‘আমার বানানো কাঠের পুঁতি দিয়ে নিজ এলাকার সাঁওতাল ও গরিব কৃষকদের হাতে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ এই গয়না। কাঠের পুঁতিতে রঙের নানারকম ব্যবহারে বিভিন্ন ডিজাইনে ফুটে উঠেছে নানা বিষয়।’ নিজের সংগ্রহের গয়নাগুলো সম্পর্কে বললেন শিল্পী মাহমুদ উন নবী। ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে শুরু হয়েছে শিল্পীর একক কারুশিল্প প্রদর্শনী। প্রদর্শনীতে নানা রঙের কাঠের পুঁতিতে তৈরি বিভিন্ন ডিজাইনের কানের দুল, মালা, টুপি, হাতের ব্যান্ড, চুলের কাঁটা, বিছানার চাদর, আয়না স্থান পেয়েছে। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘অলংকারশিল্পের দেশীয় সংস্কৃতি ও জিনিস নিয়ে আয়োজিত এ প্রদর্শনীতে আমাদের ঐতিহ্য উঠে এসেছে। মূলত সৌন্দর্যচর্চার জন্য পোশাক ও অলংকারশিল্পের মাধ্যমে নিজস্ব সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। প্রদর্শনীতে ঐতিহ্যগত অলংকারশিল্প এবং সাঁওতালদের অলংকারশিল্পকে মিলিয়ে আধুনিকতার এক সংমিশ্রণ দেওয়া হয়েছে।’ অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি আবুল বারক আলভী এই আয়োজনের প্রশংসা করে বলেন, ‘নিজস্ব চিন্তাভাবনাকে কারুশিল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন শিল্পী, যা আমাদের সংস্কৃতি-ঐতিহ্য তুলে ধরেছে।’ অনুষ্ঠানের সভাপতি শিল্পী রফিকুন নবী বলেন, ‘আধুনিক অলংকারের বিশেষ সংমিশ্রণকে নিয়ে এ আয়োজন। কারুশিল্প নিয়ে চমৎকার এই কাজটি সবার মধ্যে তুলে ধরতে এ প্রদর্শনী।’ পরে প্রধান অতিথি ফিতা কেটে প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ আয়োজন সম্পর্কে শিল্পী মাহমুদ উন নবী বলেন, ‘দীর্ঘ ১২ বছর ধরে গবেষণার পর তৈরি আমার কাঠের পুঁতির গয়না। যাতে তুলে ধরা হয়েছে আমাদের সংস্কৃতি আর নিজস্ব বিষয়গুলোকে। এ কাজগুলো একদল সাঁওতাল ও গরিব কৃষক পরিবারের মাধ্যমে করা, যারা কঠোর পরিশ্রমের বিনিময়ে ফুটিয়ে তুলেছে বিষয়গুলোকে।’ আজ শেষ হবে সাত দিনব্যাপী কারুশিল্পের এই প্রদর্শনী।
নুরুন্নবী হাছিব
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০০৯
Leave a Reply