ঈদ মানেই আনন্দ। আর ঈদের এই আনন্দ আরও বেশি হয়ে ওঠে, যখন আপনার বাড়িতে বেড়াতে আসে বন্ধু ও আপনজনেরা। তাই আপনাকে আগে থেকেই প্রস্তুত থাকতে হবে তাদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার জন্য। ঈদের আনন্দ তখনই পরিপূর্ণভাবে পাওয়া হবে, যখন মানানসই বাসনে সেমাই, ফিরনি, পায়েস, মাংস, ভাত ইত্যাদি আপনি পরিবেশন করতে পারবেন আপনার বন্ধু ও আপনজনদের। মানানসই বাসনে শখের খাবারটি পরিবেশন করতে না পারলে শখের রান্নাটিই বৃথা যেতে পারে। তাই ঈদের জন্য এখনই কিনে ফেলতে পারেন নতুন বাসনকোসন।
এলিফ্যান্ট রোডের সিরামিকের দোকানে নতুন বাসনকোসন কিনতে আসা ধানমন্ডির বসিন্দা শাহানা পারভিন বলেন, ‘ঈদ মানেই অন্য রকম একটা আনন্দ। আর আনন্দকে সম্পূর্ণভাবে পূরণ করার জন্য আমাদের কোনো কমতি থাকে না। ঈদে বাসায় বেড়াতে আসে নতুন-পুরোনো অনেক আত্মীয়। তাদের সঙ্গে ঈদের সবটুকু আনন্দ উপভোগ করি। আর ঈদের আনন্দের সঙ্গে খাওয়া একটা বিষয় আছে, তাই নতুন বাসনকোসন কিনতে আসা।’ ঈদের পুরো দিনটির সঙ্গে বাসনকোসন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। সকালে সেমাই থেকে শুরু করে রাতে খাবারের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাসনকোসন দরকারি। আর নতুন ও ভালো বাসনকোসন খাবারের মানকে বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। ঈদ উপলক্ষে সিরামিকের দোকানগুলো নতুন ও পুরোনো পণ্যের নতুন করে পসরা সাজিয়ে বসেছে।
দরদাম
সিরামিকঃ জগ বড় ৩১৫ টাকা। মগ ১২৮ টাকা। কাপ ১২৮ টাকা। পিরিচ ১৫৭ টাকা। টি-সেট (দুটি কাপ, দুটি পিরিচ, চায়ের পট, চিনির পট, দুধের পট) ৯০৬ টাকা। এনজেল ভ্যালেটাইন কাপ-পিরিচ ২৯৫ টাকা। দুধের পট ১৮৭ টাকা। স্কয়ার দুধের পট ২০৬ টাকা। কাপ ৭৮ টাকা। ছোট কফি কাপ ৫৯ টাকা। চিনির পট ২২৬ টাকা। বড় কফি কাপ ৫৩২ টাকা। বড় চায়ের পট ৩২৫ টাকা। দুধের জার ৩৯৪ টাকা। কারি বোল ৯৮ টাকা। বড় স্যুপ পট ৭১৯ টাকা। এনজেল প্লেট ২৪৬ টাকা। সালাদ ডিশ ১২৮ টাকা। বোল বড় ১৭৭ টাকা। সালাদ ডিশ বড় ২১১ টাকা। সালাদ পিরিচ ৪৯ টাকা। বড় কারি বোল ১৩৭ টাকা। ট্রে সেট স্কয়ার ৩০৫ টাকা। বড় স্যুপ বোল ২১১ টাকা। ছোট স্যুপ বোল ৭৮ টাকা। বড় ফলের বোল ২২৬ টাকা। মাছের ট্রে ৫৩২ টাকা। ১২৫ টাকা। ভাতের ডিশ বড় ৫১২ টাকা, ছোট ৪১০ টাকা। ওভাল প্লেট বড় ২৪৬ টাকা, ছোট ২৪৬ টাকা।
মাটিঃ মাটির টব বড় ৭৮ টাকা। মাটির টব ছোট ৬৮ টাকা। গ্রিক স্কয়ার টব ১২৮ টাকা। রাউন্ড বর্ডার টব ৮৮ টাকা। মগ ৩৪ টাকা। ডেইজি মগ ৩৯ টাকা। গ্লাস ২৫ টাকা। ডেইজি গ্লাস ২৯ টাকা। ক্রে গ্লাস ৩৯ টাকা। টেরাকোটা মগ ২৯ টাকা। ক্রে বোল ৫৯ টাকা। কারি বোল ৫৬ টাকা। কারি বোল ঢাকনাসহ ১২৮ টাকা। ডেইজি ডিভাইন বোল বড় ৫৯ টাকা, ছোট ৩৯ টাকা। ক্রে বোল ঢাকনাসহ ৭৮ টাকা। ক্রে কারি বোল ঢাকনাসহ ৭৮ টাকা। ক্রে বোল ছোট ৪০ টাকা। সানকি ৩০ টাকা। ছয় কোনা বোল ৩৯ টাকা। ক্রে থালা বড় ৭০ টাকা, ছোট ২৯ টাকা। ক্রে ডিনার থালা ৭৯ টাকা। টেরাকোটা ডিজাইন কারি বোল ৭৮ টাকা।
