বন্ধুত্ব অমলিন, এই বন্ধন হোক চিরদিন-এ কথা বলে বন্ধুর হাতে বন্ধুত্বের রাখিটা বেঁধে দেওয়ার অপেক্ষার আর মাত্র পাঁচ দিন। তাই মহাব্যস্ত রিমি। সারা দিন আর্চিস, হলমার্কস আর আড়ং-এ ঘুরে ঘুরে সে ক্লান্ত। নিটোল, লাকী, লিমা, সজল, রাফিন, পলাশ-সবার জন্য খুঁজে পাওয়া চাই সবচেয়ে সুন্দর রাখিটি।
‘বন্ধু দিবসে বন্ধুর জন্য রাখির চেয়ে ভালো উপহার আর কী হতে পারে! বন্ধুর হাতে রাখিটি শুধু বস্তুগত কিছু নয় বরং এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বন্ধুর জন্য ভালোবাসাটাও। রাখি বেঁধে দেওয়ার সময় বন্ধুর জন্য বুকের ভেতরটা কেমন যেন চিনচিনিয়ে ব্যথা করে ওঠে। বন্ধু তুই পাশে থাকবি তো চিরকাল? এমনি করে তোর হাতে ধরে থাকবি তো হাতটা আমার?’ বন্ধুর জন্য শাহেদের মনের এ শঙ্কা আমাদের সবার মনেই কমবেশি আছে। আসলে বন্ধু শব্দটা ছোট হলেও এর ব্যাপকতা এত বিশাল যে সেটা শুধু বন্ধুই অনুভব করতে পারে। বন্ধুর জন্য তো আর এক দিন নয়, সারা জীবনটাই। তবু বছরের একটা দিন একটু বিশেষভাবে বন্ধুকে নিয়ে আড্ডা, গান, হুল্লোড়। বন্ধু দিবসের শুরুটা করুন তাই আপনার প্রিয় বন্ধুটির হাতে রাখি পরিয়ে।
চাই মনের মতো···
বন্ধুর জন্য রাখি, সেটা তো আর যেমন-তেমন হলে হবে না, হতে হবে মনের মতো। বন্ধু দিবস উপলক্ষে নানা রঙে সেজেছে উপহার সামগ্রীর দোকানগুলো। বন্ধুর জন্য রাখির বিশাল সমাহার চোখে পড়বে সেখানেই। আজিজ সুপার মার্কেটে ‘ফেরিওয়ালা’র স্বত্বাধিকারী আবিদা সুলতানা কলি জানালেন, বাঁশ, কাঠ, পাথর, বেত আর পুঁতির রং-বেরঙের চমৎকার সব রাখি তৈরি করা হয়েছে বন্ধু দিবস সামনে রেখে।
আপনার প্রিয় বন্ধুর রুচি ও পছন্দের দিকে খেয়াল রেখে নির্বাচন করুন বন্ধুর রাখি।
বানাতে পারেন নিজেও···
আপনার বন্ধুকে নিজের হাতে বানিয়ে উপহার দিতে পারেন রাখি। সে ক্ষেত্রে রাখিটির আবেদন তার কাছে আরও বেশি হয়ে উঠবে। খুব সহজে বানিয়ে ফেলতে পারেন সুন্দর একটি রাখি। বাজারে বিভিন্ন রঙের সুতা পাওয়া যায়। তা থেকে আপনার বন্ধুর প্রিয় রংটি বেছে নিয়ে তিন ভাগ করে পেঁচিয়ে নিন। তারপর এর মাঝখানে ঢুকিয়ে দিন বড় একটা পুঁতি অথবা প্লাস্টিকের চাঁদ, তারা, মাছ, প্রজাপতি। অথবা জরির দোকান থেকে কিনে নিন সোনালি বা রুপালি লেইস। এর দুই পাশে বেঁধে দিন ছিদ্র করা পাথরের খণ্ড। এ ছাড়া বাহারি রঙের কিছু সুতা একসঙ্গে বেণি করে পরিয়ে দিতে পারেন বন্ধুর হাতে।
ব্যান্ডের দরদাম···
ইচ্ছে হয় বন্ধুর জন্য নিয়ে আসি পুরো পৃথিবী। কিন্তু তা কি আর হয়। তাতে কি, বন্ধুকে দেয়া বন্ধুর উপহার কেনা হলে যে তার মাধুর্য কম হবে, তা নয়। বন্ধুর জন্য রাখি পাওয়া যাচ্ছে ঢাকা শহরের বিভিন্ন উপহার বিপণিতে। হলমার্কস, আর্চিস গ্যালারি, আড়ং-এর সব শাখাসহ আরও পাবেন-মাদুলী, আনাম র্যাংগস প্লাজা ধানমন্ডি, ফেরিওয়ালা, ৩০ আজিজ সুপার মার্কেট, শাহবাগ; নন্দন কুটির, সড়ক-১০, বাসা-৫, ধানমন্ডি; শেপ অ্যান্ড ফর্ম ৬৬ আজিজ সুপার মার্কেট, শাহবাগে। এ ছাড়া নিউমার্কেট, চাঁদনী চক, ফার্মগেট, মৌচাক মার্কেটে ঘুরতে ঘুরতে পেয়ে যাবেন আপনার বন্ধুর জন্য পছন্দমতো রাখিটি।
দরদাম
বন্ধু দিবসের রাখিগুলোর দাম মোটামুটি সব জায়গায় প্রায় একই। তবে রাখির ধাঁচের ওপর এর দামটা কমবেশি হতে পারে। তুলনামূলক পাথরের পুঁতির রাখিগুলোর দাম একটু বেশি। এগুলো পাবেন ১২০-২৫০, কাঠের তৈরি ৫০-৭০, প্লাস্টিকের কারুকার্যময় রাখি ৮০-১২০, মেটালের ১১০-২০০, কাঁচের পুঁতির ৪০-৬০, মাটির তৈরি ৬০-৮৫, শুধু সুতার ২০-৫০, আকিক পাথরের তৈরি ১২০-২২০ টাকায়।
লক্ষ করুন
— সুতা থেকে তৈরি রাখিগুলোর রং উঠে যায় না যেন।
— পাথরের তৈরি রাখির ক্ষেত্রে পাথরগুলো যেন মসৃণ হয়।
— রাখিতে যেন বড়-ছোট করার সুবিধা থাকে।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ২৮, ২০০৯
Leave a Reply