সমস্যাঃ একটি বিষয় আমার মন খুবই খারাপ করে তোলে, তা হলো দুশ্চিন্তা। প্রায়ই আমি আধঘণ্টা-এক ঘণ্টা যেকোনো বিষয়ে নানা দুশ্চিন্তা করি। যখন পড়ার টেবিলে বসি তখন তা বেশি হয়। এর পর খেতে গেলে, ঘুমাতে গেলে আবার ঘুম ভাঙার পরও হয়। আমি যখন সপ্তম শ্রেণীতে পড়ি তখন থেকেই এর শুরু। অনেকবার শপথ করেছি আর চিন্তা করব না; কিন্তু পারি না। সব সময়ই চেষ্টা করি বেশি কাজ করে, টিভি দেখে দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকতে। কিন্তু এসব করলে লেখাপড়ার ক্ষতি হচ্ছে। আমি একাদশ শ্রেণীতে পড়ছি।
পরামর্শঃ তুমি অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার নামের একটি মানসিক সমস্যায় ভুগছ। এ ধরনের অসুস্থতার কারণে আমাদের মনে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণহীনভাবে নানা ধরনের চিন্তা আসতে থাকে। অনেক চেষ্টা করেও সেটা যখন থামানো যায় না তখন আমরা খুব বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি এবং প্রতিদিনের কাজকর্ম ব্যাহত হয়। যদিও আমাদের সবারই অনেক কিছু নিয়েই স্বাভাবিকভাবে চিন্তা হয়, তবে এ ধরনের অসুস্থতার ক্ষেত্রে এই চিন্তাগুলো প্রচণ্ড গতিতে আসে এবং বারবার একই চিন্তা মাথায় ঘুরতে থাকে। সাধারণত কোনো মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী ঘটনার পর প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে আগে এই অসুস্থতা বোধ হতে দেখা যায়। তবে ছেলেদের ক্ষেত্রে আরও আগেই এর উপসর্গগুলো শুরু হয়ে যেতে পারে। সাধারণত এই চিন্তাগুলো বেশির ভাগই অযৌক্তিক এবং এতে নেগেটিভ বিষয়গুলোই বেশি থাকে। তুমি অনেক কিছুর মাধ্যমে চিন্তাগুলো সরিয়ে রাখার চেষ্টা করছ, আবার এতে করে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিষণ্ন হয়ে যাচ্ছ। আমার অনুরোধ থাকবে, তুমি ঢাকায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় অথবা ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালে গিয়ে কোনো ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টের কাছ থেকে সাইকোথেরাপির সাহায্য নাও।
———————————–
সমস্যাঃ আমি একটি মেয়েকে ভালোবাসি চার-পাঁচ বছর ধরে, কিন্তু কোনো দিন প্রকাশ করিনি। আজ আট মাস হলো মেয়েটিকে জানালাম। কিন্তু সে আমাকে ভালোবাসতে চায় না। আমি মেয়েটির বাড়িতে প্রায়ই যাই। এমনকি মেয়েটির পরিবারের সবাই জানে এবং তাদের পরিবার থেকে দু-একজন আমাকে গ্রহণ করতে ইচ্ছুক, যদি মেয়েটি রাজি হয়। এমনকি আমার ভালোবাসার সততা প্রমাণের জন্য মেয়েটির সামনে হাত কেটে রক্ত দিয়েও প্রমাণ করতে চেয়েছি যে আমি তাকে কী রকম ভালোবাসি। মেয়েটি বর্তমানে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তার বাবার অনেক টাকা। আমি ছোট একটা চাকরি করি। মেয়েটির প্রতি আমি এতই দুর্বল হয়ে পড়েছি যে তাকে না পেলে আত্মহত্যা ছাড়া আমার কোনো উপায় নেই।
পরামর্শঃ কেউ যদি মন থেকে কাউকে না চায়, সেখানে কি জোর খাটানো সম্ভব? তুমি মেয়েটির একান্ত ব্যক্তিগত সীমারেখায় প্রবেশ করতে চেষ্টা করছ এবং তাকে নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার দিতে চাইছ না। যারা নিজেদের হাত-পা কাটে তাদের অন্যান্য চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে একটি হচ্ছে, তাদের নিজেদের প্রতি মোটেও ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা নেই। আর সে কারণেই তারা অন্যদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে পারে না। মেয়েটিকে যদি তুমি সত্যিই ভালোবাস, তাহলে তার শুভাকাঙ্ক্ষীও হতে হবে এবং তার ইচ্ছার প্রতি শতভাগ শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। এভাবে শরীরের রক্ত দেখিয়ে কিন্তু আর যা-ই হোক, তুমি ভালোবাসা পাবে না। এতে করে মেয়েটি ভয় পেতে পারে এবং প্রচণ্ড অপরাধবোধেও ভুগতে পারে। এর পর যদি তুমি তাকে আত্মহত্যার হুমকি দাও, তাহলে সেটি তোমার দিক থেকে খুব বড় অন্যায় হবে। তুমি চিন্তা করে দেখ তো, নিজের প্রতি এবং ওর প্রতি এত বড় অবিচার তুমি করবে কি না। তোমার অর্থনৈতিক অবস্থান যেমনই হোক বা যে চাকরিই করো না কেন, সবচেয়ে প্রথমে নিজেকে সবকিছুর জন্য যথেষ্ট মর্যাদা দেবে। মনে করবে, তুমি জীবনের একটা পর্যায়ে এসেছ অনেক পরিশ্রম করে। কাজেই নিজের মন ও শরীরের যত্ন নেওয়ার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে। মেয়েটিকে পেতে তুমি যে পথ বেছে নিচ্ছ, তা ত্যাগ করে ওর প্রতি সম্মানজনক আচরণ করো; যদি ওর মন কখনো পরিবর্তন হয়। সে জন্য এখন শুধু ধৈর্য ধরা ছাড়া তোমার আর কিছুই করণীয় নেই। আশা করি, তুমি নিজের প্রতি যত্নশীল হয়ে সুস্থ চর্চাগুলো দিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখবে।
অধ্যাপক ড· মেহতাব খানম
কাউন্সেলিং সাইকোলজি
মনোবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ২২, ২০০৯
মিনহাজ উদ্দিন -ময়মনসিংহ
আজব!!!
এসব পোলাপানের মাথায় কিছু আছে বলে আমার সন্দেহ!!
“আপনি মেয়েটিকে পাওয়ার জন্য হাত কাটছেন…. আর মেয়েটিও যদি আপনাকে না পাওয়ার জন্যে পা কাটে?!!”
নিজেরে ভালোবাসুন,
প্রেম-ভালোবাসা এমনি হবে.
আর যে মেয়েটি বলছে, তার গৃহশিক্ষক তাকে ধর্ষণ করেছে; আমি নিশ্চিত, এ ব্যপারে মেয়েটির আগ্রহ বেশি ছিল!
করার পর দেখছে_ “এটা কী করলাম!”
কষ্টটা হালকা করার জন্যেই চিঠি লিখে শ্যায়ার করেছে.
এটা পাঠকের কাছে ফাইজলামি,প্রতারণা ছাড়া কিছুই না__