কাঠ, বেত ও বাঁশঃ বেতের বেনি থালা ছোট ১২৮ টাকা, মাঝারি ১৫৭ টাকা, বড় ১৮৭ টাকা। বেতের স্কয়ার সেভ থালা ১৮৭ টাকা। রাউন্ড পাটি ক্রে ট্রে ছোট ১৭৮ টাকা, মাঝারি ২০৬ টাকা, বড় ২৩৬ টাকা। ক্রে পাটি ট্রে ২২৬ টাকা। কাঠের গ্লাস ম্যার্ট ৯৮ টাকা। কাঠের বোতল হোলডার ট্রে ৪৯২ টাকা। কাঠের পাতা ডিজাইন ট্রে ৩৮৪ টাকা। কলাপাতা ডিজাইন ট্রে ৩৮৪ টাকা। কাঠের গ্লাস হোলডার ৪৫৩ টাকা। মাছের ডিজাইন চামচ ১২৩ টাকা। জালি চামচ ৬৮ টাকা। কাঠের তরকারির চামচ ১৪৭ টাকা, সালাদের চামচ ১০৮ টাকা। নারকেলের ভাতের চামচ ৪৯ টাকা। মাছের ডিজাইন ডালের চামচ ১০৭ টাকা। মাংসের চামচ ১৭৫ টাকা। স্কয়ার কাঠের বোল ৭৪৮ টাকা। কাঠের কর্নার বোল বড় ২৯৫ টাকা, ছোট ২২৫ টাকা। কাঠের স্যুপ বোল ১৯০ টাকা। কাঠের বাটি ২০৯ টাকা। কাঠের সালাদ বোল ৪৩৩ টাকা। কাঠের কারি ২১৬ টাক। কাঠের থালা ২২৫ টাকা। কাঠের কালো বোল ৪১৩ টাকা। কাঠের কালো স্কয়ার বোল ৬৩০ টাকা। কাঠের কালো ট্রে ২৮৫ টাকা। বাঁশের ট্রে ১৩৭ টাকা। বাঁশের ট্রে স্কয়ার ১৫৭ টাকা। বাঁশের কুলা ৬৪ টাকা।
আড়ং
বাঁশ, বেত ও কাঠের তৈরি বাসনকোসন তৈরি করেছে আড়ং। আড়ং ধানমন্ডি শাখার বিক্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘মানুষ তার প্রয়োজনে বাসনকোসন কিনে থাকে। আর সেই বাসনকোসনে আমরা নিয়ে এনেছি ফ্যাশনের ছোঁয়া। এসব পণ্য দেখতে যেমন বৈচিত্র্যময়, তেমনি পণ্যগুলোতে করা হয়েছে নতুনত্বের বাড়তি মাত্রা। এই সময়ে আধুনিক নারীরা প্রয়োজনীয় পণ্যটি ক্রয় করছেন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফ্যাশনেবলটি। আড়ং সিরামিক, মাটি, কাঠ ও বেত দিয়ে তৈরি করে বাসনকোসন।’
মুন্নু সিরামিক
এলিফ্যান্ট রোডের মুন্নু সিরামিকের দোকান ঈদ উপলক্ষে নতুন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে। ঈদ উপলক্ষে তাদের দোকানগুলোতে বিক্রি বাড়বে বলে আশা করে মুন্নু সিরামিক কর্তৃপক্ষ। ঈদ উপলক্ষে মুন্নু সিরামিক তাদের দোকানের বিভিন্ন রকম পণ্যের দাম নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে ডিনার সেট (৩২ পিস), বয়েল চায়না রাউন্ড সেট (৩২ পিস) ১৬৫০-২৬৯৩ টাকা, (৩৬ পিস) ৩৬২৩ টাকা, (৫২ পিস) ৫৪৬০-৬৯৮৮ টাকা। বোন চায়না ৩২ পিস ৪১০০ টাকা, ৩৬ পিস ৫৩৬০ টাকা, ৫২ পিস ৯৩০০ টাকা। বোন চায়না স্কয়ার সেভ ৩২ পিস ৩২২০ টাকা, ৩৬ পিস ৭৬১০ টাকা, ৫২ পিস ১২৭৩৪ টাকা। কফি সেট (ছয়টি কাপ, ছয়টি পিরিচ, একটি চায়ের পট) ১১২০ টাকা। টি-সেট ১৪০০ টাকা। ফুল টি-সেট (ছয়টি কাপ, ছয়টি পিরিচ, একটি চায়ের পট, একটি দুধের পট, একটি চিনির পট) কফি মগ ৫০-১৫০ টাকা। ছোলা-মুড়ি সেট, সিক কাবাব সেট, জর্দা সেট, দুধ সেমাই সেট, গোশত পরোটা সেট, হালিম সেট, শরবত সেট, জিলাপি সেট, ভুনা খিচুড়ি সেট ২৫০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।
