চাকরীর চেয়ে বরং পার্ট টাইম চাকরী-ই মানানসই, তথা সমাঞ্জস্যপূর্ণ। যেমন: কল সেন্টার, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, টেলিমেডিসিন, সাইবার হোস্টিং, উপস্থাপনা ও আরজে, মডেলিং, মেডিকেল রিপ্রেজেন্টটিভ এবং বিভিন্ন প্রোডাক্ট মার্কেটিং ও ব্যাংক বীমা প্রতিনিধিসহ বহু কিছু। চাকরী দাতা ও প্রার্থীদের মধ্যে সমঝোতা বা চুক্তির ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা পার্ট টাইম উল্লেখিত চাকরী সহজেই পেতে পারে। যদিও কাজ করে পড়াশোনা চালিয়ে নেয়া অত্যন্ত কঠিন তথা শ্রমসাধ্য বিষয়। এবং সবার পক্ষে একত্রে দুটি দিক সামাল দেয়াও সম্ভব না। তবে যাদের আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা আছে, তারা এভাবেই উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি খন্ডকালীন চাকরীর মধ্য দিয়ে নিজেকে এগিয়ে নিচ্ছে এবং এক পর্যায়ে অনায়াসেই পূর্ণকালীন উন্নত চাকরী বা ব্যবসা করে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। ইউনিলিভার বাংলাদেশ, স্কয়ার সহ এজাতীয় বিভিন্ন কোম্পানীর প্রোডাক্ট মার্কেটিং এর কথাও বলা যায়। বর্তমানে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনী সংস্থা এই পর্যায়ে বেশী অগ্রনী ভূমিকা রাখছে বলা চলে। যেমন: গ্রে, বিটপি, ইন্টারস্পিড, ম্যাডোনা, বিপণন সংস্থা মার্কস গ্রুপ ও এশিয়াটিকসহ আরো কয়েকটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কার্যক্রমসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কোম্পানীর প্রোডাক্ট মার্কেটিং এর কার্যক্রমে আউটলেটে কাজ করাচ্ছে একদম ইয়াং এনার্জেটিক তরুণদের। যাদের অধিকাংশই ছাত্র-ছাত্রী এবং সদ্য পড়াশোনা শেষ করছে এমন। বেতন তুলনামূলক হ্যান্ডসাম-ই বলা চলে। তবে এখানে অর্থের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অভিজ্ঞতা অর্জনের বিষয়টি।
যারা ধূমপান করেন, তারা হয়তো দেখে থাকবেন যে, সিগারেটের দোকানে কমলা টি-শার্ট পড়া কিছু ইয়াং ছেলে মালব্রো সিগারেট এর ক্যাম্পেইন করছে। এরা একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার অধীনে কাজটি করছে। এদের অধিকাংশই ছাত্র। আবার কেউবা সদ্য পড়াশোনা শেষ করেছে। ইয়াং ছেলেদের এমন একটি অস্বাস্থ্যকর ও ক্ষতিকর ব্র্যান্ডের মার্কেটিং এ যুক্ত থাকার কাজটি কিছুটা ঝুঁঝিপূর্ণ ও দৃষ্টিকটু মনে হলেও চাকরীর বাজারের দুরাবস্থার বিবেচনায় বিষয়টি মেনে নিতে হয়। বিশেষ করে এজাতীয় খন্ডকালীন চাকরীর সুযোগ নিয়ে উপার্জন ও অভিজ্ঞতার পাশাপাশি দক্ষ কর্মী তৈরীর বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভব। একজন শিক্ষানবীশকে তৈরী করলে আপনার আর্থিক সাশ্রয় হলো, আর ওদের হলো উপার্জন। বিশেষকরে এতে শিক্ষার্থীদের যাদের অর্থনৈতিক কারণে পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম তারা পার্ট টাইম জব করেও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে। তবে সবেচেয়ে বেশি কার্জকর অভিজ্ঞতার বিষয়টি। এতে দেখা যায় পড়াশোনা শেষ করার আগেই চাকরীর বাজারে সে একদম অনভিজ্ঞ এবং নতুন কেউ নয়। পড়াশোনা সু-সম্পন্ন করতে