বাড়ি সাজানোর আগেই ঠিক করে নেয়া উচিৎ বাড়িতে যারা বসবার করবে তাদের ইচ্ছা অভিরুচির কথা। এখানে আরও একটা ব্যাপার বলে রাখা দরকার, বাড়ি সাজাতে গিয়ে যদি আপনার ঘরের লোকজন বিরক্ত হয় তবে কিন্তু সেই গৃহ সজ্জার কোন মানেই হয় না। তাই ঘর সাজানোর আগে সবাইকে নিয়ে একটা তালিকা তৈরি করে নিন, যাতে এক নজরে আপনি দেখে নিতে পারেন পরিবারের সবার মতামত। এবার তালিকা ধরে হিসেবও তৈরি করুন, কোন ঘরে কত খরচ করবেন। এই হিসেব আর তলিকা তৈরিতে ৩টি জিনিস খেয়াল রাখতে হবে। ১) বাস্তবিক প্রয়োগ ২) রুচিশীলতা ৩) বাজেট।
বাস্তব প্রয়োগ
ঘর সাজাতে গেলে কিছু বাস্তব সমস্যা আপনা সামনে চলে আসবে। এই সমস্যাগুলো কাটাতে না পারলে কিন্তু ঘর সাজানো সম্ভব না। তার আগে আসুন, সমস্যাগুলো চিহ্নিত করি –
১. ঠিক করে নিন ঘরের সদস্যরা কতক্ষণ ঘরে থাকবেন। কে, কোন ঘর কতক্ষণ ব্যবহার করবেন।
২. বাচ্চাদের জন্য আলাদা কোনো ঘর থাকবে কিনা সেটাও জেনে রাখুন।
৩. খুব বেশি প্রয়োজনীয় ঘরের সংখ্যা কতগুলো।
৪. শুধু ডেকোরেশনের জন্য কোনো বাড়তি জায়গা আছে কি না। যেমন ছাদ, ব্যালকনি, চিলেকোঠা।
৫. খাবার খেতে ঘরের মানুষ কোন জায়গাটি বেশি পছন্দ করে? রান্নাঘর, বসার ঘর, নাকি খাবারের জন্য আলাদা কোনো ঘর।
৬. অনেক সময় বয়ষ্ক দু’একজন মানুষ সবসময় বাড়িতে থাকে। সেক্ষেত্রে আপনাকে একটা বাড়তি ঘর, একটু বাড়তি বন্দবোস্ত রাখতে হতে পারে।
৭. বাড়িতে যদি খুব বেশি পরিমাণে পার্টি দিতে অভ্যস্থ থাকেন তবে হিসেব করুন, কতজনকে সাধারণত দাওয়াত করে থাকেন। তাদের খাওয়া, থাকার জায়গা কতটুকু। এগুলো হিসেব করে রাখুন।
৮. ঘরের সদস্যদের শোবার ব্যবস্থাটা ঠিক করে নিন।
৯. সদস্যা সংখ্যা হিসেবে টয়লেট, বাথরুম, হাতমুখ ধোওয়ার ব্যবস্থা পর্যাপ্ত কি না।
১০. বাড়ির মানুষের অবসর কাটে কোথায় ? টিভি বা ভিডিও দেখে না কি কম্পিউটারে ?
উপরের এই ১০টা পয়েন্ট মাথায় রেখে তবেই বাড়ি সাজানোর কথা ভাবা উচিৎ। প্রস্তুতির জন্য এ বিষয়গুলো মনে রাখলে খুব সহজেই ঘরকে সাজানো যায় মনের মতো করে এবং নান্দনিক ভাবে।
রুচিশীলতা
অন্দরসজ্জা শব্দটির মাঝেই লুকিয়ে আছে একটা নান্দনিক বিষয়। আর তাই ঘর সাজাতে নান্দনিক জ্ঞান আর রুচির প্রয়োজনীয়তাটা বেশি। তবে এই রুচির ব্যবহারের কিছু আইন মেনে চলা উচিৎ।
১. রুচির প্রয়োগই গৃহসজ্জার মূল ভিত্তি। কিন্তু এই রুচি প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটু সাবধান থাকতে হবে। ঘরের বাদবাকি সদস্যদের সাথেও রুচির মিশেল থাকা উচিৎ। সেক্ষেত্রে হিসেব করুন সবগুলো ঘর একজনার রুচিমাফিক হবে নাকি এক একটি ঘর এক এক রকম হবে।
২. ঘরের রঙ নির্বাচন করুন ঘরের আকৃতি বুঝে। ছোট ঘরে এমন রঙ ব্যবহার করুন যাতে আলোর খেলাটা খুব স্পষ্ট হয়। আবার বড় ঘরে গাঢ়
রঙেও ক্ষতি নেই।
৩. ঘরের ফার্নিচার হতে হবে সবার থেকে আলাদা। এখানে এসেই আপনি অতিথিকে চমকে দেবেন আপনার রুচি আর সৃজনশীলতায়। সেক্ষেত্রে অবস্থা বুঝে এই ঘর বিভিন্ন রকম হতে পারে। তবে সেটা নির্ভর করতে আপনার বাড়িটি কোথায় অবস্থিত। শহর না গ্রামে, পাহাড়ে না সমতলে এর উপর ভর করেই ফার্নিচার হতে পারে ঐতিহ্যবাহী, রোমান্টিক, দেশী বা আধুনিক রুচির।
৪. ঘরের রঙের সাথে মানানসই পরদা, সোফা, কুশন, বিছানার চাদর তৈরি করতে পারেন।
সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক, নভেম্বর ১৭, ২০০৯
Leave a Reply