মুটিয়ে যাওয়ার দল কিংবা ব্যস্ত-সমস্ত ক্ষীণকায় তরুণ, সবার সব আক্রোশ যেন বরাদ্দ সকালের নাস্তার উপর। কেউ হয়তো দিনের পর দিন অকারণেই মুটিয়ে যাচ্ছেন। কাজেই তার প্রথম কাজ হিসেবে না জেনে-বুঝেই তিনি কাঁচি চালান সকালের নাস্তায়। কখনো না খেয়ে আবার কখনো যৎসামান্য সকালের নাস্তা করেই শুরু হয় সারাদিনের ডায়েট মিশন। অন্যদিকে যারা ওজন বাড়া নিয়ে সে অর্থে চিন্তিত নন তারাও যে সকালের নাস্তা নিয়ে খুব একটা ভাবেন তাও কিন্তু নয়। বরং দেরী করে ঘুম থেকে ওঠা কিংবা স্কুলে-অফিসে যাওয়ার দেরী হয়ে যাচ্ছে ভেবে প্রথম আক্রমণটা হয় সকালের নাস্তার প্রতিই। কোনোরকমে নাকে-মুখে যা একটা কিছু গুজেই এরা চটজলদি রওনা হন গন্তব্যে। এছাড়া দিনের পর দিন একই নাস্তা করে জীবন পার করে দেয়া লোকের সংখ্যাও কম নয়। অথচ সকালের নাস্তার প্রতি আমাদের এ জাতীয় প্রতিটি আচরণই কিন্তু মস্ত বড় ভুল। পুষ্টিবিদদের মতে, সারাদিনমান ঘরে আর বাইরে একজন কর্মক্ষম মানুষের কাজের যে জ্বালানী তার প্রায় অনেকটাই আসে সকালের নাস্তা থেকে। কাজেই নাস্তা পরিপূর্ণ না হওয়া মানে কিন্তু সারাদিনের কাজে প্রাণশক্তির ঘাটতি বয়ে বেড়ানো। খেয়াল রাখুন নিচের বিষয়গুলোতে-
০ সাধারণত সকালের নাস্তা গ্রহণের পর প্রায় সবাইকেই কোনো না কোনো কাজে যেতে হয়। আর সকালের নাস্তার অতিরিক্ত ক্যালরি সারাদিনের কাজের মাধ্যমে পুড়িয়ে ফেলাটাও সহজ হয়। কাজেই যারা মোটা থেকে চিকন হতে চান তারা সকালের নাস্তায় ক্যালরি আর ফ্যাটের কঠিন হিসেব নিয়ে খানিকটা হলেও কম মাথা ঘামান। অন্যদিকে যারা চিকন থেকে মোটা হতে চান তাদেরও প্রথমেই ভাবতে হবে এই হেলদি ব্রেকফাস্ট নিয়েই।
০ সকালের নাস্তা মানেই দিনের পর দিন দুধ-ডিম খাওয়া নয়। বরং আবহাওয়া আর শরীরের অবস্থা বুঝে এই দুধ-ডিমের বাইরেও স্বাস্থ্যকর নাস্তা করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ গরমের দিনে ডিম খাওয়া কিংবা পেটের বদহজম জনিত সমস্যা থাকলে দুধ খাওয়াটা অনেকের জন্যই সমস্যা ডেকে আনতে পারে। অতএব দুধ কিংবা ডিম যদি বাদ দিতে চান তাহলে ফলের রস বা সবজি হতে পারে আপনার জন্য স্বাস্থ্যকর এক নাশতা।
০ সকালের খাবারে আঁশ জাতীয় খাদ্য উপাদান কিছুটা বেশি থাকলেই ভাল
০ যাদের এসিডিটি’র সমস্যা আছে তারা নান রুটি, পাউরুটি প্রভৃতি উপাদান সকালের নাস্তায় কম রাখবেন।
০ সিদ্ধ আটার চাইতে কাঁচা আটা কিংবা লাল আটার রুটি শরীরের জন্য অধিক উপকারী।
০ প্রতিদিন একই সময়ে নাস্তা করা সু-স্বাস্থ্যের অন্যতম প্রধান শর্ত।
০ নাস্তার উপাদান বা উপকরণ যাই হোক না কেন নাস্তা শুরু করার আগে অবশ্যই এক গ্লাস বিশুদ্ধ পানি দিয়ে শুরু করবেন।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, জুন ৩০, ২০০৯
Leave a Reply