উপহার পেতে কার না ভালো লাগে। আর তা যদি হয় ঈদের, তবে তো কথাই নেই। সারা বছর আমরা যতই উপহার পাই না কেন, ঈদের উপহার মানেই অন্য রকম আনন্দ। আর তাই ঈদের আনন্দের ভাগাভাগিটা করুন প্রিয়জনকে উপহার দিয়েই।
ঈদ উপলক্ষে উপহারের বিপণিবিতানগুলো সেজেছে নানা রঙে। প্রিয়জনের জন্য মনের মতো উপহার কিনতে অনেকেই এর মধ্যে ভিড় জমিয়েছে সেখানে। যাত্রায় ঈদ উপহার কিনতে আসা ইফাতের এরই মধ্যে অনেক উপহার কেনার হয়ে গেছে; মায়ের জন্য গয়নার বাক্স, বাবার জন্য ব্যাগ, ছোট ভাইয়ের জন্য বই বাকি কেবল বন্ধুদেরটা।
‘উপহার নির্বাচনের ক্ষেত্রে উপহারটি যার জন্য তার রুচি, পছন্দ জানা থাকলে খুব ভালো হয়।’ এমনটাই মনে করেন আইডিয়াস ক্রাফটসের কর্ণধার ফ্যাশন ডিজাইনার নীপা খালেদ। আসলে যাকে উপহার দেবেন, উপহারের উপস্থাপনটা তার মনের মতো হলে আনন্দ দ্বিগুণ বেড়ে যায়।
পোশাকের বাইরেও ঘর সাজানোর টুকিটাকি জিনিস শোপিস, পটারি, ল্যাম্প, ফুলদানি, চুড়ি, দুল, মালা, আংটি, ব্রেসলেট, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, ব্যাগ, কলমদানি, কার্ড হোল্ডার, বই, সিডি-যেকোনোটিই পারেন উপহার হিসেবে। তবে কার জন্য কোন উপহার নির্বাচন করছেন, সেটাই বড় ব্যাপার। যারা ঘর সাজাতে পছন্দ করে, তাদের শোপিস উপহার দিতে পারেন। ফুলদানি, পটারি, টবে ক্যাকটাস থেকে শুরু করে উইন্ড চাইম, ল্যাম্পস্ট্যান্ডস বেছে নিতে পারেন তাদের জন্য। অথবা উপহার হিসেবে নির্বাচন করুন এমন জিনিস, যেটা ঘরের সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি কাজেও লাগবে। যেমন কলমদানি, ম্যাগাজিন বাক্স প্রভৃতি।
মায়েদের উপহারও তাদের পছন্দ অনুসারে দিন। উপহারের বিপণিবিতানগুলেতে বাঁশের ও কাঠের ট্রে পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলো নির্বাচন করতে পারেন। অথবা মাটির সুদৃশ্য কাপ, বাটি, মগ, গ্লাস, প্লেট পাওয়া যাচ্ছে, তাও দিতে পারেন।
এ ছাড়া মাকে উপহার হিসেবে দিতে পারেন হাতব্যাগ, আয়না বা গয়নার বাক্স।
বাবাকে এমন কিছু উপহার দিন, যেটা কাজে লাগবে। বাবার চশমা, মোবাইল ফোনসেট, কলম, আর অফিসের কাগজপত্র সহজে আঁটবে, এমন ঝোলা ব্যাগ দিতে পারেন। ঈদ উপলক্ষে দিতে পারেন সুগন্ধি বা আফটার শেভও।
শিশুদের খেলনা, পুতুল, বল দেওয়ার পাশাপাশি দিতে পারেন চকলেট বাক্সও।
