বর্ষার এসময়ে এই রোদ এই বৃষ্টি। সঙ্গে রোদের তাপও থাকে গ্রীষ্মের মতোই। তাই এই গরমে মেকআপ করাটা বিরাট সমস্যা। বিশেষ করে কর্মজীবী নারীদের ক্ষেত্রে। কেননা ঘামের ফলে মেকআপ গলে ক্র্যাকস দেখা দেয়। তাই যতটা সম্ভব মেকআপ অবশ্য কম ব্যবহার করাই উচিত। আজকাল আমাদের দৈনন্দিন জীবনে একটা না একটা ফাংশন বা অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। তাই আপনার দিনের পোশাকসহ সাজটি কেমন হতে পারে এবার জেনে নিনঃ
পোশাক আশাক
আষাঢ়ে মেঘের ঘনঘটা আর হঠাৎ করেই ঝুম বৃষ্টি বর্ষণ খেলা চলছে প্রকৃতিতে। প্রকৃতির এই বদলে যাওয়া সময়ে মেয়েদের সাজ পোশাকেও এসেছে পরিবর্তন। নীল কিংবা কমলা, খয়েরী, সবুজ পোশাকে নিজেদের লুকে পরিবর্তন আনছে তারাও। এসময়ে সুতিতেই বেশি সাচ্ছন্দ্য পায় তরুণীরা। তবে ডিজাইনাররা অধিকাংশই এই সময়ে ব্লক ও স্ক্রিণ প্রিন্টেই বেশি কাজ করে থাকেন। হালকা এমব্রয়ডারি বা চুমকীর কাজও করেন কেউ কেউ। শাড়ির ক্ষেত্রে জর্জেটই বেশি সুবিধা জনক পোশাক। এমনিতে হাইনেক ব্লাউজের ট্রেন্ড চললেও বেশি ভালো হয় হাইনেক ব্লাউজ বর্ষার অনুসঙ্গ হিসেবে এড়িয়ে চলা। সকালের রোদ দেখে বাইরে বের হবার পরপরই এক পশলা বৃষ্টি নষ্ট করে দিতে পারে আপনার সাজগোজ। তাই পোশাকটাও ভেবে চিন্তে নির্বাচন করাটাই আরামদায়ক। বর্ষায় পাতলা কোটা শাড়ি এড়িয়ে চলা ভালো।
মেকাপ
সাজতে ও সাজাতে কমবেশি আমরা সবাই ভালোবাসি। কিন্তু ঋতুভেদে সাজগোজের পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তনটা নির্ভর করে নিজস্ব রুচির ওপর। সাজের সময় মাথায় রাখতে হবে তা কতোটুকু আপনাকে পরিবেশের সঙ্গে মানানসই করে তুলবে। গরমে সাজগোজের ব্যাপারে সচেতন হওয়া জরুরী। কারণ বাইরে কাঠফাটা গরমে আপনি কতো স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন তা অবশ্যই মনে রাখতে হবে। আপনার চোখে গাঢ় সাজ যেমন গরমে মানানসই নয়, তেমনি অন্যদের চোখেও তা দৃষ্টিকটু লাগে। এই সময়ে সাজে সব মিলিয়ে ্লিগ্ধভাব থাকা চাই। হালকা মেকাপই তাই ভালো। কপালে ছোট গোল টিপ পড়তে পারেন। মাসকারা এড়িয়ে হালকা আইস্যাডো দেয়া যেতে পারে বর্ষার মেকাপে। হালকা ফেইস পাউডার লাগাতে পারেন তবে লিপিস্টিক গ্লস হলেই ভালো হয়।
লক্ষ করুন
১. বর্ষার সময়ে সকালে সাজটাই সমস্যা। তাই আপনি প্রথমেই ব্যবহার করুন বেজ ওয়েট অ্যান্ড ড্রাই ফাউন্ডেশন। গরমের সকালের জন্য ওয়েট অ্যান্ড ড্রাই মেথড খুব ইফেক্টিভ। ব্যাপারটা অনেকটা কমপ্যাক্টের মতো। শুধু পাফটা ভিজিয়ে মিলিয়ে দিলেই হলো। শ্যাডো লাগাতে চাইলে বেছে নিন পিচ-ব্রাউন আইশ্যাডো। দিন-রাতের যা খাটুনি চোখের কালিটুকু না ঢাকলেই নয়। ভ্রুর কাছে লাগান সামান্য পেল হোয়াইট হাইলাইটার। না লাগালেও চলবে। খুব বেশি ফ্যাকাশে লাগলে চোখে লাগান ব্ল্যাক মাস্কারা। গালে দিন সামান্য বাদামি হালকা ব্ল্যাশ অন । গালটা তাহলে আর ভারি ভারি দেখাবে না। লিপ লাইনার না লাগিয়ে শুধু পেল ব্রাউন লিপস্টিক লাগাতে পারেন। চুলটা খোলা রাখতে পারেন। এই গরমে ঢাউস ব্যাগ না নিয়ে ছোট মানানসই ব্যাগে সানগ্লাস, পেন, পার্ম ইত্যাদি দরকারি জিনিস ভরে নিতে পারেন। পোশাকের রঙের ক্ষেত্রে হালকা শেডের পোশাক বাছাই করুন।
২. প্রচণ্ড গরমে খুবই হালকা মেকআপ নেবেন। তৈলাক্ত ত্বকে কিছু ব্যবহার না করাই ভালো। তবে বাইরে বের হওয়া আগে মুখে ফেস পাউডার ভালোভাবে লাগিয়ে নিন এবং ফিরে এসে ফেসওয়াস দিয়ে মুখটা ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
ঠোঁটে হালকা রঙের লিপস্টিক লাগানোই ভালো। চোখে আইলাইনারের পরিবর্তে কাজল লাগান।
৩. এছাড়া দিনের বেলায় আপনি ব্যবহার করতে পারেন হালকা বাদামি, হালকা মোভ, ব্রিক, অরেঞ্জ এবং অবশ্যই ব্রাউনের সব রং। দিনের বেলা এড়িয়ে চলুন কটকটে শ্যাডো আর গাঢ় ব্ল্যাশ অন। যত নিমন্ত্রণই থাকুক না কেন ভারি সোনার গহনা মোটেই নয় এবং অবশ্যই সুগন্ধি পারফিউম ব্যবহার করবেন।
তথ্য প্রদান : নুরাঙ্গীনী আক্তার, বিউটি ও হেয়ার থেরাপিস্ট, পারফেকশন
সূত্র: দৈনিক ভোরের কাগজ, জুলাই ০৭, ২০০৯
Leave a Reply