প্রতিদিন ব্যবহারের ফলে কাঠের আসবাবপত্র হয়ে পড়ে শ্রীহীন। আর এতে ঘরের সৌন্দর্যও ম্লান হয়ে যায়। তাই প্রতিদিন ঘর পরিষ্কার করার সময় আসবাব পরিষ্কার করার দিকেও নজর দিতে হবে।
নিয়মিত শুকনো ও নরম কাপড় (পুরোনো গেঞ্জির কাপড় হলে ভালো হয়) দিয়ে কাঠের আসবাব মুছতে হবে। কখনোই কাঠের আসবাবের ওপর ভেজা জিনিস (যেমন—থালা-বাসন বা কাপড়) রাখবেন না। এতে আসবাবে দাগ পড়ে এবং কাঠে পচন ধরে আসবাবের স্থায়িত্ব নষ্ট হয়। কাঠের আসবাবের প্রধান শত্রু ঘুণপোকা। আসবাবে ঘুণের সংক্রমণ হলে ছয় মাস পর পর নিমের তেল ছিটিয়ে (স্প্রে) দিন। ঘুণে ধরা আসবাবটি অন্য কাঠের আসবাব থেকে যথাসম্ভব দূরে সরিয়ে রাখুন। তা না হলে অন্য আসবাবেও ঘুণের সংক্রমণ হতে পারে। অনেক দিন ব্যবহারের ফলে কাঠের আসবাবের ওপর কালো দাগ পড়ে যায়। এ বিষয়ে ঢাকার নাইস ফার্নিচার মিউজিয়ামের স্টোর ইনচার্জ মনির আহমেদ জানান, কালো দাগের ওপর মোটা ব্লটিং পেপার চেপে ধরুন। তারপর ব্লটিং পেপার সরিয়ে জলপাই বা কেরোসিন তেল দিয়ে দাগের ওপর ঘষে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন। খুব কাছাকাছি সময়ে বার্নিশ করালে কাঠের আসবাব ম্যাড়ম্যাড়ে হয়ে যায়। তাই বছরে অন্তত একবার আসবাব বার্নিশ করান। অনেক সময় কাজ করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত কাঠের আসবাবে লম্বা আঁচড়ের দাগ বা স্ক্র্যাচ পড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে দাগের ওপর একই রঙের শু পলিশ বা ফেল্ট মার্কার দিয়ে ঘষতে থাকুন। কাঠের আসবাবে কোনো কিছুর আঠা লেগে গেলে স্পিরিটে তুলা ভিজিয়ে নিয়ে সেই জায়গার ওপর ঘষতে থাকুন। শোকেস, বুক শেলফ বা কাঠের আলমারির ভেতর কোনো জিনিস রাখার আগে পুরোনো খবরের কাগজ বিছিয়ে নিন। এতে কাঠের ওপর সহজেই দাগ পড়বে না। কাঠের আসবাবের ওপর সরাসরি গরম পাত্র রাখবেন না। এতে কাঠের রং নষ্ট হয়ে যায়। আর মেঝে পানি দিয়ে পরিষ্কার করার সময় খেয়াল রাখবেন, যাতে কাঠের আসবাবের গোড়ায় পানি জমে না থাকে। ঘরের ভেতর কাঠের আসবাব রাখার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। স্থপতি বিশ্বজিত্ বড়ুয়া জানান, সূর্যের আলো কম পড়ে, কিন্তু যথেষ্ট আলো-বাতাস আছে এমন স্থানে কাঠের আসবাব রাখতে হবে। কারণ, কড়া রোদে কাঠের আসবাবের রং হালকা হয়ে যায় এবং খুব তাড়াতাড়ি কাঠে ফাটল ধরে। দেয়াল থেকে চার ইঞ্চি দূরত্বে আসবাব রাখতে হবে এবং স্যাঁতসেঁতে দেয়ালের সামনে কোনো কাঠের আসবাব রাখা যাবে না। এতে সহজেই কাঠ ভালো থাকবে বলে জানান তিনি।
বিপাশা রায়
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, অক্টোবর ০৬, ২০০৯
Leave a Reply