‘উপহার হিসেবে বইয়ের কোনো বিকল্প নেই।’ বললেন নীপা খালেদ। তাই উপহার হিসেবে নির্বাচন করতে পারেন বইও। ছোটদের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, কাটুêন, হাসির বইয়ের পাশাপাশি সাধারণ জ্ঞান বা শিক্ষামূলক বই দিতে পারেন। বই সবার জন্য একটি চমৎকার উপহার। তাই বন্ধুবান্ধবকেও দিতে পারেন বই। ভালো কোনো উপন্যাস বা কবিতার বই নির্বাচন করুন। মেয়েবন্ধুকে দিতে পারেন গয়না। সে ক্ষেত্রে কৌশলে তার ঈদের পোশাকের রংটা জেনে এর সঙ্গে মিলিয়ে দিতে পারেন চুড়ি, কানের দুল, বালা, ব্রেসলেট অথবা বড় মালা।
গান শুনতে আমরা সবাই ভালোবাসি। ঈদ উপলক্ষে বাজারে অনেক নতুন গানের সিডি বের হয়েছে। আপনার প্রিয় মানুষকে তার পছন্দমতো গানের সিডি উপহার দিতে পারেন। এ ছাড়া যারা একটু বয়স্ক, তারা পুরোনো দিনের গানের সিডি পেলে খুশিই হবেন।
উপহার হিসেবে দিতে পারেন প্রসাধনীও। ক্রিম, শ্যাম্পু, সাবান থেকে শুরু করে বডি স্প্রেসহ বিভিন্ন রকম সুগন্ধি নির্বাচন করে নিতে পারেন পছন্দমতো।
মগটা উপহার হিসেবে সব সময়ই জনপ্রিয়। সাদামাটা না দিয়ে একটু কারুকার্যময় মগও দিতে পারেন উপহার হিসেবে, যা শোপিস হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। ছোটদের ক্ষেত্রে মিউজিকসহ মগও দিতে পারেন।
উপহার হিসেবে ফুলের জুড়ি নেই। তাই ঈদের দিন সকালে কাছের প্রিয়জনকে দিতে পারেন একগুচ্ছ তাজা ফুলও।
দরদামঃ বিভিন্ন দামের মধ্যে উপহার পাবেন বিপণিবিতানগুলোতে। আপনার বাজেট অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন শোপিস (ছোট) ৫০-২৫০ টাকা, শোপিস (বড়) ২৫০-৫৫০, ল্যাম্প ২০০-৩৫০, আয়না ১৩০-২৮০, ফুলদানি ৩০০-৩৫০, টিস্যুর বাক্স ২৫০-৪৫০, ওয়াল ম্যাট ১৭০-৩৫০, তাজা গাছসহ শোপিস ১৬০-৩০০, দাবা বোর্ড ৫৫০-৮৫০, মাটির বাটি ৩০-১০০, মগ ৬০-৮০, গ্লাস ৮০-১০০, প্লেট ২০০-২৫০০, কাঠের ট্রে ৩০০-৫০০, কাঠের টি সেট ৩৫০-৪৫০, ব্যাগ ১২০-৪৫০, হাতব্যাগ ৫০-১০০, কাঠের বালা ৮০-১০০, চুড়ি ৫০-৮০, কানের দুল ৪০-২০০, মালা ১৫০-২৫০, চুড়ির আলনা ৮০-১২০, ছবির ফ্রেম ২০০-৪০০, কলমদানি ৮০-১৫০, চাবির রিং ৫০-৮০, বই ৫০-৩৫০, গানের সিডি ৬০-৮০ ও প্রসাধনী ১০০-৫৫০ টাকা।
কোথায় পাবেনঃ আড়ং, যাত্রার ধানমন্ডি, বনানী শাখাসহ আজিজ সুপার মার্কেটের আইডিয়াস ক্রাফটস, ভার্টিকেল, শেপ অ্যান্ড ফর্ম, বসুন্ধরা সিটির ক্রিয়েশন, শোকেস ও নকশি বাংলায় পাবেন আপনার পছন্দের উপহার। এ ছাড়া আর্চিস, হলমার্কসে পাবেন উপহার সামগ্রী। নীলক্ষেতেও আসতে পারেন। গানের সিডি খুঁজতে যেতে পারেন বসুন্ধরা সিটির ষষ্ঠ তলায়।
শান্তা তাওহিদা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০০৯
Leave a Reply