পারলে যেখানে পার্টটাইম করছে সেখানেই ফুলটাইম সুযোগ পাওয়া সম্ভব। বিশেষ করে এতে পাশ করার পর চাকরী খুঁজে অন্তত: জুতার তলি আর ক্ষয় করতে হয়না। পাশাপাশি কোম্পানী এজাতীয় এ্যামপ্লইদের নিজেদের মত করে গড়ে তুলতে পারে এবং বেতনও উভয়ের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে সুবিধাজনকভাবে নির্ধারণ করা যেতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, এতে ইয়াং জেনারেশন অবসরে অসৎ সঙ্গে মিশে বিপদগামী হওয়া থেকে রক্ষা পায় এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে গড়ে ওঠে। তবে পার্টটাইমারদেরকে সময়মত ছেড়ে দিয়ে এবং একটু বেশি ছুটি-ছাটা দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে নিতে সহায়তা করা উচিত। বিষয়টি যত সহজে বলা যায় কাজে ততটা সহজ নয়। তবু আমাদের নিজেদের স্বার্থে-দেশের স্বার্থে এবং তরুণ সমাজকে সহযোগিতার দায়িত্ব-কর্তব্য বোধ থেকে হলেও এতটুকু করা আবশ্যক বা উচিত বলেই মনে হয়। এতে সুশিক্ষিত দেশ গড়াসহ বেকার সমস্যা অনেকাংশেই দূর করা সম্ভব। যা সরকারের বেকার সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতিকে অনেকাংশেই সফল করবে। তীব্র প্রতিযোগিতামূলক এই জব মার্কেটে শিক্ষানবিশ নিয়ে পরীক্ষা নীরিক্ষার সময় সুযোগ নেই। তবুও বলবো, কিছুটা কষ্ট করে হলেও তরুণদের এই সুযোগটুকু দিতে পারলে ভবিষ্যতে এর সুফল অবশ্যই আছে। আর এই সময়ের তরুণ যারা তারা একটু খোঁজখবর করলে নিজেদেরকে এ ধরনের পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে পারবেন সহজেই। মনে রাখতে হবে তরুণ বয়সেই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারলে পরবর্তী জবসলাইফে তা উপরে ওঠার সিঁড়িতে বাড়তি প্রেরণা জোগাবে। সময়ের সেই সুযোগ নেয়াই তারুণ্যের ধর্ম।
এই সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় টিভি মুখ আলিফ। পড়াশোনা চলাকালীন খন্ডকালীন অভিনয় পেশা আর মডেলিং দিয়ে নজর কেড়েছিলেন সবার। বর্তমানে সেই দুনিয়াতেই হয়ে উঠেছেন নিয়মিত।
মতামত: তরুণদের জন্য খন্ডকালীন পেশার দিক নিদের্শনামূলক পরামর্শ দিয়েছেন-
সাজ্জাতুজ জুম্মা
সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক, ডিসেম্বর ১৯, ২০০৯
suja
কোথায় খন্ডকালীন চাকুরী পাওয়া যায়, তার ঠিকানা প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ রইল।
RASEL AHMED
i am a student of civil eng. at dhaka polytechnic institute. i am able to speak and written english. i know basic computer knowledge and general knowledge. i have any presentation ability. but i am very poor. that is why i need a part time job.
আমি ঢাকা পলিটেকনিকের সিভিল ডিপার্টমেন্টের একজন ছাত্র । আমি ইংরেজিতে কথা বলতে ও লিখতে সক্ষম। আমার কম্পিউটারের উপর সাধারণ দক্ষতা আছে। এছাড়া সাধারণ জ্ঞানের উপর ও মোটামুটি জানাশোনা আছে। আমি যেকোনো জায়গায় উপস্থাপণা করতে সক্ষম। উল্লেখ্য আমি এস এস সি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছি। আমি খুবই গরিব, তাই আমার একটি পার্টটাইম চাকুরীর বড্ড প্রয়োজন।