বেশ বহু বছর পুরানো একটা বাংলা গান মনে পড়ছে — গীতা দত্তের একটা গান — ‘তোমার এত ভালোবাসা কোথায় আমি রাখব বলো না’৷ গান যাই হোক, বেশী ভালোবাসা ধরে রাখতে গেলে কিন্তু তার প্রভাব পড়বে আপনার স্বাস্থ্যের ওপরে৷ তাই মজা করেই বলা যায়, বেশী ভালোবাসা ভালো নয়৷ আপনি তো বেশ স্বাস্থ্যবতী হয়ে উঠছেন! আপনার দৈনন্দিন জীবনের খাদ্যাভ্যাস বা আপনার জীবনশৈলী — এগুলিকেই সবাই চিহ্নিত করবে৷ কিন্তু আপনি কি জানেন ক্রমাগত আপনার মোটা হয়ে ওঠা বা বেশী ভালো ভাষায় বলতে গেলে আপনার স্বাস্থ্য ভালো হয়ে ওঠার পেছনে কিন্তু আপনার ভালোবাসার মানুষটির বিশেষ ভূমিকা আছে৷ আপনার জীবনের অন্যান্য সমস্যা বা আলস্য কোনটাই আপনার মোটা হওয়ার কারণ নয়৷
হ্যাঁ, আপনারা যারা দিন দিন অত্যধিক মোটা হয়ে উঠছেন তারা মোটা হওয়ার কারণ হিসাবে নতুন এই কারণটিকে দায়ী করতেই পারেন৷ কারণ সুখের সঙ্গে লড়াই করা আমাদের কাজ নয়৷ জেনে নিন খুব বেশী ভালোবাসা সম্পন্ন জীবন যাপন করলেও আপনি মোটা হতে পারেন৷ নতুন সমীক্ষা জানাচ্ছে একজন মহিলা কতটা সুখে আছেন তার ওপরে তার ওজন নির্ভর করে৷ বিবাহিত জীবন কেমন, কতটা সুখের, আপনার জীবনশৈলী কেমন, তার ওপরে নির্ভর করছে আপনার স্বাস্থ্য৷ আপনার দাম্পত্য খুব ভালো না হলে তার এফেক্ট পড়ে আপনার চেহারাতে৷ শুধুমাত্র তাই নয়, এর ফলে আপনার ওজনের দিকেও হেরফের দেখা যায়৷ আর আপনার দাম্পত্য সুখের মানে আপনি মানসিক দিক থেকে বেশ ভালো আছেন যার ফলে আপনার শরীর-স্বাস্থ্য উন্নত হচ্ছে৷ আর তার সঙ্গে সঙ্গে আপনার ওজনও ক্রমবর্ধমান৷ আপনার সঙ্গীর সঙ্গে আপনি খুব ভালো জীবন অতিবাহিত করলে তার প্রভাব দেখা যায় আপনার বর্ধিত ওজনে৷
বিবাহিত জীবন শুরু করার পরে আপনার জীবনে আরও একটি সুখের ঘটনা হল আপনার সন্তানের আগমন যা আপনার সুখের চাবিকাঠি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার বর্ধিষ্ণু স্বাস্থ্যের কারণ হয়েও দাঁড়ায়৷ ওজন হেরফের হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে৷ রিসার্চ জানাচ্ছে, আমাদের মানসিক অবস্থান আমাদের শারীরিক দিকে বড় প্রভাব বিস্তার করে৷ তার ফলে আমাদের শারীরিক গঠনে তারতম্যের সঙ্গে সঙ্গে ওজনের তারতম্য ঘটে থাকে৷
মহিলাদের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের স্বাস্থ্য কেমন হবে তা নির্ভর করে তাদের বিবাহিত এবং পারিবারিক জীবনের ওপরে৷ একজন মহিলার পক্ষে সারা জীবন এক রকম ওজন বজায় রাখা খুবই দুষ্কর৷ যারা খুব বেশী মাত্রায় ওজন সচেতন হয় তারা নানা রকম ভাবে সঠিক ওজন ধরে রাখার চেষ্টা করেন বা ওজন বেড়ে গেলে তা কমানোর জন্য নানা প্রক্রিয়া অবলম্বন করে থাকেন৷ একাধিক প্রচেষ্টার ফলে ওজন কমানো হলেও আপনার শরীরে নানারকম রোগের আতিশয্যও দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নানারকম বদঅভ্যাস ফিরে আসতে থাকে যার ফলে আমরা আবার ক্রমাগত আগের ওজন ফিরে পাই৷
অধিকাংশ মহিলারাই নিজেদের জীবন-যাপন পদ্ধতি একটু লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন তাদের ওজন তাদের মানসিক দিকের ওপরে নির্ভর করে৷ তাদের ওজন নির্ভরশীল হয় তাদের ব্যক্তিগত জীবনে কতটা ভালো আছেন সেই বিষয়ের ওপরেই৷ তাদের সুন্দর স্বাস্থ্য এবং বেশী ওজনের কারণ হল তাদের সুখী দাম্পত্য জীবন এবং তাদের সঙ্গীর সঙ্গে সু সম্পর্ক৷ মহিলারা স্বীকার করেন, তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ঠিক না থাকলে তার প্রতিফলন দেখা যায় তাদের স্বাস্থ্য এবং ওজনের ক্ষেত্রে৷ তাদের জীবনের মানুষটির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক খারাপ হলে তাদের স্বাস্থ্য ঠিক থাকে না৷ সম্পর্কের জটিলতার কারণে তাদের মানসিক দিকে চাপ সৃষ্টি হওয়ার ফলে তাদের শরীরও ক্রমশঃ ভেঙ্গে যায়৷
কারো কারো মতে তারা বেশী মোটা হলে তাদের পার্টনারের তাদের প্রতি আকর্ষণ ক্রমশঃ কমে যায়৷ ফলে সঙ্গীর কাছে নিজেকে আকর্ষণীয় করে রাখতে অনেকে দাম্পত্য সুখের প্রমাণ হিসাবে মোটা হয়ে ওঠাকে সমর্থন করেন না৷ তারা নিজেদের ওজনকে একটা নির্দিষ্ট মাত্রায় ধরে রাখতে আগ্রহী৷ আবার কারো কারো কাছে, তারা যে বিবাহিত জীবনে সুখে আছেন তা প্রমাণ করতেই তাদের বর্ধিত ওজনের সঙ্গে সঙ্গে বর্ধিত শরীর নিয়ে গর্বিত বোধ করেন৷ আবার অনেক মহিলারা এমনও আছেন যারা মানসিক কষ্টে থাকলে বেশী করে খেতে শুরু করেন৷ তাদের ক্ষেত্রে কিন্তু তাদের মোটা হয়ে ওঠার কারণ কোন মতেই তাদের সুখের জীবন নয়৷
কিন্তু সাধারণভাবে দেখতে গেলে আপনার মোটা হয়ে ওঠার নতুন এক কারণ হল আপনার মনের মানুষের থেকে পাওয়া অত্যধিক ভালোবাসা আর আপনাদের সুসম্পর্কের সঙ্গে সঙ্গে সুখী দাম্পত্য৷ তাই ভালোবাসা বেশী হলেও বিপদ, তাই না!
সূত্রঃ ওয়েবদুনিয়া.কম
বুধবার, 22 অক্টোবর 2008
Leave a Reply