শাইনপুকুর সিরামিক
ঈদ এলেই যার যার সাধ্যমতো আয়োজন করতে চায়। তাই রমজান মাস শুরু মানেই ঈদের আবহ সৃষ্টি হওয়া। রমজান শুরুর সঙ্গে সঙ্গে চারদিকে ঈদের প্রস্তুতি আরম্ভ হয়ে যায়। তাই রমজানের শুরুতেই শাইনপুকুর সিরামিক কর্তৃপক্ষ বাজারে এনেছে তাদের কিছু সিরামিক-পণ্য। শাইনপুকুর সিরামিকের ম্যানেজার ও ইনচার্জ মো· রওনক ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিশ্ববাজারে রপ্তানি করার জন্য আমাদের পণ্য তৈরি করে থাকি। ঈদ এলেই আয়োজনে আমরাও কিছু পণ্য বাজারে নিয়ে আসি। এবারও ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে কিছু নতুন পণ্য বাজারে এনেছি। এর মধ্যে ডিনার সেট ৩২ পিস ২৪৮০-৬১১৫, ২১ পিস ১৭৫২-৩৬৭০ টাকা। ফিরনি সেট (সাত পিছ) ২২০-২৫০ টাকা। কেক সেট (সাত পিস) ১৯০ টাকা। পরোটা সেট (সাত পিস) ২৯৬ টাকা। কফি সেট ৪০-১৬০ টাকা। এ ছাড়া শাইনপুকুর সিরামিক আরও কিছু পণ্য বাজারে আনবে।’
নিউমার্কেট
রাজধানীর সবচেয়ে বড় বাসনকোসনের বাজার হলো নিউমার্কেটের নিউ সুপার মার্কেট। এখানে সিরামিক-পণ্য খুচরা ও পাইকারি বিক্রি করা হয়। বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেল, ঈদ উপলক্ষে দোকানে নতুন পণ্য তোলা হয়েছে। বিভিন্ন দোকানে পণ্যের মানভেদে দামের কিছুটা পার্থক্য দেখা গেছে। চায়ের কাপ এক সেট (ছয় পিস) ৩৯০-১০৮০ টাকা। ফিরনি সেট (সাত পিস) ২৩০-৪৮০ টাকা।
ছোট তরকারির বাটি (এক পিস) ১৩০-২০০ টাকা। বড় তরকারির বাটি (এক পিস) ২৩০-৭০০ টাকা। হাফ প্লেট (ছয় পিস) ২৯০-৪৮০ টাকা। বড় প্লেট (ছয় পিস) ৮৪০-৪৯০ টাকা। গ্লাস (ছয় পিস) ১৫০-৪০০ টাকা। মগ (এক পিস) ৫০-১০০ টাকা। স্যুপ বাটি (এক পিস) ৫০-১৫০ টাকা। বাটি (এক পিস) ৫০-১২০ টাকা। ব্লেন্ডার (এক পিস) ৮০০-১৮০০ টাকা। ডিনার সেট (৩২ পিস) ১৫০০-৪৫০০ টাকা। ডিনার সেট (৫২ পিস) ৩৫০০-১৫০০০ টাকা। নিউমার্কেটের দোকানগুলোতে বিভিন্ন কোম্পানির সিরামিক-পণ্য পাওয়া যায়। দোকানগুলো থেকে পণ্য কেনার সময় একটু চোখ-কান খোলা রাখলে আপনি পছন্দের পণ্যটি কিনতে পারবেন আপনার বাজেটের মধ্যেই।
ঈদের জন্য বাসনকোসন পাওয়া যাবে এলিফ্যান্ট রোডের সিরামিকের দোকানগুলোতে। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট থেকে আপনার পছন্দের বাসনকোসন কিনতে পাবেন।
বাদল খান
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ২৫, ২০০৯
Leave a Reply