পোশাকের সাথে ম্যাচ করে গয়না, আর তার সাথে মিলিয়ে মেকআপ, স্টাইলের দুনিয়ায় এটি একটি পুরানো ধাপ। নারীদের এরকম ম্যাচিং করতে গিয়ে এবাজার ওবাজার ঘুরে দিশেহারা হতে হয়েছে এমন ঘটনাও নজিরবিহীন না। এই ম্যাচ হতে পারে মেকআপে, পোশাকে, জুতা কিংবা গয়নায়। এই ম্যাচিং হতে পারে কনট্রাস্ট কিংবা শেডএর মাঝে। নানান ধাঁচের বর্নিল এই শেড আর ম্যাচিং নিয়েই এবারের রূপকড়চা।
কাপড়ের রঙের সাথে মিল রেখে লিপস্টিক দেবার ঢঙে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। এখন অনেকেই কাপড়ে রঙের সাথে কন্ট্রাস্ট রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করে থাকেন। তবে এখানে বলে রাখা প্রয়োজন লিপস্টিকের রঙ অনেক সময়ই আপনার মুডের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে থাকে। আর তাই পার্টির ধরন বুঝে লিপস্টিকের রঙ নির্বাচন করুন। একসময় ম্যাট লিপস্টিক জনপ্রিয়তা পেলেও এখন কিন্তু লিপস্টিকে একটু গ্লসি ভাবটাই বেশী জনপ্রিয়। চাইলে আপনার প্রিয় ম্যাট লিপস্টিকের উপরে একটু গ্লস চড়িয়ে ফ্যাশনেবল করে তুলতে পারেন। কটকটে রঙের লিপস্টিক রাতের পার্টিতেই মানানসই। আর দিনের বেলার কোনো পার্টিতে কিংবা বন্ধুদের আড্ডায় এখন ন্যাচারাল কালার ব্যবহারই ফ্যাশন।
লিপস্টিক টিপস্
১. লিপস্টিক কেনার সময় সাধারণত আমরা হাতের তালুতে কিংবা উল্টো দিকে ঘষে দেখি রঙটি আমাদের মানাবে কি না। আর তাই রঙ মিলিয়ে দেখার জন্য আঙুলের ডগায় লাগিয়ে ঠোঁটের কাছে নিয়ে দেখুন আপনাকে কতটা মানাচ্ছে।
২. ঠোঁটে লিপস্টিক লাগানোর আগে ঠোঁটের অবস্থানটিও গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ ঠোঁটে লিপস্টিক লাগানোর আগে দেখে নিন ঠোঁট শুকনা, খটখটে হয়ে আছে কিনা। সেক্ষেত্রে টুথব্রাশ দিয়ে ঠোঁটটা একটু ঘষে নিন। তাহলেই দেখবেন লিপস্টিকের রঙটা ফুটে উঠবে আপনার ঠোঁটে। এছাড়া চাইলে একটু ভেজা পেপার টাওয়াল ব্যবহার করেও ঠোঁটটাকে একটু ভিজিয়ে নিতে পারেন।
৩. অনেকসময়ই দেখা যায়, ঠোঁটের বাইরের বলিরেখাতে লিপস্টিক ছড়িয়ে পরে। এই অবস্থা সামলাতে লিপস্টিক দেবার আগে ঠোঁটের উপরে মোটা দাগে লিপজেল লাগিয়ে নিন। দেখবেন আর লিপস্টিকের রঙ আর থেবড়ে যাবে না।
৪. আজকাল বাজারে এমন কিছু লিপস্টিক পাওয়া যায় যেগুলো ঠোঁট থেকে সহজে সরে যারে না। এমন লিপস্টিক পার্টিতে ব্যবহার করুন। তাহলে খাওয়া দাওয়া শেষ করেও আবার লিপস্টিক ঘষতে বসতে হবে না। সাধারন লিপস্টিক ব্যবহারের পরে ঠোঁটের উপর টিস্যু চেপে দিন। এতে লিপস্টিকের রঙ ঠোঁটের উপর ভাল ভাবে বসবে।
৫. ঠোঁটকে একটু ভরাট করে সাজাতে ঠোঁটের মাঝখানে একটু গোল্ডেন কিংবা সিলভার শেডের লিপগ্লস লাগিয়ে দিন।
ম্যাচ করে নখের রঙ
নেইল পলিশের রঙটা একটু সাবধানে ম্যাচ করাতে হবে। যদি রঙের শেড নির্বাচনটি একটু দুর্বোধ্য মনে হয় তাহলে চেষ্টা করুন এমন কোনো রঙ বাছতে যা নখের নিজস্ব রঙের সাথে মানিয়ে যাবে। চাইলে ন্যাচারাল কালার কিংবা ট্রান্সপারেন্ট পলিশ ব্যবহার করতে পারেন এখানে। পোশাকের ধরন বুঝে নখের রঙ নির্বাচন করুন। শাড়ির সাথে খুব বেশী গাঢ় রঙের শেড ব্যবহার না করাই উত্তম। জিন্স, টিশার্ট, কিংবা টপসের চাইলে একটু গাঢ় কিংবা কটকটে রঙের ব্যবহার করতে পারেন। যাদের গাড়ের রঙ শ্যামলা তাদের জন্য বাদামি কিংবা গাঢ় চকলেট রঙের পলিশ ব্যবহার করতে পারেন নখে। নখের খুঁত ঢাকতে প্রয়োজন গাঢ় শেডের। আর তাই গায়ের রঙের সাথে মিলিয়ে এমন কোনো শেড নির্বাচন করুন যেন সেটা আপনার নখটাকে নিখুঁত ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে। গায়ের রঙ খুব ফর্সা কিংবা খুব কাল হলে সাহস করে কোনো রঙের শেড বাছুন। যেমন নীল, বার্গেন্ড কিংবা গাঢ় লাল। একেবারে সাদা কিংবা কাল রঙের পোশাকে সিঁদুর রাঙা লাল রঙ দারুণ মানাবে।
নেল পলিশ টিপস্
১. পছন্দের নেলপলিশটা শুকিয়ে গেলে মন খারাপ করবেন না। শিশির ভেতরে একটু নেলপলিশ রিমুভার দিয়ে শিশিটা ঝাকিয়ে নাড়তে থাকুন। কিছুক্ষণ পরে ভেতরে বুদবুদ তৈরি হবে। ব্যাস! আপনার নেলপলিশ ব্যবহারের জন্য তৈরি।
২. নেলপলিশ ভাল রাখতে ব্যবহারের পরে মুখটা রিমুভার ভেজানো তুলা দিয়ে মুছে তারপর মুখ বন্ধ করে রাখুন।
৩. সবসময় নেলপলিশ কোনো ঠান্ডা জায়গাতে রাখুন।
৪. গোসলের আগে মাখন ও চিনি মিশিয়ে খানিকক্ষণ মালিশ করুন। ময়লা উঠে হাত পা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
৫. প্রতিদিনের গোসলে যাবার আগে হাতের পাতায় গ্লিসারিন ও গোলাপজল লাগান।
৬. নখ ভাল রাখতে ক্যালশিয়াম যুক্ত খাবার খান।
মডেল বিন্দু পোশাক মান্ত্রা মেকআপ হেরোবিক্স ব্রাইডাল ছবি সাফাওয়াত খান সাফু।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, আগস্ট ১১, ২০০৯
Leave a Reply